টেস্টের উপরে জোর দিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর। ছবি এএফপি।
গোটা দেশ এক হয়ে করোনাভাইরাসের সঙ্গে লড়াই করছে, কিন্তু কোনও রাজ্যে করোনা-পরীক্ষা করতে ২২০০ টাকা খরচ, তো কোনও রাজ্যে ৪৫০০ টাকা। কেন্দ্র এক সময়ে ৪৫০০ টাকা সর্বোচ্চ রেট নির্ধারণ করেছিল। কিন্তু তার পরে কিটের দাম অনেকটা কমলেও বহু রাজ্যে সেটাই দিতে হচ্ছে পরীক্ষা করাতে। সুপ্রিম কোর্ট আজ তা নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করে জানিয়েছে, এটা চলতে পারে না। গোটা দেশে করোনা-পরীক্ষার একটাই রেট হওয়া উচিত। তবে কী সেই রেট, বিচারপতি অশোক ভূষণ, বিচারপতি এস কে কউল এবং বিচারপতি এম আর শাহের বেঞ্চ তা নির্ধারণ করে দেয়নি। সব দিক বিবেচনা করে অভিন্ন রেট ঠিক করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে কেন্দ্রকেই।
করোনা-পরীক্ষার জন্য বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন রেট নেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠছে প্রথম থেকেই। বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতাল এই পরীক্ষার চড়া রেট হাঁকছিল বলে সরব হয়েছিলেন অনেকে। এর পরে কেন্দ্র নির্দেশ দেয়, ৪৫০০ টাকার বেশি রেট করোনা পরীক্ষায় নেওয়া যাবে না। কিন্তু এর পরে আন্তর্জাতিক বাজারে করোনা-কিটের দাম প্রায় অর্ধেক হয়ে যায়। এর পরে আইসিএমআর (ইন্ডিয়াল কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চ) এই সর্বোচ্চ দামের সিদ্ধান্ত ফিরিয়ে নিয়ে জানিয়ে দেয়, কোনও রাজ্য ইচ্ছা করলে করোনা-পরীক্ষার কম রেট বাঁধতে পারে। আইসিএমআর-এর চিঠি পেয়েই অনেক রাজ্য এই রেট কমিয়ে দেয়। উত্তরপ্রদেশ সরকার ২৫০০ টাকা, মহারাষ্ট্র, তেলঙ্গানা ও হরিয়ানা ২২০০ টাকা, দিল্লি ২৪০০ টাকা সর্বোচ্চ রেট ঠিক করে। কিন্তু কিটের দাম কমলেও পশ্চিমবঙ্গ-সহ অনেক রাজ্যে আগে বেঁধে দেওয়া ৪৫০০ টাকাই নেওয়া হচ্ছে। আইসিএমআর চিঠি দেওয়ার পরে পশ্চিমবঙ্গের কয়েকটি হাসপাতাল করোনা-পরীক্ষার রেট কমিয়ে কেউ ২৮০০ কেউ ২৪০০ টাকা করলেও অনেক হাসপাতাল ও ক্লিনিক এখনও ৪৫০০ টাকাই নিয়ে চলেছে।
সর্বোচ্চ আদালতের বিচারপতিরা কেন্দ্রকে রেট ঠিক করার নির্দেশ দিলেও সরকারের প্রতিনিধি সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা প্রথমে সেই দায়িত্ব নিতে চাননি। তাঁর যুক্তি ছিল, সব দিক বিবেচনা করে একটা সর্বোচ্চ রেট ঠিক করার নির্দেশ রাজ্যগুলিকেই দিক আদালত। মেহতা দাবি করেন, অনেক রাজ্য আরও কম রেট নির্ধারণের কথা ভাবছে বলে তিনি শুনেছেন। বিচারপতিরা তাঁকে স্পষ্ট জানিয়ে দেন, “কেন্দ্রীয় সরকারই একটা সর্বোচ্চ দর ঠিক করবে। তার পরে রাজ্যগুলি যা করার করুক। কিন্তু গোটা দেশে করোনা পরীক্ষার একটাই রেট হওয়া বাঞ্ছনীয়।”
দিল্লিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের গড়া বিশেষজ্ঞ কমিটি আজ তাদের রিপোর্টে বলেছে, রাজধানীর বেসরকারি কোভিড হাসপাতালগুলিতে আইসোলেশন শয্যার দৈনিক বিল ৮ থেকে ১০ হাজার টাকার মধ্যে রাখতে হবে। আইসিইউয়ের ক্ষেত্রে এই ঊর্ধ্বসীমা হল ১৩ থেকে ১৫ হাজার টাকা। ভেন্টিলেটরের ক্ষেত্রে ১৫ থেকে ১৮ হাজার টাকা। এত দিন এই খরচ পড়ছিল প্রায় আড়াই-তিন গুণ।