ছবি: পিটিআই।
পরিযায়ী শ্রমিকেরা যদি আশ্রয় শিবিরে খাবার পান, তা হলে তাঁদের খাবার কেনার জন্য টাকার কী প্রয়োজন— আজ এক জনস্বার্থ মামলার শুনানিতে এই প্রশ্ন তুললেন ভারতের প্রধান বিচারপতি এস এ বোবডে।
লকডাউনের জেরে কাজ-হারানো পরিযায়ী শ্রমিকদের অবিলম্বে মজুরি দেওয়ার পাশাপাশি সংবিধানের ২১ নম্বর ধারা প্রয়োগ করে তাঁদের বেঁচে থাকার অধিকার সুরক্ষিত করার আর্জি জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেছেন মানবাধিকার কর্মী হর্ষ মন্দার এবং অঞ্জলি ভরদ্বাজ। আজ ভিডিয়ো কনফারেন্সে সেই মামলা শোনে প্রধান বিচারপতি, বিচারপতি এস কে কউল এবং বিচারপতি দীপক গুপ্তের বেঞ্চ।
প্রধান বিচারপতির প্রশ্নের উত্তরে আবেদনকারীদের আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণ বলেন, “শ্রমিকেরা সবাই আশ্রয় শিবিরে নেই। আশ্রয় শিবিরে শুধু খাবার হলেই তাঁদের চলবে না, বাড়িতে পাঠানোর জন্যও টাকা দরকার।” একটি সমীক্ষার কথা উল্লেখ করে ভূষণ জানান, ৪০ শতাংশেরও বেশি পরিযায়ী শ্রমিক অন্য কোথাও যাওয়ার চেষ্টা করেননি। তাঁরা শহরে নিজেদের বাড়িতেই রয়ে গিয়েছেন। তাঁদের কাছে খাবার কেনার টাকা নেই।
আরও পড়ুন: তিন জ়োনে ভেঙেই কি নতুন নীতিতে হবে লকডাউন?
কিন্তু প্রধান বিচারপতি বলেন, “এই পরিস্থিতিতে আমরা বলতে পারি না যে, ওঁরা খাবার পাচ্ছেন না।” বিচারপতিরা জানিয়ে দেন, সরকার যা সিদ্ধান্ত নিয়েছে, আগামী ১০-১৫ দিনের মধ্যে কোর্ট তাতে নাক গলাতে চায় না। বর্তমান পরিস্থিতিতে সরকারের থেকে ভাল কোনও নীতিগত সিদ্ধান্ত আদালত নিতে পারবে না বলেও জানান তাঁরা। বেঞ্চ বলেছে, “আমরা সরকারের জ্ঞানের উপরে নিজেদের জ্ঞান চাপিয়ে দিতে চাই না। স্বাস্থ্য বা ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞও আমরা নই।”
সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা বেঞ্চকে জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। শ্রমিকদের জন্য কল সেন্টার চালু হয়েছে। মেহতা যোগ করেন, “অস্পষ্ট কিছু দাবি ছাড়া এই মামলার কোনও সারবত্তা নেই।”
প্রশান্ত ভূষণ জানান, আশ্রয় শিবিরগুলিতে অন্তত ৪ লক্ষ পরিযায়ী শ্রমিক রয়েছেন। যে ভাবে তাঁদের থাকতে হচ্ছে, তাতে পারস্পরিক দূরত্বের বিষয়টিই হাস্যকর হয়ে গিয়েছে। তাই তাঁদের বাড়ি ফিরে যেতে দেওয়া হোক। তাঁর অভিযোগ, আশ্রয় শিবিরের খাবার মুখে তোলার উপযুক্ত নয়। কিন্তু বেঞ্চ বলে, খাবারের মান নিয়ে অভিযোগে নজরদারি করা কোর্টের পক্ষে সম্ভব নয়।
এ দিনই সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি মদন বি লোকুর বলেছেন, করোনা-পরিস্থিতিতে যথেষ্ট সক্রিয় ভূমিকা নিচ্ছে না আদালত।
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)