অন্তর্দেশীয় বিমান পরিষেবা চালু হলেও উড়ানে রেড জোনের যাত্রীদের ঠাঁই হবে না। ছবি: সংগৃহীত।
আগামী তিন মাসের জন্য অন্তর্দেশীয় উড়ানের বিমানভাড়া নির্ধারিত করে দিল কেন্দ্রীয় সরকার। বিমান সংস্থাগুলির পাশাপাশি যাত্রীদের জন্যও বেশ কিছু নতুন নির্দেশিকা জারি করেছে অসামরিক বিমান পরিবহণ মন্ত্রক। তবে অন্তর্দেশীয় উড়ান চালু হলেও স্বাভাবিক সংখ্যার তুলনায় তা মাত্র এক-তৃতীয়াংশই চলবে। সোমবার, ২৫ মে থেকে অন্তর্দেশীয় বিমান পরিষেবা চালু হলেও উড়ানে রেড জোনের যাত্রীদের ঠাঁই হবে না। সেই সঙ্গে প্রত্যেক যাত্রীর মাস্ক পরাও বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার এ ধরনের আরও একগুচ্ছ নিয়মের কথা জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় অসামরিক বিমান চলাচল মন্ত্রী হরদীপ সিংহ পুরি।
লকডাউনের মাঝে দু’মাস পর অন্তর্দেশীয় উড়ান চালু হলেও বিমান সংস্থাগুলির পাশাপাশি প্রত্যেক যাত্রীকে মেনে চলতে হবে এই নতুন নিয়ম। এ দিন বিমান চলাচল মন্ত্রী জানিয়েছেন, আগামী তিন মাসের জন্য বিমানভাড়া নিয়ে মন্ত্রকের জারি করা নিয়ম অনুসারে চলতে হবে বিমান সংস্থাগুলিকে। উদাহরণ হিসাবে তিনি বলেন, ‘‘আগামী তিন মাসের জন্য দিল্লি-মুম্বই একটি উড়ানের বিমানভাড়া সাড়ে ৩ হাজার টাকা থেকে ১০ হাজার টাকার মধ্যে রাখতে হবে।’’ এ ছাড়া, তিনি আরও জানিয়েছেন, একটি উড়ানের ৪০ শতাংশ আসনের ভাড়া কেন্দ্রের নির্ধারিত বিমানভাড়ার ৫০ শতাংশের মধ্যে রাখতে হবে। অর্থাৎ দিল্লি-মুম্বই রুটের উড়ানে ৫০ শতাংশ ক্ষেত্রেই এক একটি টিকিটের দাম হতে হবে ৬ হাজার ৭০০ টাকা।
নোভেল করোনাভাইরাস ঠেকাতে গত ২৪ মার্চ রাত ১২টার পর দেশ জুড়ে যাত্রিবাহী বিমান পরিষেবার উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল কেন্দ্রীয় সরকার। তবে দেশের মধ্যে এবং কিছু আন্তর্জাতিক রুটে পণ্যবাহী বিমান চালু ছিল। প্রাথমিক ভাবে দেশের মধ্যে খুব কম সংখ্যক বিমান চালানো হবে বলে আগেই জানিয়েছিলেন বিমানমন্ত্রী। এ দিন বিমানমন্ত্রী বলেন, ‘‘উড়ানের সময়কাল সাতটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে। ০-৩০ মিনিট, ৩০-৬০ মিনিট, ৬০-৯০ মিনিট, ৯০-১২০ মিনিট ১২০-১৫০ মিনিট।’’
আরও পড়ুন: আমপানের তাণ্ডবে জলের তলায় কলকাতা বিমানবন্দরের রানওয়ে
আরও পড়ুন: আমপানে তছনছ বাংলা, মৃত অন্তত ৭২, ‘এসে দেখে যান’, মোদীকে বললেন মমতা
বিমান সংস্থাগুলি ছাড়াও নোভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে যাত্রীদের জন্যও একগুচ্ছ নির্দেশিকা জারি করেছে মন্ত্রক। প্রত্যেক যাত্রীকেই বাধ্যতামূলক ভাবে মাস্ক পরতে হবে। রেড জোন থেকে আসা কোনও যাত্রীকেই উড়ানে জায়গা দেওয়া হবে না। এর জন্য ‘আরোগ্য সেতু’ অ্যাপে যাত্রীকে নিজের নাম নথিভুক্ত করতে হবে। অথবা কোনও যাত্রীর মোবাইলে সে সুবিধা না থাকলে তিনি যে বিমানে ভ্রমণে সক্ষম বা কোয়রান্টিনে ছিলেন না বা রেড জোন অথবা কনটেনমেন্ট জোনের বাসিন্দা নন, তা-ও একটি ঘোষণাপত্রে লিখিত ভাবে জমা দিতে হবে বিমানবন্দরে। এ ছাড়া, উড়ানের জন্য নির্দিষ্ট সময়ের দু’ঘণ্টা আগে পৌঁছতে হবে প্রত্যেক যাত্রীকে। সেই সঙ্গে কেবলমাত্র অনলাইনেই চেক-ইন করতে পারবেন যাত্রীরা। বিমানবন্দরে পৌঁছনোর পর প্রত্যেক যাত্রীরই থার্মাল স্ক্রিনিং করা হবে।
বিমানবন্দরে প্রত্যেক যাত্রীরই থার্মাল স্ক্রিনিং করা হবে। ছবি: পিটিআই।
যাত্রীদের ব্যাগপত্র উড়ানের এক ঘণ্টা আগে লাগেজ কাউন্টারে জমা রাখতে হবে। চেকিংয়ের জন্য যাত্রীদের থেকে যতটা সম্ভব শারীরিক দূরত্ব যাতে বজায় রাখেন বিমানবন্দরের নিরাপত্তাকর্মীরা, সে দিকেই খেয়াল রাখতে বলা হয়েছে। বোর্ডিং গেটের পাশের মাস্ক, হ্যান্ড স্যানিটাইজার, সেফটি কিট সংগ্রহ করতে হবে যাত্রীদের।
বিমানে ওঠার পর স্বাস্থ্যবিধি নিয়ে সতর্কতামূলক নিয়ম জারি করা হয়েছে যাত্রীদের জন্য। বিমানে যাত্রীদের কোনও খাবার পরিবেশন করা হবে না। প্রতিটি আসনে খাওয়ার জলের ব্যবস্থা থাকলেও বাইরের খাবার নিয়ে বিমানেও ওঠা যাবে না। বিমানে কোনও ম্যাগাজিন বা সংবাদপত্র নিয়ে আসা যাবে না। বিমানের শারীরিক দূরত্ব বজার রাখার বিষয়েও বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে বলে জানিয়েছে মন্ত্রক। বয়স্ক বা অন্তঃসত্ত্বারা যাতে এ সময় বিমানে ভ্রমণ এড়িয়ে চলেন, সে পরামর্শ দিয়েছে মন্ত্রক। তবে বয়স্করা বা স্বাস্থ্যজনিত কারণে কেউ ভ্রমণের দিন ক্ষণ বদলালে তাঁর থেকে যাতে বাড়তি অর্থ (পেনাল্টি) না নেওয়া হয়, সে দিকে নজর দিতে বলা হয়েছে মন্ত্রকের নির্দেশিকায়।