—ফাইল চিত্র।
করোনাভাইরাসের মতো অতিমারির মোকাবিলা করতে নরেন্দ্র মোদীর মতো ‘শক্তিশালী’ নেতাকেই দরকার— বিজেপির নেতা-মন্ত্রীরা এ কথাই বোঝাতে চাইছেন। আমেরিকায় ডোনাল্ড ট্রাম্প, ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট জেয়ার বোলসোনারোকে নিয়েও একই প্রচার।
রাহুল গাঁধী আজ প্রসঙ্গটা তুললেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে। শুনেই একে ‘সর্বনাশা’ বলে আখ্যা দিলেন অভিজিৎ। অভিজিতের সঙ্গে ভিডিয়ো কনফারেন্সের মাধ্যমে আলাপচারিতায় আজ রাহুল বলেন, “শক্তিশালী নেতারাই করোনার সঙ্গে যুঝতে পারবেন, এক জন ব্যক্তি দরকার যিনি এই ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়বেন— এই ভাবনাটা বেচা হচ্ছে।” অভিজিৎ বলেন, “আমেরিকা, ব্রাজিল দুই দেশ সব দিকে ডোবাচ্ছে। দুই ‘স্ট্রংম্যান’ এমন ভাব করছেন, তাঁরা সব বোঝেন। কিন্তু প্রতিদিন হাস্যকর কথা বলছেন। কেউ যদি স্ট্রংম্যান তত্ত্বে বিশ্বাস রাখেন, তাঁর এখনই মোহমুক্ত হওয়া দরকার।”
ট্রাম্পের সমালোচনা করলেও তাঁর নেতৃত্বে মার্কিন প্রশাসন যে ভাবে অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার দাওয়াই হিসেবে জিডিপি-র ১০ শতাংশের সমান আর্থিক প্যাকেজ ঘোষণা করেছে, তা থেকে ভারতকে শিক্ষা নিতে হবে বলেই মত অভিজিতের। তিনি বলেন, “আমরা এখনও যথেষ্ট বড় স্টিমুলাস প্যাকেজের সিদ্ধান্ত নিইনি। জিডিপি-র ১ শতাংশ খরচের কথা বলছি। আমেরিকা জিডিপি-র ১০ শতাংশ ঢালছে। আর্থিক ক্ষেত্রে কাজ করে আসা রিপাবলিকানরা অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার জন্য লোকের হাতে টাকা তুলে দিতে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তা থেকে আমাদের শিক্ষা নিতে হবে।”
আরও পড়ুন: পরীক্ষায় কুষ্ঠের ওষুধ, মোদী চান ‘হ্যাকাথন’
আরও পড়ুন: অনলাইনে অসাম্য, শুনতে হল মন্ত্রীকেও
এ ক্ষেত্রে শুধু হতদরিদ্র নয়। অভিজিতের মতে, আয়ের দিক থেকে পিছিয়ে থাকা ৬০ শতাংশ মানুষের হাতে কিছু পরিমাণ নগদ তুলে দেওয়া হোক। এঁদের সবাই খুব গরিব নন। হয়তো সকলের দরকার নেই। কিন্তু এই টাকাটা খরচ হলে অর্থনীতি চাঙ্গা হবে। বাজারে কম চাহিদার সমস্যার সমাধান হবে। গরিব মানুষকে সুরাহা দিতে সকলের জন্য আধার কার্ডের ভিত্তিতে রেশন বা অস্থায়ী রেশন কার্ড, ইএমআই তিন মাস স্থগিত করার পরের ধাপে তিন মাসের জন্য সরকারের তরফে ইএমআই-এর বোঝা নেওয়া, করোনা পর্বের পরে অনেক সংস্থা ব্যাঙ্কের ঋণ শোধ করতে না পারলে তা মকুব করার পরামর্শও দিচ্ছেন অভিজিৎ।
এর আগে অর্থনীতিবিদ রঘুরাম রাজনের সঙ্গেও করোনা-সঙ্কট ও আর্থিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেছিলেন রাহুল। আজ রাহুলের প্রশ্ন ছিল, মানুষের হাতে দ্রুত নগদ টাকা তুলে দেওয়া দরকার কি না? অভিজিৎ বলেন, লকডাউনের পরে লোকে যখন বাইরে বের হবে, তখন হাতে টাকা থাকবে, এই প্রতিশ্রুতি দেওয়া দরকার। তা হলে লোকে ভয় পাবে না, না খেয়ে থাকবে না। হাতে টাকা এলে খরচ করবে। এখন যেখানে কোনও উৎপাদনই হচ্ছে না, সেখানে লোকের হাতে টাকা দিলে মূল্যবৃদ্ধি বেড়ে যেতে পারে।
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)