মওলানা সাদ কান্ধালভি।
এখনও নিখোঁজ দিল্লির নিজামুদ্দিন এলাকার বাংলেওয়ালি মসজিদের অন্যতম প্রচারক মৌলানা সাদ কন্ধালভি। পুলিশ আজ তাঁর খোঁজে দিল্লি-উত্তরপ্রদেশের নানা স্থানে হানা দেয়। যদিও আজ বিকেলে অজ্ঞাত জায়গা থেকে দু’টি অডিয়ো ক্লিপে তিনি অনুগামীদের বার্তা দেন। জানান, তিনি চিকিৎসকের পরামর্শে কোয়রান্টিনে রয়েছেন। অনুগামীদের মধ্যে যাঁরা সংক্রমিত, তাঁদের কোয়রান্টিনে যাওয়ার পরামর্শও দেন। বলেন, কোয়রান্টিন ব্যবস্থা ইসলাম বা শরিয়তের বিরুদ্ধে নয়। পুলিশের মতে, সাদ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।
গত কাল জামাত সদস্যরা যে বাড়ি ও মসজিদে ছিলেন সেটি জীবাণুমুক্ত করার পরে আজ পাশেই থাকা নিজামুদ্দিন থানাও জীবাণুমক্ত করা হয়। পরীক্ষা করা হয়েছে থানার কর্মীদের। দিল্লি পুলিশ সূত্রে জানানো হয়েছে, সাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে একসঙ্গে থাকতে বাধ্য করা এবং দু’বার পুলিশের নোটিস সত্ত্বেও বাসিন্দাদের মসজিদে ও বাড়িতে রেখে দেওয়ার অপরাধে অভিযোগ দায়ের করেছে। আজ সাদের দিল্লির বাড়িতে গিয়ে পরিবারের হাতে নোটিস ধরিয়ে এসেছে পুলিশ। পরিবার জানিয়েছে, মৌলানা আইনি জবাব পাঠাবেন।
আজ নিজের অবস্থান স্পষ্ট করতে দুপুরে সাংবাদিক বৈঠক করবেন বলে জানিয়েছিলেন সাদ। পরে অবশ্য দু’টি অডিয়ো বার্তায় নিজের বক্তব্য তুলে ধরেন তিনি। প্রথমটিতে অনুগামীদের উদ্দেশে বলতে শোনা যায়, মৃত্যুর জন্য শ্রেষ্ঠ জায়গা মসজিদ। তাঁর অনুগামীদের কিছু হবে না বলে দাবি করেন। যদিও পরের অডিয়োয় সাদ বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে সমাবেশ না-করার যে নির্দেশ সরকার দিয়েছে, তা সকলের মানা উচিত। তাঁর কথায়, ‘‘আজ যা হচ্ছে তা মানুষের অপরাধেই হচ্ছে। আমাদের সকলের এখন ঘরে থাকা উচিত। আমাদের সদস্যরা যেন চিকিৎসকের নির্দেশ ও প্রশাসনের পরামর্শ মেনে চলেন। যেখানে থাকুন নিজেকে কোয়রান্টিন করুন।’’
সরকারের দাবি, লকডাউনের প্রাথমিক সাফল্য ধাক্কা খেয়েছে নিজামুদ্দিনের ঘটনায়। সরকারের ধারণা, জামাত সদস্যদের মাধ্যমে দেশে অন্তত ৯ হাজার লোক সংক্রমিত হয়েছে। সংখ্যাটি এর কয়েক গুণ বাড়তে পারে বলেও আশঙ্কা রয়েছে। কারণ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের একটি সূত্রের দাবি, সমাবেশে উপস্থিত কয়েকশো লোকের খোঁজ এখনও মেলেনি। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের যুগ্মসচিব পুণ্যসলিলা শ্রীবাস্তব জানান, গোটা দেশে নিজামুদ্দিনের তবলিগি জামাতে উপস্থিত হওয়া ও তাদের সংস্পর্শে আসা লোকেদের খুঁজতে বড় মাপের তল্লাশি অভিযান চালানো হয়েছে। সব রাজ্য মিলিয়ে প্রায় ৯ হাজার জনকে চিহ্নিত করা হয়েছে, যাঁদের মধ্যে ১৩০৬ জন বিদেশি। এঁদের সকলকে কোয়রান্টাইন করা হয়েছে।