এখনই দেশীয় বিমান চলাচলের জন্য প্রস্তুত নয় রাজ্য, স্পষ্ট ইঙ্গিত দিয়েছেন মহারাষ্ট্রর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অনিল দেশমুখ। গ্রাফিক: তিয়াসা দাস।
দেশ জুড়ে উদ্বেগজনক করোনা-পরিস্থিতির মাঝেই যাত্রিবাহী বিমান চালুর কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তকে ‘অতি কুপরামর্শ’ আখ্যা দিল মহারাষ্ট্র সরকার। আগামিকাল, সোমবার থেকে গোটা দেশে অন্তর্দেশীয় বিমান চলাচল শুরুর কথা ঘোষণা করলেও তা নিয়ে চিন্তিত উদ্ধব ঠাকরে সরকার। অন্য রাজ্যের বাসিন্দারা এই মুহূর্তে মহারাষ্ট্রে এলে তা রাজ্যের করোনা-পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলতে পারে বলে মনে করেন রাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অনিল দেশমুখ। পাশাপাশি, মহারাষ্ট্র যে এখনই বিমান চলাচলের জন্য প্রস্তুত নয়, তা-ও স্পষ্ট ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি।
শনিবার গভীর রাতে একাধিক টুইটে মহারাষ্ট্রের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অনিল দেশমুখ বলেন, “রেড জোনে বিমানবন্দর ফের চালু করার পরামর্শ দেওয়াটাই অতি কুপরামর্শ।” তাঁর এই মন্তব্যের কারণও ব্যাখ্যা করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। বিমান চলাচলের আগে কেন্দ্রীয় নির্দেশিকায় যাত্রীদের থার্মাল স্ক্রিনিং করানো যথেষ্ট নয় বলে মনে করেন অনিল দেশমুখ। তাঁর কথায়, “লালারসের পরীক্ষা ছাড়া শুধুমাত্র থার্মাল স্ক্রিনিং যথেষ্ট নয়।” অনিল দেশমুখের মতে, এই সিদ্ধান্তের ফলে যাত্রীরা এলে “রেড জোনের কোভিড-পরিস্থিতিতে আরও চাপ বাড়বে।”
যে সমস্ত যাত্রী বিমানবন্দরে আসবেন, তাঁদের সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকিও বাড়বে বলেও মত স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর। তিনি বলেন, “গ্রিন জোন থেকে রেড জোনে এলে যাত্রীদের সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়বে। এটি কোনও কাজের কথা নয়।” পাশাপাশি, লকডাউন চলাকালীন পর্যাপ্ত গণ-পরিবহণ ব্যবস্থার অভাবে বিমানবন্দরে আসার ক্ষেত্রেও যাত্রীদের ভোগান্তি বাড়বে বলেও মনে করেন তিনি। লকডাউনের সময় পর্যাপ্ত কর্মীর উপস্থিতি নিয়ে বিমানবন্দর চালু রাখার বিষয়েও সন্দিহান রাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তাঁর কথায়, “কোভিড-সুরক্ষায় সমস্ত ব্যবস্থা নিয়ে বিমানবন্দর চালু রাখার জন্য বহু সংখ্যক কর্মীর প্রয়োজন। সেই সঙ্গে তাতে রেড জোনে (করোনার) ঝুঁকিও বেড়ে যায়।”
আরও পড়ুন: রেকর্ড গড়ে ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত ৬৭৬৭, দেশে সংক্রমিত ১ লক্ষ ৩২ হাজার
আরও পড়ুন: লাদাখে ভারতীয় জওয়ানদের আটকে রেখেছিল চিন? দাবি খারিজ সেনার
অন্তর্দেশীয় বিমান চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়ে মহারাষ্ট্রের মতো অন্যান্য রাজ্যও আপত্তি তুলতে শুরু করেছে। পরিবহণ ব্যবস্থা বন্ধ থাকায় যাত্রীদের দুর্দশা বাড়বে বলে জানিয়েছে তামিলনাড়ু। আমপান-বিধ্বস্ত কলকাতায় দেশীয় উড়ান পিছনোর আর্জি জানিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কর্নাটক ভিন্ রাজ্যের যাত্রীদের বাধ্যতামূলক ভাবে কোয়রান্টিনে রাখার কথা বলেছে। তবে ওই সব রাজ্যের তুলনায় মহারাষ্ট্রের কোভিড-পরিস্থিতি আরও সঙ্গীন। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের হিসাব অনুযায়ী, সে রাজ্যে করোনা-আক্রান্তের সংখ্যা ৪৭ হাজার ১৯০। ফলে এই অবস্থায় ভিন্ রাজ্য থেকে যাত্রীরা এলে তা মহারাষ্ট্রের করোনা-পরিস্থিতিতে আরও চাপ বাড়াবে বলে মত উদ্ধব ঠাকরে সরকারের।