এখনও পর্যন্ত মোট ২৪ লক্ষ ৪ হাজার ৫৮৫ জন করোনার কবল থেকে মুক্ত হয়েছেন। গ্রাফিক-শৌভিক দেবনাথ।
৬৯ হাজারের গণ্ডি থেকে নেমে গত দু’দিন দৈনিক নতুন সংক্রমণ হচ্ছে ৬০ হাজারের গণ্ডিতে। প্রায় দেড় সপ্তাহ পর সোমবার সংক্রমণ হার ১০ শতাংশ ছাড়িয়েছিল। আজ তা ফের নামল সাত শতাংশের নীচে। গতকালের তুলনায় আজ করোনা পরীক্ষাও হয়েছে অনেক বেশি।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের পরিসংখ্যান অনুসারে গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে ৬০ হাজার ৯৭৫ জন নতুন করে কোভিডে আক্রান্ত হয়েছেন। যার জেরে দেশের মোট আক্রান্ত হলেন ৩১ লক্ষ ৬৭ হাজার ৩২৩ জন। ওই সময়ের মধ্যে আমেরিকা ও ব্রাজিলে নতুন আক্রান্তের সংখ্যা যথাক্রমে ৩৭ হাজার ৬২৬ ও ১৭ হাজার ৭৮ জন। অর্থাৎ আক্রান্ত বৃদ্ধির নিরিখে আমেরিকা ও ব্রাজিলের তুলনায় ভারতের এগিয়ে থাকার পরিসংখ্যান আজও অব্যাহত। বিশ্বে প্রথম স্থানে থাকা আমেরিকাতে মোট আক্রান্ত ৫৭ লক্ষ ৩৯ হাজার ও দ্বিতীয় স্থানে থাকা ব্রাজিলে ৩৬ লক্ষ ২২ হাজার।
প্রতি দিন যে সংখ্যক মানুষের পরীক্ষা হচ্ছে তার মধ্যে যত শতাংশের কোভিড রিপোর্ট পজিটিভ আসছে সেটাকেই বলা হচ্ছে পজিটিভিটি রেট বা সংক্রমণের হার। সোমবার তা ১০ শতাংশ ছাড়িয়ে গেলেও আজ কমেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে সংক্রমণ হার ৬.৫৯ শতাংশ। গত ২৪ ঘণ্টায় পরীক্ষা হয়েছে মাত্র ৯ লক্ষ ২৫ হাজার ৩৮৩ জনের।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
আক্রান্তের সংখ্যা যেমন রোজ বাড়ছে, তেমনই প্রচুর মানুষ সুস্থও হয়ে উঠছেন। দেশে কোভিড রোগীর সুস্থ হয়ে ওঠার পরিসংখ্যান শুরু থেকেই আশাব্যাঞ্জক। এখনও পর্যন্ত মোট ২৪ লক্ষ ৪ হাজার ৫৮৫ জন করোনার কবল থেকে মুক্ত হয়েছেন। অর্থাৎ দেশে মোট আক্রান্তের তিন চতুর্থাংশই সুস্থ হয়েছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ৬৬ হাজার ৫৫০ জন।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
স্পেন, ফ্রান্স, ইটালি, ব্রিটেনের মতো দেশকে পিছনে ফেলে, মৃত্যুর নিরিখে বিশ্বের চতুর্থ স্থানে রয়েছে ভারত। যদিও দেশে মৃত্যুর হার ওই সব দেশগুলির তুলনায় অনেকটাই কম। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের পরিসংখ্যান অনুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনার জেরে মৃত্যু হয়েছে ৮৪৮ জনের। এ নিয়ে দেশে মোট ৫৮ হাজার ৩৯০ জনের প্রাণ কাড়ল করোনাভাইরাস। এর মধ্যে মহারাষ্ট্রেই মারা গিয়েছেন ২২ হাজার ৪৬৫ জন। দ্বিতীয় স্থানে থাকা তামিলনাড়ুতে মোট মৃত ৬ হাজার ৬১৪ জন। দেশের রাজধানীতে সেই সংখ্যাটা ৪ হাজার ৩১৩ জন। কর্নাটকে মৃতের সংখ্যা দিল্লির থেকেও বেশি (৪,৮১০)। অন্ধ্রপ্রদেশ (৩,৩৬৮), উত্তরপ্রদেশ (২,৯৮৭), গুজরাত (২,৯০৮), পশ্চিমবঙ্গ (২,৮৫১) মৃত্যু তালিকায় উপরের দিকে রয়েছে। মধ্যপ্রদেশেও মোট মৃত্যু এক হাজার ছাড়িয়ে বেড়ে চলেছে। এর পর তালিকায় রয়েছে পঞ্জাব, রাজস্থান, তেলঙ্গানা, হরিয়ানা, জম্মু ও কাশ্মীর, বিহার, ওড়িশা, ঝাড়খণ্ড, উত্তরাখণ্ড, ছত্তীসগঢ়, গোয়া-র মতো রাজ্যগুলি।
