ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের পুনরুজ্জীবন প্যাকেজ ঘোষণা নির্মলা সীতারামনের। প্রতীকী ছবি
‘আত্মনির্ভর ভারত’ প্রকল্পে ২০ লক্ষ কোটির প্যাকেজের প্রথম ধাপ স্পষ্ট করলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। মোট ১৫টি পদক্ষেপের ঘোষণা হয়েছে। তার মধ্যে ছ’টিই ক্ষুদ্র, মাঝারি ও অতি ক্ষুদ্র (এমএসএমই) শিল্পক্ষেত্রের জন্য। এই ক্ষেত্রে মোট ৩ লক্ষ কোটি টাকার পুনরুজ্জীবন প্যাকেজের ঘোষণা করেছেন নির্মলা সীতারামন। এর মধ্যে এক দিকে যেমন ছোট ছোট সংস্থাগুলিকে সুরাহার বন্দোবস্ত রয়েছে, তেমনই এই সব সংস্থার কর্মীদের জন্যও কিছুটা স্বস্তির খবর রয়েছে। এ ছাড়া ঠিকাদার, নির্মাণ শিল্পের ক্ষেত্রেও রয়েছে সুরাহার বন্দোবস্ত।
মঙ্গলবার ২০ লক্ষ কোটির প্যাকেজ ঘোষণার সময়ই প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যেই এমএসএমই ক্ষেত্রে বড়সড় পুনরুজ্জীবন প্যাকেজের ইঙ্গিত ছিল। বুধবার নির্মলা সীতারামন প্রথম ধাপেই এই ক্ষেত্রে ৩ লক্ষ কোটি টাকা ঋণ বাবদ দেওয়ার ঘোষণা করলেন। অর্থমন্ত্রী জানান, এই টাকা ঋণ দেওয়ার জন্য বরাদ্দ করা হবে। ছোট সংস্থাগুলি গ্যারান্টি ছাড়াই স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে ঋণ নিতে পারবেন। তাতে এই সব সংস্থার আর্থিক ক্ষমতা বাড়বে এবং নগদের জোগানও বাড়বে। তাতে করোনাভাইরাস ও লকডাউনের জেরে যে সঙ্কট তৈরি হয়েছে, তা মোকাবিলা করতে পারবে সংস্থাগুলি। এই ঋণের জন্য কোনও গ্যারান্টি ফি লাগবে না। চার বছরের জন্য এই ঋণ দেওয়া হবে। তবে প্রথম এক বছর সেই ঋণের টাকা শোধ করতে হবে না। আর্থিক ভাবে দুর্বল অবস্থায় রয়েছে এমন দুই লক্ষাধিক ছোট সংস্থার জন্য ২০ হাজার কোটি টাকা দেওয়া হবে।
কিন্তু ক্ষুদ্র, মাঝারি বা অতি ক্ষুদ্র— এর মধ্যে কোন সংস্থা কোন স্তরে পড়বে, তার পরিধিও বাড়ানো হয়েছে। অর্থাৎ মূলধন অনুযায়ী সংজ্ঞা বদল করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন নির্মলা। তিনি জানান, আগে ২৫ লক্ষ পর্যন্ত বিনিয়োগ করলে সেই সংস্থা ছিল অতি ক্ষুদ্র তালিকায়। এখন থেকে বিনিয়োগের পরিমাণ ১ কোটি টাকা এবং বাৎসরিক লেনদেন পাঁচ কোটি টাকা হলে সেই সংস্থাও এই তালিকায় চলে আসবে। মাঝারির তালিকায় আগে ছিল বিনিয়োগের পরিমাণ ছিল ৫ কোটি। এখন বেড়ে হয়েছে ১০ কোটি এবং বাৎসরিক লেনদেন ৫০ কোটি টাকা। মাঝারি শিল্পের ক্ষেত্রে ১০ কোটি টাকা থেকে বেড়ে হেয়েছে ২০ কোটি এবং লেনদেন ১০০ কোটি টাকা। এর ফলে আরও অনেক বেশি সংস্থা এই ৩ লক্ষ কোটির প্যাকেজের আওতায় চলে আসবে।
আরও পড়ুন: কেন্দ্রের প্যাকেজ বিভ্রান্তিকর, মানুষকে স্বস্তি দিতে কিছুই নেই, তোপ মমতার
আরও পড়ুন: কমবে পিএফ, হাতে বেশি বেতন পাবেন কর্মীরা, তিন মাসের বন্দোবস্ত নির্মলার
আরও একটি বড় পদক্ষেপ করা হয়েছে সরকারি টেন্ডারের ক্ষেত্রে। অর্থমন্ত্রী জানিয়েছেন, ২০০ কোটি টাকার কম টেন্ডার হলে এখন আর গ্লোবাল টেন্ডার ডাকা হবে না। ফলে দেশীয় ক্ষুদ্র, মাঝারি ও অতি ক্ষুদ্র সংস্থাগুলিও টেন্ডারে অংশ নিতে পারবে এবং বেশি কাজ হবে। এ ছাড়া সরকারি প্রকল্পে যাঁরা কাজ করছেন, সেই সব ঠিকাদারদের চাপ কমাতে কাজ শেষ করার সময় আরও ছ’মাস বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। নির্মাণ শিল্পের ক্ষেত্রে কোনও আবেদন ছাড়াই প্রকল্পের মেয়াদ ছ’মাস বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।