গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
দেশে দৈনিক করোনা সংক্রমণ খানিকটা কমল। কোভিড সংক্রমণের নিরিখে এই মুহূর্তে বিশ্ব তালিকায় এক নম্বরে রয়েছে আমেরিকা। সেখানে সবমিলিয়ে ১ কোটি ৫৫ লক্ষ ৯৯ হাজার ১২২ জন নোভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। ভারতে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৯৭ লক্ষ ৬৭ হাজার ৩৭১। এই মুহূর্তে ভারতে দৈনিক সংক্রমণ বৃদ্ধি ৩০ হাজারের আশেপাশেই ঘোরাফেরা করছে। দৈনিক সংক্রমণ অনেক কমলেও এ ভাবে চললে আর কয়েক দিনের মধ্যেই ভারতে সংক্রমণ ১ কোটি ছাড়িয়ে যাবে।
শুক্রবার কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের তরফে যে পরিসংখ্যান প্রকাশ করা হয়েছে সেই অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশ জুড়ে নতুন করে ২৯ হাজার ৩৯৮ জন নোভেল করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছেন, যা গতকালের চেয়ে ২ হাজার ১২৩ কম। এই মুহূর্তে দেশে সক্রিয় করোনা রোগীর সংখ্যা ৩ লক্ষ ৬৩ হাজার ৭৪৯।
সংক্রমণ অব্যাহত থাকলেও বিশ্বতালিকায় প্রথম ও তৃতীয় স্থানে থাকা আমেরিকা এবং ব্রাজিলের তুলনায় এই মুহূর্তে ভারতে দৈনিক সংক্রমণ বৃদ্ধি অনেকটাই কম। আমেরিকায় গতকাল ২ লক্ষ ১৪ হাজার ৮৫৮ জন নতুন করে করোনায় সংক্রমিত হন। ব্রাজিলে নতুন করে আক্রান্ত হন ৫৩ হাজার ৩৪৭ জন। সেই তুলনায় দ্বিতীয় স্থানে থাকা ভারতের পরিস্থিতি খানিকটা হলেও স্বস্তিদায়ক। তবে মোট সংক্রমণের নিরিখে ভারতের থেকে অনেকটাই পিছিয়ে ব্রাজিল (৬৭ লক্ষ ৮১ হাজার ৭৯৯)।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
গত ২৪ ঘণ্টায় গোটা দেশে ৪১৪ জন করোনা রোগী প্রাণ হারিয়েছেন। এর মধ্যে মহারাষ্ট্রেই ৭০ জন করোনা রোগীর মৃত্যু হয়েছে। ৬১ জন করোনা রোগী মারা গিয়েছেন রাজধানী দিল্লিতে। পশ্চিমবঙ্গে ৪৯ জন করোনা রোগী প্রাণ হারিয়েছেন। করোনার প্রকোপে গোটা দেশে এখনও পর্যন্ত ১ লক্ষ ৪২ হাজার ১৮৬ জনের মৃত্যু ঘটেছে।
তবে সংক্রমণ এবং মৃত্যু অব্যাহত থাকলেও, ভারতে প্রতি দিন বহু করোনা রোগী সেরেও উঠছেন। মোট আক্রান্তের মধ্যে এখনও পর্যন্ত ৯২ লক্ষ ৯০ হাজার ৮৩৪ জন রোগীই সেরে উঠেছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৩৭ হাজার ৫২৮ জন। গত ২৮ নভেম্বর থেকে একটানা দেশে দৈনিক সংক্রমণের চেয়ে দৈনিক সুস্থতা বেশি রয়েছে। এই মুহূর্তে দেশে সুস্থতার হার ৯৪.৮৪ শতাংশ।
আরও পড়ুন: সল্টলেকে বাড়ির ছাদে কঙ্কাল, ছেলেকে খুনের অভিযোগ মায়ের বিরুদ্ধে
প্রতি দিন যত সংখ্যক মানুষের কোভিড টেস্ট হয় এবং তার মধ্যে যত শতাংশের রিপোর্ট পজিটিভ আসে, তাকে ‘পজিটিভিটি রেট’ বা সংক্রমণের হার বলা হয়। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে ৮ লক্ষ ৭২ হাজার ৪৯৭টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। তবে এ দিন নতুন সংক্রমণ যেহেতু কম, তাই সংক্রমণের হারও কমে ৩.৩৭ শতাংশ হয়েছে। গতকাল এই হার ৩.৪২ শতাংশ ছিল।
সংক্রমণ এবং মৃত্যুর নিরিখে দেশের মধ্যে শীর্ষে রয়েছে মহারাষ্ট্র। সেখানে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ১৮ লক্ষ ৬৮ হাজার ১৭২। করোনার প্রকোপে মৃত্যু হয়েছে ৪৭ হাজার ৯৭২ জনের। এর মধ্যে আবার ১৭ লক্ষ ৪৭ হাজার ১৯৯ জন রোগী সেরেও উঠেছেন। এই তালিকায় অষ্টম স্থানে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ। রাজ্যে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৫ লক্ষ ১৩ হাজার ৭৫২। এর মধ্যে ৪ লক্ষ ৮১ হাজার ২৮৫ জনই সুস্থ হয়ে উঠেছেন।
আরও পড়ুন: বাংলায় নৈরাজ্য চললেও রাষ্ট্রপতি শাসনের দাবি নয়: নড্ডা
(চলন্ত গড় বা মুভিং অ্যাভারেজ কী: একটি নির্দিষ্ট দিনে পাঁচ দিনের চলন্ত গড় হল— সেই দিনের সংখ্যা, তার আগের দু’দিনের সংখ্যা এবং তার পরের দু’দিনের সংখ্যার গড়। উদাহরণ হিসেবে— দৈনিক নতুন করোনা সংক্রমণের লেখচিত্রে ১৮ মে-র তথ্য দেখা যেতে পারে। সে দিনের মুভিং অ্যাভারেজ ছিল ৪৯৫৬। কিন্তু সে দিন নতুন আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা ছিল ৫২৬৯। তার আগের দু’দিন ছিল ৩৯৭০ এবং ৪৯৮৭। পরের দুদিনের সংখ্যা ছিল ৪৯৪৩ এবং ৫৬১১। ১৬ থেকে ২০ মে, এই পাঁচ দিনের গড় হল ৪৯৫৬, যা ১৮ মে-র চলন্ত গড়। ঠিক একই ভাবে ১৯ মে-র চলন্ত গড় হল ১৭ থেকে ২১ মে-র আক্রান্তের সংখ্যার গড়। পরিসংখ্যানবিদ্যায় দীর্ঘমেয়াদি গতিপথ সহজ ভাবে বোঝার জন্য এবং স্বল্পমেয়াদি বড় বিচ্যুতি এড়াতে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়)