Migrant Workers

দিল্লি থেকে রাজ্যে ফিরতে মরিয়া তৈমুরেরা

এখন চাকা বন্ধ। কিস্তিতে শোধ দেওয়ার শর্তে ধার নিয়ে বছরখানেক আগে একটা রিকশা কিনেও নিয়েছিলেন তৈমুর।

Advertisement

অগ্নি রায়

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৪ মে ২০২০ ০৪:৪২
Share:

—ফাইল চিত্র।

গাঁয়ের জমি অন্নপূর্ণা। এ ভাবে ভয়ে ভয়ে বাঁচতে হবে না এক বার সেখানে পৌঁছলে। তার পরে ভাইরাসের সঙ্গে ঠিক যুঝে নেওয়া যাবে। আপাতত এই আশায় বুক বেঁধে ওখলার প্রায়ান্ধকার ঘরে ঝুম হয়ে বসে আছেন তৈমুর শেখ, কবির হুসেন, মইনুদ্দিন শেখরা। এক কোণে ডাঁই করে রাখা আছে বহু কাঠখড় পুড়িয়ে জোগাড় করা দিন দশেকের আটা, ডাল, তেল, পেঁয়াজ।

Advertisement

ওখলা, শাহিন বাগ, জামিয়া, কালিন্দীকুঞ্জ এলাকায় ই-রিকশা চালাতেন মালদহের কালিয়াচক থানার মজমপুর গ্রাম থেকে আসা এই ছোট্ট দলটা। আশপাশের গ্রাম থেকে এসেছিলেন শ’খানেক মানুষ, যাঁরা ছড়িয়েছিটিয়ে রয়েছেন এই মহল্লাতেই। মজদুরি করেও অনেকে দিন গুজরান করেন।

এখন চাকা বন্ধ। কিস্তিতে শোধ দেওয়ার শর্তে ধার নিয়ে বছরখানেক আগে একটা রিকশা কিনেও নিয়েছিলেন তৈমুর। আট কিস্তি শোধ হয়ে গিয়েছিল, বাকি ছিল আর চার। “এ বার সব ছেড়ে পালাতেই হবে এখান থেকে। আর কখনও আসব বলেও মনে হয় না,” এক নিঃশ্বাসে বলেন তৈমুর। এক ঘরে গত এক বছর বসত করা আরও ছ’জনও একমত।

Advertisement

আরও পড়ুন: মুসলিম ব্যবসায়ীদের প্রবেশ নিষেধ, পোস্টার পড়ল ইনদওরের গ্রামে

কেন আর আসতে চান না দিল্লিতে? কবির বলছেন, “শাহিন বাগেও গাড়ি চালাতে সমস্যা হয়নি। বরং পসার বেড়ে গিয়েছিল ধর্নার সময়। দিল্লির সাম্প্রতিক অশান্তির সময়েও যেটা হয়নি, এই এলাকায় সেই ত্রাস তৈরি হয়েছে তবিলিগ জামাতের ঘটনার পরে।” সংক্রমণের পাশাপাশি ছড়িয়েছে সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ।

কবির বলেন, “কোনও প্রয়োজনে মহল্লা থেকে বাইরে যেতে গেলেই জুটছে পুলিশের ধাতানি। রাস্তায় হাজার কৈফিয়ত, ভয় দেখানো। হাতে যত দিন টাকা ছিল, কোনও এক জন বেরিয়ে নিঃশব্দে আনাজপাতি কিনে চলে আসতাম। কিন্তু এ ভাবে আর থাকতে সাহস পাচ্ছি না।” এর বেশি কিছু ভেঙে বলতে চাইছেন না ওঁরা।

আরও পড়ুন: করোনায় প্রাণহানি পঞ্চাশ ছুঁল রাজ্যে

করোনা তো পশ্চিমবঙ্গেও। তা হলে ফিরে যেতে চাইছেন কি শুধু এই ভয়েই? তৈমুর জানাচ্ছেন, “শুধু সেটাই নয়। আমাদের অনেক হিন্দুভাইও এসে আটকে রয়েছে, তারাও ফিরে যেতে চায় গাঁয়ে। অনেকেরই অল্পস্বল্প জমি রয়েছে গ্রামে। আবাদি করে চালাব। মরি বাঁচি, যা-ই হোক নিজেদের পরিবারের সঙ্গে তো থাকা যাবে।” স্থানীয় থানায় ভিন্ রাজ্যের লোক হিসেবে নাম লিখিয়েছেন এঁরা। দিল্লি সরকার দিন দশেকের রেশন দিয়েছে। কিন্তু এ ভাবে যে লম্বা সময় থাকা চলে না, বুঝে গিয়েছেন তৈমুরেরা।


(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement