মনোবল বাড়াতে পরিযায়ী শ্রমিকদের কাউন্সেলিংয়ের নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের

দরকার হলে ব্যবস্থা করতে হবে ভজন-কীর্তন, নমাজেরও। মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় সরকারকে এমনই নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ৩১ মার্চ ২০২০ ১৫:২৬
Share:

লখনউয়ে ইন্দিরা গাঁধী প্রতিষ্ঠানে রাখা হয়েছে ভিন্ রাজ্য থেকে আসা শ্রমিকদের। ছবি: পিটিআই।

রাস্তা থেকে তুলে শুধুমাত্র নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে গেলেই হবে না, সেখানে পরিযায়ী শ্রমিকদের পর্যাপ্ত খাবার জোগাতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে যাতে সবরকম চিকিৎসা পরিষেবা পান তাঁরা। তাঁদের মনোবল বাড়াতে প্রয়োজনে কাউন্সেলিংও করা হবে। দরকার হলে ব্যবস্থা করতে হবে ভজন-কীর্তন, নমাজেরও। মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় সরকারকে এমনই নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট

Advertisement

করোনার প্রকোপে গোটা দেশে ২১ দিনের লকডাউন ঘোষণা করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। এমন পরিস্থিতিতে নিজেদের ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চিত হয়ে পড়েছেন পরিযায়ী শ্রমিকরা। গত কয়েক দিনে তাঁদের মধ্যে থেকে হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় নেমে আসেন। কর্মস্থলে দু’বেলার খাবার জোগাড় করা অসম্ভব হয়ে দাঁড়ানোয়, কেউ পায়ে হেঁটে কেউ বা সরকারের ব্যবস্থা করে দেওয়া গাড়িতে চাপাচাপি করে নিজ নিজ বাড়ির উদ্দেশে রওনা দেন। প্রচণ্ড রোদে, অনাহারে এক জনের মৃত্যু পর্যন্ত হয়।

এমনটা চললে পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে এবং সংক্রমণ আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা দেখা দেয়। ওই সমস্ত শ্রমিকদের কাছে যাতে ত্রাণ পৌঁছে দেওয়া যায়, তা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়। তার শুনানিতেই চলাকালীন এ দিন সলিশিটর জেনারেল তুষার মেহতা জানান, সর্বশেষ পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, মঙ্গলবার বেলা ১১টা পর্যন্ত রাস্তায় কোনও পরিযায়ী শ্রমিক নেই। তাঁদের মাধ্যমে সংক্রমণ যাতে না ছড়া, তাই সকলকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

Advertisement

আরও পড়ুন: দিল্লির নিজামউদ্দিনের জমায়েতে যোগ দেওয়া অন্তত সাত জনের মৃত্যু, বাড়ছে উদ্বেগ​

এর পরই প্রধানবিচারপতি এসএ বোবডে বলেন, ‘‘যাঁদের মাঝপথে আটকেছেন আপনারা, তাঁরা যাতে নিরাপদে থাকেন, ঠিক মতো খাবার, ওষুধ এবং চিকিৎসা পরিষেবা পান, তা নিশ্চিত করতে হবে।’’ ২১ দিনব্যাপী লকডাউনের জেরে আচমকাই অনেকে কর্মহীন হয়ে পড়েছেন। নিরাপদ আশ্রয় চলে গিয়েছে। নিজেদের ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চিত হয়ে পড়েছেন। তাঁদের মন থেকে এই ভয় দূর করতে হবে বলেও জানান প্রধান বিচারপতি।

আরও পড়ুন: লকডাউনের ধাক্কা, ৭৫ শতাংশ পর্যন্ত বেতন কমানোর সিদ্ধান্ত তেলঙ্গানার​

বিচারপতি এসএ বোবডে বলেন, ‘‘একটা মনে রাখা দরকার, ভাইরাসের প্রকোপে যত না প্রাণহানি ঘটবে, আতঙ্কে তার চেয়েও বেশি প্রাণহানি ঘটতে পারে। তাই কাউন্সেলিং করা দরকার। মনের জোর বাড়াতে প্রয়োজনে ভজন-কীর্তন, নমাজের ব্যবস্থা করতে হবে। মানুষের মন থেকে আতঙ্ক দূর করতে ত্রাণ শিবিরে নিয়মিত কাউন্সেলর এবং ধর্মীয় নেতাদের নিয়ে যেতে হবে।’’ এই পরিস্থিতিতে সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে যাতে ভুয়ো খবর ছড়িয়ে পড়তে না পারে, তার জন্য সরকারকেই সংবাদমাধ্যমে সঠিক তথ্য পৌঁছে দিতে হবে বলে জানান বিচারপতি। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আদালতের নির্দেশ কার্যকর করা হবে বলে আদালতে জানান তুষার মেহতা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement