ছবি: পিটিআই।
দেশে করোনা পরিস্থিতির জন্য তবলিগি জামাতের সমাবেশকে দায়ী করল নরেন্দ্র মোদীর সরকার। কোনও রাখঢাক না-করেই আজ সংসদে এ কথা জানিয়ে দিয়েছে কেন্দ্র। লিখিত জবাবে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী জি কিষাণ রেড্ডি জানান, সরকারি বিধিনিষেধ অমান্য করেই তবলিগি জামাত সমাবেশ করেছিল। পারস্পরিক দূরত্ব মানা হয়নি। ছিল না মাস্ক-স্যানিটাইজ়ারের ব্যবহারও।
দেশ জুড়ে করোনা সংক্রমণ লাগামছাড়া। পাঁচ দিন পরে দৈনিক সংক্রমণ ৯০ হাজারের নীচে নেমেছে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টা দেশে নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন ৮৬,৯৬১ জন। শিবসেনা সাংসদ অনিল দেশাই আজ রাজ্যসভায় প্রশ্ন করেন, রাজধানী ও অন্য রাজ্যগুলিতে করোনা ছড়িয়ে পড়ার পিছনে কী তবলিগির ওই জমায়েত দায়ী? দেশে করোনা ছড়িয়ে পড়ার জন্য ওই জমায়েতকে ‘অন্যতম বড়’ কারণ উল্লেখ করে লিখিত জবাবে কিষাণ রেড্ডি বলেন, ‘‘করোনা সংক্রমণের আবহে প্রশাসন বিধিনিষেধ জারি করেছিল। কিন্তু ওই বিধি লঙ্ঘন করে একটি ছোট জায়গায় দীর্ঘ সময় ধরে অনেকে ভিড় করেছিলেন। সামাজিক দূরত্ব মানা হয়নি, ব্যবহার করা হয়নি মাস্ক, স্যানিটাইজ়ার। সেখানেই অনেকে সংক্রমিত হয়ে পড়েছিলেন।’’
শিবসেনা সাংসদ জানতে চেয়েছিলেন, ওই জমায়েতে কত জন যোগ দিয়েছিলেন এবং কত জনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী জানিয়েছেন, গত ২৯ মার্চ নিজামুদ্দিন মরকজ থেকে দিল্লি পুলিশ ২৩৬১ জনকে বার করে দিয়েছিল। জি কিষাণ রেড্ডি বলেছেন, ‘‘ওই জমায়েতে অংশ নেওয়া ২৩৩ জনকে গ্রেফতার করেছিল দিল্লি পুলিশ। জামাত প্রধান মৌলানা মহম্মদ সাদের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে।’’ ওই জমায়েতে যোগ দিয়েছিলেন ৩৬টি দেশ থেকে আসা ৯৫৬ জন বিদেশি নাগরিক। তাঁদের বিরুদ্ধে ৫৯টি চার্জশিট জমা দিয়েছে দিল্লি পুলিশ।
আরও পড়ুন: কৃষি সংক্রান্ত বিল পাশ করানোর বিরুদ্ধে গাঁধীমূর্তির নীচে ধর্না সারা রাত
আরও পড়ুন: মোদীর আশ্বাস, ঘোষিত সহায়ক মূল্যও
বিরোধীরা অবশ্য বহু বার প্রশ্ন তুলেছেন, তবলিগি জামাতের সমাবেশ হয়েছিল ছ’মাস আগে। কিন্তু এখন কেন সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না কেন্দ্র। গত কাল সংসদে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষ বর্ধন জানান, আমজনতার দায়িত্বজ্ঞানহীনতার জন্যই করোনা সংক্রমণ বাড়ছে। করোনা মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রী যে ভাবে কাজ করেছেন, সকলের উচিত তার প্রশংসা করা। স্বাস্থ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের সমালোচনা করে কংগ্রেস নেতা রাহুল গাঁধীর টুইট, ‘‘মোদী সরকারের অন্ধ অহঙ্কারের জন্যই দেশের বেহাল দশা। আর দায়ী করা হচ্ছে কখনও ভগবানকে, কখনও আমজনতাকে। কিন্তু কখনওই নিজেদের কুশাসন ও ভুল নীতিকে দায়ী করছে না সরকার।’’ আজ কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘‘দেশের সুস্থতার হার ৮০.১২ শতাংশ। মোট সুস্থের সংখ্যা ৪৪ লক্ষ ছুতে চলেছে। সুস্থের সংখ্যার নিরিখে বিশ্বে প্রথম স্থানে ভারত।’’