Coronavirus Lockdown

১৪ নয়, ২৮ দিন কোয়রান্টিনে পাঠিয়ে করোনা-যুদ্ধে সাফল্য পেয়েছে কেরল

আরও বিপজ্জনক হচ্ছে, ১৪ দিন কোয়রান্টিনে থাকার পর এবং কোনও উপসর্গ না থাকলেও কোনও ব্যক্তি করোনার জীবাণু ছড়াতে পারেন।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

তিরুঅনন্তপুরম শেষ আপডেট: ১৭ এপ্রিল ২০২০ ১৭:১৩
Share:

এর্নাকুলামে ওয়াক-ইন স্যাম্পল কিয়স্কে নমুনা সংগ্রহ করছেন এক স্বাস্থ্যকর্মী। ছবি: এএফপি

দেশের মধ্যে কেরলেই প্রথম করোনাভাইরাস সংক্রমণ ধরা পড়ে তিন জনের। আবার কোভিড-১৯ নিয়ন্ত্রণেও সাফল্যের শীর্ষে দক্ষিণের এই রাজ্য। দ্রুত নিয়ন্ত্রণের চাবিকাঠি হিসেবে চিকিৎসকরা প্রায় গণহারে করোনার পরীক্ষার ব্যবস্থা করাকে নির্দেশ করেছেন। কিন্তু সেখানেই থেমে না থেকে আরও কঠোর নিয়ম কার্যকর করা হয়েছে রাজ্যে। ১৪ দিন নয়। করোনাভাইরাসে সংক্রমণের সম্ভাবনা থাকলেই ২৮ দিনের জন্য কোয়রান্টিনে পাঠানো হয়েছিল। করোনা-যুদ্ধে কেরলের সাফল্যের অন্যতম কারণ সেটাও, মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

Advertisement

গত ১৯ মার্চ দুবাই থেকে কেরলের কুন্নুরে ফিরেছিলেন এক ব্যক্তি। জ্বর, সর্দি-কাশি বা শ্বাসকষ্টের মতো করোনার কোনও রকম উপসর্গ ছিল না তাঁর। তাঁকে ২৮ দিনের জন্য হোম আইসোলেশন থাকার নির্দেশ দেয় প্রশাসন। এর পর গত ১৪ এপ্রিল ২৭ দিন পর তাঁর নমুনা সংগ্রহ করা হয়।দু’দিন পরে রিপোর্ট আসে কোভিড-১৯ পজিটিভ। অথচ প্রায় এক মাসের মধ্যে কোনও উপসর্গই তাঁর ছিল না। প্রায় একই রকম ঘটনা ঘটেছিল ২০ মার্চ দুবাই থেকে কুন্নুরে ফেরা আরও দুই ব্যক্তির ক্ষেত্রেও। তাঁদেরও ২৬ দিন পর টেস্টে করোনা সংক্রমণ ধরা পড়ে। তাঁদেরও কোনও উপসর্গ ছিল না।

উপসর্গ না থাকা এবং ২৬-২৭ দিন পরে পরীক্ষায় করোনার জীবাণু মেলায় উদ্বেগ বেড়েছে কেরল প্রশাসনের। কুন্নুর জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক কে নারায়ণ নায়েক বলেন, আমরা ২৮ দিনের আইসোলেশনের নিয়ম চালু করেছি। সংক্রমণের ঝুঁকি যাঁদের রয়েছে, কোনও উপসর্গ না থাকলেও তাঁদের করোনার পরীক্ষা করাচ্ছি।’’

Advertisement

আরও পড়ুন: মে মাসের প্রথম সপ্তাহে সংক্রমণের শিখরে পৌঁছতে পারে দেশ, ইঙ্গিত কেন্দ্রের মূল্যায়নে

নারায়ণ নায়েক জানান, জেলায় মোট ২৪৮ জন বিদেশ থেকে ফিরেছিলেন। তাঁদের মধ্যে ১৭ জনের সংক্রমণ নিশ্চিত হয়েছে। কিন্তু এই ১৭ জনের মধ্যে দু’-এক জন ছাড়া কারও কোনও উপসর্গ ছিল না। অর্থাৎ ৯৫ শতাংশই উপসর্গবিহীন। তিনি আরও বলেন, ‘‘তবে আতঙ্কিত হওয়ার কোনও কারণ নেই। বিদেশফেরত সকলেই কঠোর আইসোলেশনে ছিলেন এবং তাঁদের নিয়মিত পর্যবেক্ষণের মধ্যে রাখা হয়েছিল।’’

কেরল সরকারের করোনা নিয়ন্ত্রণ কমিটিতে নিযুক্ত হয়েছেন চিকিৎক ও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ মহম্মদ আশিল। তিনি বলেন, ‘‘উহানে ২৭ দিন আইসোলেশনে থাকার পরেও এক জনের করোনার সংক্রমণ ধরা পড়েছে। অন্তত পাঁচ শতাংশ ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, কোয়রান্টিনে ১৪ দিন থাকার পরেও করোনার সংক্রমণ পাওয়া গিয়েছে। সেই কারণেই ২৮ দিনের আইসোলেশনের নিয়ম কার্যকর করা হয়েছে।’’

আরও পড়ুন: ট্রাম্পের লকডাউন তোলার ঘোষণার পরেই রেকর্ড মৃত্যু আমেরিকায়, ২৪ ঘণ্টায় মৃত ৪৪৯১

কিন্তু আরও বিপজ্জনক হচ্ছে, ১৪ দিন কোয়রান্টিনে থাকার পর এবং কোনও উপসর্গ না থাকলেও কোনও ব্যক্তি করোনার জীবাণু ছড়াতে পারেন। মহম্মদ আশিল বলেন, ‘‘সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে শিক্ষাটা পেলাম, সেটা হল, উপসর্গবিহীন ব্যক্তিও করোনার জীবাণুর বাহক এবং ছড়াতে সক্ষম। আর এই সংখ্যাটা ৫ শতাংশেরও বেশি।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement