Coronavirus in India

Covid 19 in India: গ্রামে করোনা সংক্রমণ রুখতে আজ বৈঠক

দেশের বিভিন্ন রাজ্যে লকডাউন ঘোষণার ফলে পরিযায়ী শ্রমিকেরাও এখন নিজেদের রাজ্যে ফিরে যেতে শুরু করেছেন

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৮ মে ২০২১ ০৬:৩৯
Share:

ফাইল চিত্র।

শহুরে এলাকায় সংক্রমণের হার কমে এলেও গ্রামীণ ভারত এখন মূল চিন্তা নরেন্দ্র মোদী সরকারের কাছে। বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, শহরে সংক্রমণ কমলেও আগামী এক থেকে দেড় মাসে গ্রামীণ এলাকায় দ্রুত গতিতে ছড়িয়ে পড়তে চলেছে সংক্রমণ। সংক্রমণ রোখা তথা গ্রামীণ ভারতের স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর আধুনিকীকরণ নিয়ে আলোচনা করতে দু’দফার বৈঠকের প্রথম দফায় আগামিকাল ১০ রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের প্রতিনিধির সঙ্গে বৈঠকে বসতে চলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। পশ্চিমবঙ্গের প্রতিনিধির সঙ্গে মোদীর ওই বৈঠক হবে ২০ মে।

Advertisement

দ্বিতীয় ধাক্কার ঢেউ শহর ছাপিয়ে গ্রামীণ ভারতে ইতিমধ্যেই ছড়িয়ে পড়তে শুরু করেছে। দেশের বিভিন্ন রাজ্যে লকডাউন ঘোষণার ফলে পরিযায়ী শ্রমিকেরাও এখন নিজেদের রাজ্যে ফিরে যেতে শুরু করেছেন। ফলে তাঁদের মাধ্যমে সংক্রমণ আরও দ্রুত গ্রামে ছড়ানোর আশঙ্কা করছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। পরিস্থিতি সামলাতে এখন সরকারের মূল লক্ষ্য হল আধা শহর, ব্লক, জেলা ও আদিবাসী এলাকায় সংক্রমণকে আটকানো। কারণ গোড়াতেই গ্রামীণ এলাকায় সংক্রমণ রুখতে না পারলে, গ্রামাঞ্চলে দুর্বল স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর ফলে দেশের করোনা পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করার আশঙ্কা রয়েছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রকের এক কর্তা জানিয়েছেন, গত কাল এ নিয়ে শীর্ষ পর্যায়ের বৈঠক হয়েছিল। সব রাজ্যকে গ্রামীণ এলাকায় আরও বেশি করে নিভৃতবাসের সংখ্যা বাড়ানো, কন্টেনমেন্ট জ়োন চিহ্নিত করা, যে এলাকায় সংক্রমণ বেশি সেখানে পরীক্ষার সংখ্যা বাড়ানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিশেষ ভাবে জোর দেওয়া হয়েছে জনজাতি অধ্যুষিত এলাকায় নজরদারি ও সংক্রমিতদের চিহ্নিতকরণের উপরে।

আজ দেশের চিকিৎসকদের সঙ্গে একটি বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীও গ্রামীণ এলাকায় নজরদারি বাড়ানোর উপরে জোর দিয়েছেন। চিকিৎসকদের সঙ্গে ওই বৈঠকে বিশেষ ভাবে জোর দেওয়া হয়েছে গ্রামীণ এলাকায় স্বাস্থ্য পরিষেবা পৌঁছে দেওয়ার উপরে। শহরের মতো গ্রামেও যাতে অক্সিজেনের অভাবে মৃত্যু না হয় সে জন্য প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো এখন থেকেই গড়ে তোলার উপরে জোর দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এ ছাড়া আরও বেশি করে ডাক্তারির পড়ুয়াদের কোভিড চিকিৎসায় এগিয়ে আসা, গ্রামীণ ভারতে পরীক্ষা বাড়ানোর জন্য আশা ও অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ ও কিট দিয়ে সাহায্য করার উপরে জোর দেওয়া হয়েছে। প্রতিটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ফি দিন অক্সিজেন অডিট ও যে সংক্রমিতেরা বাড়িতে নিভৃতবাসে রয়েছেন তাঁদের প্রোটোকল মেনে চিকিৎসার উপরে জোর দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। বিশেষ করে গ্রামীণ এলাকায় যেখানে স্বাস্থ্য পরিকাঠামো দুর্বল, সেখানে যাতে অন্তত বাসিন্দারা টেলিমেডিসিন পরিষেবা পান তা নিশ্চিত করার উপরে জোর দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। গ্রামীণ ভারতের কথা মাথায় রেখে নির্দিষ্ট এক দল চিকিৎসককে কেবল টেলিমেডিসিন পরিষেবা দেওয়ার কাজে নিয়োগের উপরে জোর দিয়েছে কেন্দ্র। এই কাজে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সঙ্গেই ডাক্তারির শেষ বর্ষের পড়ুয়া ও ইন্টার্নদের নিয়ে দল গড়ে দেশের প্রতিটি তহশিল ও জেলা পর্যায়ে গ্রামের বাসিন্দারা সাহায্য করার উপরে জোর দেন প্রধানমন্ত্রী। একই সঙ্গে করোনা সংক্রমিত রোগীদের পরে যাতে ছত্রাকজাতীয় সংক্রমণ না-হয় সে দিকেও বিশেষ ভাবে নজর দিতে অনুরোধ করেছেন প্রধানমন্ত্রী।

Advertisement

আজ চিকিৎসকদের সঙ্গে বৈঠকের পরে কাল বিভিন্ন রাজ্য ও জেলার তৃণমূল স্তরের কর্মীদের সঙ্গে বৈঠকে বসতে চলেছেন প্রধানমন্ত্রী। কাল সকাল ১১টায় ওই বৈঠক শুরু হবে। যাতে অংশ নেবেন কর্নাটক, বিহার, অসম, তামিলনাড়ু, দিল্লির মতো ১০টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের প্রতিনিধি। সেখানে বিভিন্ন রাজ্যের প্রতিনিধি বাস্তব অভিজ্ঞতা অন্য রাজ্যের প্রতিনিধিদের সামনে তুলে ধরবেন। বিশেষ করে আধা শহর ও গ্রামীণ এলাকায় কোন পথে কন্টেনমেন্ট জ়োন বানিয়ে সংক্রমণ রোখা সম্ভব, কী ভাবে দ্বিতীয় ধাক্কাকে গোড়াতেই রুখে দেওয়া যেতে পারে তা নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement