পরিযায়ী শ্রমিকের দু্র্দশা। ছবি টুইটার থেকে নেওয়া।
হাইওয়েতে দাঁড়িয়ে আছে লরি। সেই লরির উপরে ঠাসাঠাসি করে দাঁড়িয়ে নারী, পুরুষ ও শিশুরা। যাঁরা নীচে আছেন তাঁরাও চেষ্টা করছেন উপরে ওঠার। এক ব্যক্তি এক হাতে করে একটি বাচ্চাকে ধরে তুলে দিলেন লরিতে থাকা মায়ের হাতে। শাড়ি পরে লরিতে উঠতে গিয়ে নাজেহাল অবস্থা এক মহিলার। এরা সকলেই পরিযায়ী শ্রমিক। বাড়ি ফেরার আশায় তাঁরা উঠছেন লরিতে। লকডাউনে পরিযায়ীদের দুর্দশার চিত্র ফের দেখাল সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া এই ভিডিয়ো।
এই ঘটনাটি ছত্তীসগঢ়ের রায়পুরের। তেলঙ্গানা থেকে এই শ্রমিকদল হেঁটে যাচ্ছিলেন ঝাড়খণ্ডে নিজেদের গ্রামে ফেরার আশায়। অবশেষে রায়পুরে পৌঁছে হয়েছে লরির ব্যবস্থা। সেই শ্রমিকদলের এক সদস্য এক সংবাদমাধ্যমেকে জানিয়েছেন, ‘‘আমরা কী করব। আমরা অসহায়। আমরা ঝাড়খণ্ড যাব।’’
পরিযায়ী শ্রমিকদের বাড়ি ফেরার জন্য ইতিমধ্যেই কিছু বিশেষ ট্রেন চালানো হচ্ছে। কিন্তু কী ভাবে সেই ট্রেনের সুবিধা নিতে পারবেন, এই শ্রমিকদলের সদস্যরা তা জানেন না। লরিতে ওঠার আগে এক শ্রমিককে সে ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেছেন, ‘‘কী করে ট্রেন ধরে ফেরা যাবে সে ব্যাপারে কিছু জানি না। বাধ্য হয়েই এ ভাবে ফিরছি।’’
শ্রমিকরা যখন এ ভাবে লরিতে উঠছিলেন তখন সেখানে দাঁড়িয়ে এই কোলাহল দেখছিলেন সে রাজ্যের পরিবহণ বিভাগের এক অফিসার। তিনি বলেছেন, ‘‘পরিবহণের আর কোনও উপায় নেই। প্রশাসনের উচিত বিশেষ বাসের ব্যবস্থা করা। আমি পরিবহণ দফতরেই কাজ করি। কিন্তু আমার ক্ষমতায় কোনও বাসের ব্যবস্থা করতে পারিনি।’’
আরও পড়ুন: বাড়ি ফেরার দাবি জানাতেই পরিযায়ী শ্রমিককে লাথি মারলেন পুলিশ অফিসার
তবে এই প্রথম নয় পরিযায়ীদের দুর্দশার চিত্র গত দেড় মাস ধরেই উঠে আসছে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে। কাজ হারিয়ে দূর দেশে আটকে পড়ে তাঁদের জীবন যন্ত্রণার চিত্রের উদাহরণের কমতি নেই সোশ্যাল মিডিয়ায়। কখনও প্রশাসনের কাছে ঘরে ফেরার দাবি জানাতে গিয়ে মার খেতে হয়েছে। তো কখনও হেঁটে বাড়ি ফেরার পথে লরি বা ট্রেনের ধাক্কায় প্রাণ হারাতে হয়েছে তাঁদের।
আরও পড়ুন: দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৭০ হাজার ছাড়াল, মৃত্যু বেড়ে ২,২৯৩