Coronavirus

মোট সংক্রমণ ৯৪ লক্ষ ছুঁইছুঁই, দৈনিক মৃত্যুতে মহারাষ্ট্রকেও ছাপিয়ে গেল দিল্লি

করোনার প্রকোপে এখনও পর্যন্ত ১ লক্ষ ৩৬ হাজার ৬৯৬ জনের মৃত্যু হয়েছে দেশে।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ২৯ নভেম্বর ২০২০ ১০:৫০
Share:

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

আমেরিকায় মোট সংক্রমণ ১ কোটি পেরিয়ে গিয়েছে আগেই। বিশ্বের দ্বিতীয় দেশ হিসাবে সেই পথে এগোচ্ছে ভারতও। যাবতীয় সতর্কবিধি সত্ত্বেও দেশে দৈনিক সংক্রমণে বৃদ্ধি অব্যাহত। আগের চেয়ে কিছুটা হ্রাস পেলেও নোভেল করোনাভাইরাসের প্রকোপে প্রতি দিন শত শত মানুষ প্রাণ হারাচ্ছেন। পরিস্থিতি সামাল দিতে দেশ জুড়ে জরুরি ভিত্তিতে টিকাকরণ শুরু করে দিতে চাইছে সিরাম ইনস্টিটিউট। তা নিয়ে খুব শীঘ্রই কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে আবেদন জানাতে চলেছে তারা।

Advertisement

রবিবার সকালে প্রকাশিত কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে নতুন করে কোভিড-১৯ ভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছেন ৪১ হাজার ৮১০ জন, শনিবারের চেয়ে ৪৮৮ জন বেশি। সব মিলিয়ে দেশে মোট সংক্রমিতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৯৩ লক্ষ ৯২ হাজার ৯১৯। এই মুহূর্তে দেশে সক্রিয় করোনা রোগীর সংখ্যা ৪ লক্ষ ৫৩ হাজার ৯৫৬।

করোনার প্রকোপে এখনও পর্যন্ত ১ লক্ষ ৩৬ হাজার ৬৯৬ জনের মৃত্যু হয়েছে দেশে। গত ২৪ ঘণ্টাতেই প্রাণ হারিয়েছেন ৪৯৬ জন করোনা রোগী। এর মধ্যে রাজধানী দিল্লিতেই গত ২৪ ঘণ্টায় ৮৯ জন করোনা রোগীর মৃত্যু হয়েছে। মহারাষ্ট্রে প্রাণ হারিয়েছেন ৮৮ জন। পশ্চিমবঙ্গে ৫২ জন প্রাণ হারিয়েছেন। এ ছাড়াও হরিয়ানা (৩০),পঞ্জাব (২৮), কেরল (২৫) উত্তরপ্রদেশ (২১), রাজস্থান (১৯), ছত্তীসগঢ় (১৭), গুজরাত (১৫), তামিলনাড়ু (১৩), মধ্যপ্রদেশ (১৩), উত্তরাখণ্ড (১৩), কর্নাটক (১২) এবং হিমাচল প্রদেশও (১১) অনেকের প্রাণহানি ঘটেছে।

Advertisement

(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)

আরও পড়ুন: প্রায় গৃহবন্দি রইলেন শুভেন্দু, আজ কী বলবেন মহিষাদলে, জল্পনা তুঙ্গে

সংক্রমণ এবং মৃত্যু বাড়লেও, দৈনিক সুস্থতা ভারতকে খানিকটা হলেও আশা জোগাচ্ছে। দেশের মোট সংক্রমিতের মধ্যে এখনও পর্যন্ত ৮৮ লক্ষ ২ হাজার ২৬৭ জন করোনা রোগীই সেরে উঠেছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৪২ হাজার ২৯৮ জন। বর্তমানে দেশে সুস্থতার হার ৯৩.৭১ শতাংশ।

প্রতি দিন যত সংখ্যক মানুষের কোভিড পরীক্ষা করা হয়, এবং তার মধ্যে যত জনের রিপোর্ট পজিটিভ বেরোয়, তাকে পজিটিভিটি রেট বা সংক্রমণের হার বলা হয়। গত ২৪ ঘণ্টায় ১২ লক্ষ ৮৩ হাজার ৪৪৯টি নমুনা পরীক্ষা করার পর এই মুহূর্তে সংক্রমণের হার ৩.২৬ শতাংশ।

