ছবি: এএফপি।
পরিযায়ী শ্রমিকদের সন্তানের পড়াশোনার কথা ভেবে নির্দেশিকা জারি করল কেন্দ্রীয় মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রক। সব রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিকে দেওয়া এই নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, অতিমারির সময়ে এলাকা ছাড়তে বাধ্য হয়েছে যে পড়ুয়ারা, তাদের নাম যেন স্কুল থেকে কোনও ভাবেই বাদ না পড়ে।
করোনা পরিস্থিতিতে পরিযায়ী শ্রমিক পরিবারে থাকা যে পড়ুয়ারা অন্য রাজ্যে চলে গিয়েছে কিংবা সংশ্লিষ্ট রাজ্যেরই অন্য কোথাও রয়েছে, তাদের একটি তথ্যপঞ্জি প্রস্তুত করতে বলা হয়েছে রাজ্যগুলিকে। সে ক্ষেত্রে ওই পড়ুয়াদের নামের পাশে ‘পরিযায়ী’ কিংবা ‘সাময়িক ভাবে অনুপস্থিত’ লিখতে হবে। প্রতিটি স্কুলকে ওই ধরনের পড়ুয়ার বাবা-মা কিংবা অভিভাবকদের সঙ্গে যোগাযোগ করে তথ্যপঞ্জি প্রস্তুত করতে হবে। এই কাজে টেলিফোন, সামাজিক মাধ্যম ও ব্যক্তিগত যোগাযোগকে ব্যবহার করা যাবে। ওই পড়ুয়ারা বর্তমানে কোথায় রয়েছে, তার উল্লেখ রাখতে হবে স্কুলের তথ্যপঞ্জিতে। ডাইরেক্টরেট অব এডুকেশন-এ শ্রেণিভিত্তিক এই ধরনের তালিকা পাঠাতে হবে স্কুলগুলিকে। জানাতে হবে মিড ডে মিল, বইপত্র কিংবা ইউনিফর্ম বিলি সংক্রান্ত বিষয়টিও।
কেন্দ্রীয় মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের তরফে রাজ্যগুলি ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের প্রশাসনকে বলা হয়েছে, তাদের এলাকায় ফেরা পরিযায়ী শ্রমিকদের সন্তান যাতে সেখানেই ভর্তি হতে পারে, তা নিশ্চিত করতে স্কুলগুলিকে নির্দেশ দেওয়া হোক। সে ক্ষেত্রে স্কুলগুলি ওই পড়ুয়াদের পরিচয়পত্র দেখতে পারে তবে ট্রান্সফার সার্টিফিকেট কিংবা আগের ক্লাসে পড়ার প্রমাণপত্র চাইতে পারবে না। ওই পড়ুয়া সম্পর্কে বাবা-মায়েরা যে তথ্য দেবেন, তাকেই সত্যি মনে করে পড়ুয়াকে ভর্তি করাতে হবে। সরকারি এবং সরকার পোষিত স্কুলগুলিতে এই বিষয়টি কার্যকর করতে হবে।
নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, নতুন স্কুলে পড়ুয়াকে মানিয়ে চলার মতো পরিবেশ দিতে হবে। স্কুলের লাইব্রেরি কিংবা বইয়ের ব্যাঙ্ক থেকে তাদের জন্য বইয়ের ব্যবস্থা করতে হবে। অন্যান্য পড়ুয়াদের সঙ্গে এই ছাত্র-ছাত্রীদেরও দিতে হবে মিড-ডে মিল। কোনও পড়ুয়া তার স্কুল ছেড়ে নতুন স্কুলে ভর্তি হলে সংশ্লিষ্ট রাজ্যগুলিকে সেই তথ্য রাখতে হবে ডিজিটাল মাধ্যমে। রাজ্যগুলিকে সেই তথ্য নিজেদের ভিতরে আদানপ্রদান করতেও বলা হয়েছে। মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের এক কর্তার মতে, করোনাভাইরাসের কারণে গত ২৪ মার্চ থেকে দেশে লকডাউন জারি হওয়ার পরে বহু পরিযায়ী শ্রমিককে বাড়ি ফিরে আসতে হয়েছে। সঙ্গে ফিরেছে তাঁদের পরিবারও। পরিযায়ী শ্রমিকদের সন্তানের পড়াশোনা নিয়ে অনেক জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে। কোনও রাজ্যে পড়ুয়ার সংখ্যা কমে গিয়েছে। অনুপস্থিত হিসেবে দেখানো হচ্ছে এদের। আবার কোনও রাজ্যে সেই পড়ুয়াদেরই দৌড়তে হচ্ছে স্কুলে ভর্তির জন্য। পরিযায়ী শ্রমিকদের সন্তানদের পড়াশোনার ক্ষেত্রে যাতে বছর নষ্ট না হয়, সে জন্যই এই নির্দেশিকা।