করোনা পরিস্থিতি নিয়ে মোদীকে তোপ শিবসেনার। —ফাইল চিত্র।
দেশের সর্বত্র কোভিড সঙ্কট ভয়াবহ আকার ধারণ করায় ফের নরেন্দ্র মোদী সরকারকেই কাঠগড়ায় তুলল শিবসেনা। অক্সিজেন সরবরাহ এবং ওষুধে ঘাটতি নিয়ে যখন ভূরি ভূরি অভিযোগ সামনে আসছে, সেই সময় ২০ হাজার কোটি টাকার সংসদ ভবন নির্মাণের কাজ কোন যুক্তিতে চালিয়ে যাচ্ছে কেন্দ্র, প্রশ্ন তুলেছে তারা। শুধু তাই নয়, জওহরলাল নেহরু, ইন্দিরা গাঁধী এবং মনমোহন সিংহের মতো নেতা যে উন্নয়নমূলক কাজ করে গিয়েছিলেন, এই দুঃসময়ে তার উপরই দেশ টিকে রয়েছে বলেও মত শিবসেনার।
অক্সিজেন এবং ওষুধের জোগান নিয়ে দীর্ঘ সময় কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে সঙ্ঘাত চলেছে মহারাষ্ট্রের উদ্ধব ঠাকরে সরকারের। সেই আবহেই দলের মুখপত্র ‘সামনা’র একটি প্রতিবেদনে মোদী সরকারেক তুলোধনা করেছে শিবসেনা। লেখা হয়েছে, ‘ভারতে যে হারে সংক্রমণ বেড়ে চলেছে, তা গোটা দুনিয়ার পক্ষে বিপজ্জনক বলে মন্তব্য করেছে ইউনিসেফ। অন্য দেশগুলিকে ভারতের সাহায্যে এগিয়ে আসতে বলেছে। বাংলাদেশ আমাদের রেমডেসিভিরের ১০ হাজার শিশি পাঠিয়েছে। ভুটান অক্সিজেন পাঠিয়েছে। নেপাল, মায়ানমার, শ্রীলঙ্কাও ‘আত্মনির্ভর’ ভারতকে সাহায্যের প্রস্তাব দিয়েছে’।
করোনা পরিস্থিতি সামাল দিতে মোদী সরকার কিছু করেনি, বরং পূর্বসূরিদের উন্নয়নমূলক কাজের উপরই এই সঙ্কটের দিনে দেশ টিকে রয়েছে বলে দাবি শিবসেনার। তাদের বক্তব্য, ‘পণ্ডিত নেহরু, লালবাহাদুর শাস্ত্রী, ইন্দিরা গাঁধী, রাজীব গাঁধী, পিভি নরসিংহ রাও এবং মনমোহন সিংহরা যে উন্নয়নমূলক কাজ করে গিয়েছিলেন, তার উপরই এই দুঃসময়েও টিকে রয়েছে দেশ। আগে পাকিস্তান, রোয়ান্ডা, কঙ্গোর মতো দেশ অন্যদের থেকে সাহায্য নিত। মোদী সরকারের ভুল নীতির জন্য আজ ভারতকে হাত পাততে হচ্ছে’।
এত কিছুর মধ্যেও ২০ হাজার কোটি টাকা ব্যয় করে কেন্দ্রীয় সরকার নয়া সংসদভবন নির্মাণ ও সংসদভবন চত্বর উন্নয়ন প্রকল্প চালিয়ে যাচ্ছে কোন যুক্তিতে, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলে শিবসেনা। তাদের মতে, অবাক ব্যাপার যে বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা এবং ভুটানের মতো দেশের কাছ থেকে সাহায্য নিতে এক বারও বিবেকে বাধছে না কারও। এর মধ্যে মহা সমারোহে নিজের জন্য নয়া বাসভবন নির্মাণের কাজ বন্ধ রাখার কথাও মাথায় আসছে না প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর।
করোনা পরিস্থিতিত সামাল দেওয়ার চেয়ে একচেটিয়া রাজনৈতিক ক্ষমতা কুক্ষিগত করাই বিজেপি এবং মোদী সরকারের একমাত্র লক্ষ্য বলেও কটাক্ষ করেছে সেনা। তাদের দাবি, কোভিড সামাল দেওয়ার চেয়ে বাংলায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কোণঠাসা করাই মূল লক্ষ্য হয়ে দাঁড়িয়েছিল কেন্দ্রের। দেশকে এই সঙ্কট থেকে বার করে আনতে অরাজনৈতিক জাতীয়তাবাদকে সামনে রেখে অনেক পরিশ্রম করতে হবে প্রধানমন্ত্রীকে।
তবে শুধু বিরোধী শিবসেনাই নয়, করোনা সামাল দেওয়ায় সরকারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে বিজেপি-র অন্দরে। দলের সাংসদ সুব্রহ্মণ্যম স্বামী সরাসরি কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রককে কাঠগড়ায় তুলেছেন। হর্ষ বর্ধনকে সরিয়ে নিতিন গডকড়ীর হাতে দায়িত্ব তুলে দেওয়ার দাবি তুলেছেন তিনি।