লকডাউনের মধ্যেই দিল্লির একটি স্কুলে চলছে জীবাণুনাশক ছড়ানোর কাজ। ছবি: পিটিআই
১৪ এপ্রিলের পর লকডাউন কি উঠবে, নাকি সময়সীমা আরও বাড়ানো হবে? আপাতত দেশের সর্বত্র এই প্রশ্ন। বেশ কয়েকটি রাজ্য লকডাউন বাড়ানোর জন্য কেন্দ্রকে আর্জি জানিয়েছে। কেন্দ্র সেই প্রস্তাব বিবেচনা করে দেখার কথা জানালেও এখনও স্পষ্ট করে লকডাউনের বিষয়ে কিছু জানায়নি। তবে এমন ইঙ্গিত মিলেছে, তাতে বলাই যায় যে, এখনই পরিস্থিতি পুরোপুরি স্বাভাবিক হচ্ছে না।
১৪ এপ্রিল লকডাউন উঠুক বা না উঠুক, তার পরে আরও অন্তত এক মাস স্কুল, কলেজ, শপিং মল, সিনেমা হল, ধর্মীয় অনুষ্ঠানের মতো জমায়েতের উপর নিষেধাজ্ঞা থাকতে পারে। মঙ্গলবার নিজেদের মধ্যে বৈঠকের পর তেমনই সুপারিশ করেছে করোনাভাইরাস নিয়ে গঠিত বিশেষ মন্ত্রিগোষ্ঠী। মন্ত্রিগোষ্ঠীর প্রস্তাব কেন্দ্রও মেনে নিতে পারে বলেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক সূত্রের খবর।
অর্থাৎ সারা দেশে লকডাউন তুলে নেওয়া হলেও বড় জমায়েত যাতে না হয়, সেই রাশ এখনই তুলে নেওয়া যে ঠিক হবে না, তেমনই মত দিয়েছেন মন্ত্রীরা। মঙ্গলবার এই নিয়েই বৈঠক করে বিশেষ মন্ত্রিগোষ্ঠী। প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহের নেতৃত্বে ওই বৈঠকে ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের মতো হেভিওয়েট মন্ত্রীরা। ওই বৈঠকের সূত্রেই খবর, আরও এক মাস স্কুল-কলেজ সহ সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, শপিং মল, সিনেমা হল, ধর্মীয় জমায়েতের উপর নিয়ন্ত্রণ জারি রাখার প্রস্তাব দিয়েছেন মন্ত্রীরা। স্কুল কলেজে এমনিতেই গরমের ছুটি প্রায় শুরু হয়ে যাবে। পাশাপাশি করোনার হটস্পটগুলিতেও কড়া নজরদারি প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: ২৪ ঘণ্টায় দেশে আক্রান্ত বাড়ল প্রায় ৮০০, মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১৪৯
গত ২৪ মার্চ ৩ সপ্তাহের জন্য সারা দেশে লকডাউনের ঘোষণা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আর ৬ দিন পর আগামী ১৪ এপ্রিল সেই লকডাউনের মেয়াদ শেষ হচ্ছে। কিন্তু দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বেড়েই চলেছে। এখনও পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণে আসার কোনও ইঙ্গিত নেই। ১৪ এপ্রিলের মধ্যে সংক্রমণ পুরোপুরি কমে যাবে, তেমন নিশ্চয়তাও দিতে পারছেন না চিকিৎসক-বিশেষজ্ঞরা। এই পরিস্থিতি লকডাউন পুরোপুরি তুলে নিয়ে সব কিছু স্বাভাবিক করে দিলে, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ফের ভয়াবহ আকার নিতে পারে বলেই মত তাঁদের। এই সব বিষয় মাথায় রেখেই এই প্রস্তাব দিয়েছে মন্ত্রিগোষ্ঠী।
আরও পড়ুন: এনআরএস-এর আরও ৪৩ জন স্বাস্থ্য কর্মীর রিপোর্ট নেগেটিভ
ফলে ১৪ এপ্রিলের পরেও যে নিয়ন্ত্রণ পুরোপুরি তুলে নেওয়া হবে, এমন সম্ভাবনা আপাতত নেই বলেই মনে করা হচ্ছে। আবার লকডাউনও এক লপ্তে পুরোপুরি তুলে নেওয়া হবে, এমন সম্ভাবনাও কম। অন্তত হটস্পটগুলিতে ওঠার সম্ভাবনা কম। বরং নজরদারি আরও বাড়ানো হতে পারে। আবার স্কুল-কলেজগুলিতে এমনিতেই কিছু দিনের মধ্যে গরমের ছুটি পড়বে। সেই কারণেই আরও এক মাস সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধের পক্ষে সুপারিশ করেছেন মন্ত্রীরা।
ইতিমধ্যেই উত্তরপ্রদেশ, তেলঙ্গানার মতো রাজ্য আবার নিজেদের রাজ্যে লকডাউন বাড়ানোর জন্য কেন্দ্রকে প্রস্তাব দিয়েছে। সেই প্রস্তাব খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে মঙ্গলবারই জানিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকর। তিনি বলেছেন, দেশের স্বার্থের কথা মাথায় রেখেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।