কোভিডে আক্রান্ত ও মৃত্যু দু’টি তালিকাতেই শুরু থেকেই শীর্ষে মহারাষ্ট্র। সেখানে মোট আক্রান্ত ৬ লক্ষ ৯৩ হাজার ৩৯৮ জন। দ্বিতীয় স্থানে থাকা তামিলনাড়ুতে মোট আক্রান্ত তিন লক্ষ ৮৫ হাজার ৩৫২। অন্ধ্রপ্রদেশেও মোট আক্রান্ত সাড়ে তিন লক্ষ পার করে রোজ উল্লেখযোগ্য হারে বাড়ছে। চতুর্থ স্থানে থাকা কর্নাটকে সংখ্যাটা ২ লক্ষ ৮৩ হাজার। এর পর রয়েছে উত্তরপ্রদেশ (১,৯২,৩৮২) ও দিল্লি (১,৬২,৫২৭)। পশ্চিমবঙ্গ (১,৪১,৮৩৭), বিহার (১,২৩,১৯৮) ও তেলঙ্গানাতে (১,০৮,৬৭০) মোট আক্রান্তের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
অসম, গুজরাতে মোট আক্রান্ত ৯০ হাজারের আশেপাশে। তার পর রয়েছে ওড়িশা, রাজস্থান। কেরল, হরিয়ানা ও মধ্যপ্রদেশে মোট আক্রান্ত ৫০ হাজার পেরিয়েছে। পঞ্জাব ও জম্ম ও কাশ্মীরে মোট আক্রান্ত ৪০ ও ৩০ হাজারের ঘরে। এর পর ক্রমান্বয়ে রয়েছে, ঝাড়খণ্ড, ছত্তীসগঢ়, উত্তরাখণ্ড, গোয়া। ত্রিপুরা, মণিপুর, হিমাচল প্রদেশ, নাগাল্যান্ড, অরুণাচল প্রদেশের মতো রাজ্যে মোট আক্রান্ত ১০ হাজারের কম।
তিন হাজারেরও বেশি মানুষ রোজ নতুন করে সংক্রমিত হচ্ছিলেন পশ্চিমবঙ্গে। গত কাল তা কিছুটা কমেছে। সোমবার রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের প্রকাশিত বুলেটিন অনুসারে, নতুন করে ২ হাজার ৯৬৭ জনের দেহে করোনাভাইরাসের অস্তিত্ব মিলেছে। এ নিয়ে রাজ্যে মোট আক্রান্ত হলেন ১ লক্ষ ৪১ হাজার ৮৩৭ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে মৃত্যু হয়েছে ৫৭ জনের। করোনার কবলে এ রাজ্যে এখনও অবধি প্রাণ হারিয়েছেন ২ হাজার ৮৫১ জন।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
(চলন্ত গড় বা মুভিং অ্যাভারেজ কী: একটি নির্দিষ্ট দিনে পাঁচ দিনের চলন্ত গড় হল— সেই দিনের সংখ্যা, তার আগের দু’দিনের সংখ্যা এবং তার পরের দু’দিনের সংখ্যার গড়। উদাহরণ হিসেবে— দৈনিক নতুন করোনা সংক্রমণের লেখচিত্রে ১৮ মে-র তথ্য দেখা যেতে পারে। সে দিনের মুভিং অ্যাভারেজ ছিল ৪৯৫৬। কিন্তু সে দিন নতুন আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা ছিল ৫২৬৯। তার আগের দু’দিন ছিল ৩৯৭০ এবং ৪৯৮৭। পরের দুদিনের সংখ্যা ছিল ৪৯৪৩ এবং ৫৬১১। ১৬ থেকে ২০ মে, এই পাঁচ দিনের গড় হল ৪৯৫৬, যা ১৮ মে-র চলন্ত গড়। ঠিক একই ভাবে ১৯ মে-র চলন্ত গড় হল ১৭ থেকে ২১ মে-র আক্রান্তের সংখ্যার গড়। পরিসংখ্যানবিদ্যায় দীর্ঘমেয়াদি গতিপথ সহজ ভাবে বোঝার জন্য এবং স্বল্পমেয়াদি বড় বিচ্যুতি এড়াতে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়)