—ফাইল চিত্র।
তাঁর ‘পরামর্শ’, নিজের ‘আত্মতুষ্টি’র জন্য রাজধানী দিল্লিকে নতুন করে সাজানোর প্রকল্প বাতিল করুন! ওই প্রকল্পের ২০ হাজার কোটি টাকা করোনা মোকাবিলায় ব্যয় করুন! প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি লিখলেন কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধী।
রবিবার সনিয়া গাঁধী-সহ বিরোধী দলের নেতানেত্রীদের ফোন করে প্রধানমন্ত্রী করোনা-মোকাবিলায় তাঁদের সাহায্য, সমর্থন ও পরামর্শ চেয়েছিলেন। সেই অনুরোধ মেনেই আজ প্রধানমন্ত্রীকে পাঁচ দফা পরামর্শ জানিয়ে চিঠি লিখেছেন সনিয়া। কিন্তু সেগুলোকে সনিয়ার পাঁচটি তির হিসেবেই দেখছেন কংগ্রেস নেতারা। কারণ সনিয়া শুধু লাটিয়েন্সের দিল্লিকে ঢেলে সাজানোর পরিকল্পনা বাতিলের পরামর্শ দেননি, মোদীকে আপাতত তাঁর সমস্ত বিদেশ সফর বাতিল করে সেই টাকা করোনা-মোকাবিলায় লাগানোর ‘পরামর্শ’ও দিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রীর ডাকে জনতা-কার্ফুর দিনই কেন্দ্রীয় সরকার দিল্লির রাজপথ সংলগ্ন এলাকা ঢেলে সাজানোর প্রকল্পে ছাড়পত্র দেয়। রাষ্ট্রপতি ভবন থেকে ইন্ডিয়া গেট পর্যন্ত রাজপথের আশপাশের এলাকা পুনর্গঠন বা ‘সেন্ট্রাল ভিস্টা প্রোজেক্ট’-এ নতুন সংসদ ভবন তৈরি হবে। বিভিন্ন মন্ত্রকের ভবন নতুন করে তৈরি হবে। ২০ হাজার কোটি টাকা এই প্রকল্পের জন্য খরচ ধার্য হয়েছে। তখনই মোদী সরকারের অগ্রাধিকার নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। প্রশ্ন উঠেছিল, প্রধানমন্ত্রী কি নতুন রাজধানী তৈরি করে ইতিহাসের পাতায় জায়গা করে নিতে চাইছেন? বিশেষজ্ঞরা বলেছিলেন, ২০ হাজার কোটি টাকায় ১৫টি নতুন এমস তৈরি করা সম্ভব।
আরও পড়ুন: ১ জন করোনা আক্রান্ত এক মাসে সংক্রমিত করতে পারে ৪০৬ জনকে!
আজ সনিয়া সেই প্রশ্ন তুলে মোদীকে লিখেছেন, ‘‘এখন এই ধরনের খরচ আত্মতুষ্টি বললেও কম বলা হয়। আমি নিশ্চিত, এই ভবনেই সংসদ আরামে চলতে পারে। এই টাকা হাসপাতালের নতুন পরিকাঠামো, রোগনির্ণয় ব্যবস্থা ও স্বাস্থ্যকর্মীদের সুরক্ষা সামগ্রীর জন্য খরচ করা যেতে পারে।’’ প্রধানমন্ত্রীর নিজের ও অন্য কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের বিদেশ সফরে গত পাঁচ বছরে ৩৯৩ কোটি টাকা খরচ হয়েছে। সনিয়ার পরামর্শ, আপাতত সব বিদেশ সফর বাতিল হোক। মন্ত্রী-সাংসদদের বেতনের মতো সরকারের নিজস্ব খরচও ৩০ শতাংশ ছাঁটাই করা হোক। তাতে বছরে ২.৫ লক্ষ কোটি টাকা বাঁচবে। সরকার নিজের প্রচারে সমস্ত বিজ্ঞাপন বন্ধ রাখুক। এতে বছরে ১,২৫০ কোটি টাকা ব্যয় হয়। করোনা মোকাবিলার জন্য ‘পিএম কেয়ারস’ নামে আলাদা তহবিল খোলা হয়েছে। সনিয়ার মত, ওই তহবিলের টাকা প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে সরানো হোক। তা হলে টাকা কী ভাবে খরচ হচ্ছে, তাতে স্বচ্ছতা থাকবে। দু’টি পৃথক তহবিল বজায় রাখার জন্য পণ্ডশ্রম হবে না।
একই আপত্তি তুলে সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরিও রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দকে চিঠি লিখেছেন। তাঁর অভিযোগ, আগাম প্রস্তুতি ছাড়াই ২১ দিনের লকডাউন চাপিয়ে দেওয়ায় অব্যবস্থা, বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়েছে। এখন করোনা ছড়িয়ে পড়ার জন্য যে ভাবে শুধু মুসলিম সম্প্রদায়কেই দায়ী করা হচ্ছে, তা নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন ইয়েচুরি।
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)