বর্তমানে দেশের মধ্যে মহারাষ্ট্রেই করোনা পরিস্থিতি সবচেয়ে ভয়ঙ্কর। শুধুমাত্র সেখানেই ১৮ লক্ষ ১৪ হাজার ৫১৫ জন সংক্রমিত। করোনার প্রকোপে এখনও পর্যন্ত ৪৬ হাজার ৯৮৬ জন প্রাণ হারিয়েছেন সেখানে। তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে থাকা কর্নাটকে মোট সংক্রমিতের সংখ্যা ৮ লক্ষ ৮২ হাজার ৬০৮। অন্ধ্রপ্রদেশ ও তামিলনাড়ু তালিকায় তৃতীয় ও চতুর্থ স্থানে রয়েছে। সেখানে মোট সংক্রমণ যথাক্রমে ৮ ৬৭ হাজার ৬৩ এবং ৭ লক্ষ ৭৬৯ হাজার ৪৬। পঞ্চম স্থানে থাকা কেরলে এখনও পর্যন্ত ৫ লক্ষ ৫৩ হাজার ৯৫৭ জন সংক্রমিত হয়েছেন। ষষ্ঠ স্থানে থাকা দিল্লিতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৫ লক্ষ ৬১ হাজার ৭৪২।

আরও পড়ুন: শুভেন্দু দলত্যাগ করবেন ধরেই কৌশল সাজাচ্ছেন মমতার সৈনিকরা​

এই তালিকায় সপ্তম স্থানে রয়েছে উত্তরপ্রদেশ। সেখানে এখনও পর্যন্ত ৫ লক্ষ ৩৯ হাজার ৮৯৯ জন সংক্রমিত হয়েছেন। অষ্টম স্থানে থাকা পশ্চিমবঙ্গে মোট আক্রান্ত ৪ লক্ষ ৭৭ হাজার ৪৪৬। ওড়িশা এবং তেলঙ্গানা এই তালিকায় যথাক্রমে নবম ও দশম স্থানে রয়েছে। সেখানে মোট আক্রান্তের সংখ্যা যথাক্রমে ৩ লক্ষ ১৭ হাজার ৭৮৯ এবং ২ লক্ষ ৬৯ হাজার ২২৩।

তবে বিশ্ব তালিকায় প্রথম স্থানে থাকা আমেরিকার তুলনায় ভারতের পরিস্থিতি আশাব্যাঞ্জক। এই মুহূর্তে আমেরিকায় দৈনিক সংক্রমণ ২ লক্ষে গিয়ে ঠেকেছে। শুক্রবারই সেখানে ২ লক্ষ ৫ হাজার ২৪ জন নতুন করে সংক্রমিত হন। শনিবার তা কিছুটা কমলেও ১ লক্ষ ৫০ হাজার ১৫১ জন ফের আক্রান্ত হন। সব মিলিয়ে এখনও পর্যন্ত ১ কোটি ৩২ লক্ষ ৩৮ হাজার ৪৩৩ জন সংক্রমিত হয়েছেন। তালিকায় তৃতীয় স্থানে থাকা ব্রাজিলে এখনও পর্যন্ত ৬২ লক্ষ ৯০ হাজার ২৭২ জনের শরীরে সংক্রমণ ধরা পড়েছে। মাঝে বেশ কয়েক দিন দৈনিক সংক্রমণ ২০ হাজারের নীচে চলে গেলেও, গত দু’দিনে দৈনিক ৫০ হাজারের বেশি মানুষ সংক্রমিত হয়েছেন সেখানে।

(চলন্ত গড় বা মুভিং অ্যাভারেজ কী: একটি নির্দিষ্ট দিনে পাঁচ দিনের চলন্ত গড় হল— সেই দিনের সংখ্যা, তার আগের দু’দিনের সংখ্যা এবং তার পরের দু’দিনের সংখ্যার গড়। উদাহরণ হিসেবে— দৈনিক নতুন করোনা সংক্রমণের লেখচিত্রে ১৮ মে-র তথ্য দেখা যেতে পারে। সে দিনের মুভিং অ্যাভারেজ ছিল ৪৯৫৬। কিন্তু সে দিন নতুন আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা ছিল ৫২৬৯। তার আগের দু’দিন ছিল ৩৯৭০ এবং ৪৯৮৭। পরের দুদিনের সংখ্যা ছিল ৪৯৪৩ এবং ৫৬১১। ১৬ থেকে ২০ মে, এই পাঁচ দিনের গড় হল ৪৯৫৬, যা ১৮ মে-র চলন্ত গড়। ঠিক একই ভাবে ১৯ মে-র চলন্ত গড় হল ১৭ থেকে ২১ মে-র আক্রান্তের সংখ্যার গড়। পরিসংখ্যানবিদ্যায় দীর্ঘমেয়াদি গতিপথ সহজ ভাবে বোঝার জন্য এবং স্বল্পমেয়াদি বড় বিচ্যুতি এড়াতে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement