প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ছবি: পিটিআই।
বিরোধীরা কোভিড ভাইরাসের নতুন স্ট্রেনকে ‘ভারতীয় স্ট্রেন’ বলায় নরেন্দ্র মোদী সরকার তথা বিজেপি ঘোর আপত্তি তুলেছিল। এ বার দেখা গেল, মোদী সরকার নিজেই সুপ্রিম কোর্টে হলফনামায় একে ‘ইন্ডিয়ান ডাবল মিউট্যান্ট স্ট্রেন’ বলে তকমা দিয়েছে।
মোদী সরকারের অভিযোগ ছিল, বিরোধীরা ভাইরাসের স্ট্রেনের সঙ্গে দেশের নাম জুড়ে গোটা বিশ্বে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তথা ভারতের ভাবমূর্তি নষ্ট করতে চাইছে। এ জন্য কংগ্রেস অপপ্রচারের কৌশল হিসেবে ‘টুলকিট’-ও তৈরি করেছে বলেও বিজেপি নেতারা অভিযোগ তুলেছিলেন। শনিবারও বিজেপি অভিযোগ তুলেছে, কংগ্রেস ভাইরাসের স্ট্রেনকে ‘ইন্ডিয়ান স্ট্রেন’ বলায় পাকিস্তানের হাত শক্ত হয়েছে। পাকিস্তানও সে দেশে মেলা নতুন স্ট্রেনকে ভারতীয় স্ট্রেন বলে প্রচার করছে।
সরকারি নথি অবশ্য বলছে, গত ৯ মে কোভিড মোকাবিলা নিয়ে মামলায় কেন্দ্র যে হলফনামা পেশ করেছে, সেখানে মোদী সরকারই ভাইরাসের নতুন স্ট্রেনকে ‘ইন্ডিয়ান ডাবল মিউট্যান্ট স্ট্রেন’ বলে উল্লেখ করেছে। আইসিএমআর ও পুণের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ভায়রোলজি কোভ্যাক্সিন তৈরিতে কী কী পদক্ষেপ করেছে, সে প্রসঙ্গে নতুন ভাইরাসের স্ট্রেনকে ভারতীয় বলা হয়েছে। অথচ তার তিন দিন পরেই কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক বিবৃতি জারি করে নতুন স্ট্রেনকে ভারতীয় স্ট্রেন নাম দেওয়ার কড়া নিন্দা করেছিল। যুক্তি ছিল, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বা হু-ও এই স্ট্রেনের সঙ্গে ভারতের নাম জড়ায়নি। এর পর হু-ও স্পষ্ট জানিয়ে দেয়, তারা কোনও স্ট্রেনের সঙ্গেই কোনও দেশের নাম জড়ায়নি। মজার কথা হল, কেন্দ্রীয় সরকার হলফনামায় শুধু ডাবল মিউট্যান্ট স্ট্রেনের সঙ্গে ভারতের নাম যোগ করেছে না নয়, অন্যান্য স্ট্রেনের সঙ্গেও ব্রিটেন, ব্রাজিলের মতো দেশের নাম যোগ করেছে।
গত সপ্তাহেই মধ্যপ্রদেশে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ও বিরোধী দলনেতা কমল নাথের বিরুদ্ধে পুলিশ এফআইআর দায়ের করেছে। তাঁর বিরুদ্ধে বিজেপি শাসিত মধ্যপ্রদেশের পুলিশের অভিযোগ, তিনি ভাইরাসের স্ট্রেনকে ভারতীয় বলে আতঙ্ক তৈরি করছেন। বিজেপির অভিযোগ, কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধীর কথাতেই কমল এই কাজ করেছেন। কমলের যুক্তি ছিল, তিনি কোভিড মোকাবিলা নিয়ে সরকারের দিকে আঙুল তুলেছেন বলেই তাঁকে দেশদ্রোহী সাজানো হচ্ছে। আজ কংগ্রেসের প্রশ্ন, এ বার কি মোদী সরকার নিজেই নিজেকে দেশদ্রোহী বলবে!