গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে ৬২ হাজার ৬৪ জন নতুন করে কোভিডে আক্রান্ত হয়েছেন। গ্রাফিক-শৌভিক দেবনাথ।
পর পর চার দিন দেশে দৈনিক করোনা সংক্রমণ ৬০ হাজারের গণ্ডি পার করল। গত ২৪ ঘণ্টায় ১ হাজারের বেশি মানুষের প্রাণ কেড়েছে কোভিড-১৯।
উদ্বেগ বেড়েছে সংক্রমণের হারেও। গত সপ্তাহে সংক্রমণের হার ৮-১০ শতাংশে আটকে থাকলেও, আজ তা এক ধাক্কায় ১৩ শতাংশে পৌঁছেছে। এই উদ্বেগজনক পরিস্থিতিতে সামান্য স্বস্তি বলতে সুস্থ হয়ে ওঠার সংখ্যা। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের হিসেবে, গত ২৪ ঘণ্টায় ৫৪ হাজার ৮৫৯ জন সুস্থ হয়েছেন।
দেশ জুড়ে করোনার ছায়া যখন দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হচ্ছে, তখন ভারত বায়োটেক ইন্টারন্যাশনালের চেয়ারম্যান তথা ম্যানেজিং ডিরেক্টর কৃষ্ণ এলা সম্প্রতি জানিয়েছেন, দেশীয় করোনার টিকা কোভ্যাক্সিন তৈরি নিয়ে তাঁরা তাড়াহুড়ো করতে চান না। অর্থাৎ প্রতীক্ষার প্রহর দীর্ঘতর হওয়ার ইঙ্গিত।
আজ বৈঠকে
রাজ্য করোনা আক্রান্ত
মহারাষ্ট্র ৫,১৫,৩৩২
তামিলনাড়ু ২,৯৬,৯০১
অন্ধ্রপ্রদেশ ২,২৭,৮৬০
কর্নাটক ১,৭৮,০৮৭
উত্তরপ্রদেশ ১,২২,৬০৯
পশ্চিমবঙ্গ ৯৫,৫৫৪
তেলঙ্গানা ৮০,৭৫১
বিহার ৭৯,৪৫১
গুজরাত ৭০,৯৬৫
পঞ্জাব ২৩,৯০৩
সূত্র: স্বাস্থ্য মন্ত্রক। আক্রান্তের তালিকায় পঞ্চমে থাকলেও দিল্লিতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বলে কেন্দ্রের দাবি। তাই আজ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ১০ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠকে থাকছে না দিল্লি। তালিকায় ১৮তম স্থানে থাকলেও নয়া সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার বেশি হওয়ায় পঞ্জাবকে বৈঠকে ডাকা হয়েছে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রকের পরিসংখ্যান বলছে, ২৪ ঘণ্টায় ৬২ হাজার ৬৪ জন নতুন করে করোনা সংক্রমিত হয়েছেন। ওই সময়ের মধ্যে ব্রাজিলে ২৩ হাজার ১০ জন এবং আমেরিকায় ৪৭ হাজার ১১৬ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। অর্থাৎ দৈনিক আক্রান্ত বৃদ্ধির নিরিখে আজও আবার বিশ্বে এক নম্বরে ভারত। দেশে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ২২ লক্ষ ১৫ হাজার ৭৪ জন। যদিও আজ রাত সাড়ে ১০টার পরে আন্তর্জাতিক সমীক্ষার তথ্য বলছে, ভারতে আক্রান্ত ২২ লক্ষ ৫৭ হাজারের বেশি। দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা গত কালের তুলনায় সামান্য কমেছে ঠিকই। কিন্তু গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা পরীক্ষা হয়েছে ৪ লক্ষ ৭৭ হাজার ২৩ জনের। যা কিনা গত ছ’দিনের তুলনায় সব চেয়ে কম। তবে দেশে মোট আক্রান্তের ৬৯ শতাংশ সুস্থ হয়ে উঠেছেন।
আরও পড়ুন: প্রণবের অস্ত্রোপচার, ধরা পড়ল করোনাও
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
এমসে গত ২৪ জুলাই মানবদেহে করোনা প্রতিষেধকের পরীক্ষামূলক প্রয়োগ শুরু হয়েছিল। ইতিমধ্যে প্রথম পর্যায়ের ‘হিউম্যান ট্রায়াল’ শেষ হয়েছে। সম্প্রতি এক আলোচনায় কৃষ্ণ এলা বলেছেন, ‘‘কোভিড-১৯-এর প্রতিষেধক তৈরির ব্যাপারে আমরা চাপে রয়েছি। কিন্তু আমাদের অগ্রাধিকার হল সুরক্ষা এবং গুণমান। ভুল প্রতিষেধক দিয়ে তো আরও বেশি মানুষ মেরে ফেলতে পারি না।’’
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
করোনা প্রতিষেধক বাজারে আসতে কত দিন সময় লাগবে জানাতে চাওয়া হলে কৃষ্ণ বলেন, ‘‘আন্তর্জাতিক মান অনুসরণ করে গবেষণা চলছে। এটা স্বল্পমেয়াদি গবেষণা নয়, সেরা মানের প্রতিষেধক তৈরিই আমাদের লক্ষ্য।’’ ভারত বায়োটেকের চেয়ারম্যানের দাবি, প্রতিষেধক আবিষ্কারের গবেষণায় আমেরিকা, ইউরোপের চেয়ে ভারত কোনও অংশে পিছিয়ে নেই।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
সম্প্রতি অভিযোগ উঠেছিল, ১৫ অগস্টের মধ্যে করোনার প্রতিষেধক বাজারে আনতে ভারত বায়োটেককে চাপ দিয়েছিল কেন্দ্র। করোনা রিপোর্ট নেগেটিভ হওয়ায় আজ এক সপ্তাহ পরে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী বিএস ইয়েদুরাপ্পা। বৃহন্মুম্বই মিউনিসিপাল কর্পোরেশন আজ থেকে মুম্বইয়ে দ্বিতীয় পর্যায়ের সেরো-সমীক্ষা শুরু করছে।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
(চলন্ত গড় বা মুভিং অ্যাভারেজ কী: একটি নির্দিষ্ট দিনে পাঁচ দিনের চলন্ত গড় হল— সেই দিনের সংখ্যা, তার আগের দু’দিনের সংখ্যা এবং তার পরের দু’দিনের সংখ্যার গড়। উদাহরণ হিসেবে— দৈনিক নতুন করোনা সংক্রমণের লেখচিত্রে ১৮ মে-র তথ্য দেখা যেতে পারে। সে দিনের মুভিং অ্যাভারেজ ছিল ৪৯৫৬। কিন্তু সে দিন নতুন আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা ছিল ৫২৬৯। তার আগের দু’দিন ছিল ৩৯৭০ এবং ৪৯৮৭। পরের দুদিনের সংখ্যা ছিল ৪৯৪৩ এবং ৫৬১১। ১৬ থেকে ২০ মে, এই পাঁচ দিনের গড় হল ৪৯৫৬, যা ১৮ মে-র চলন্ত গড়। ঠিক একই ভাবে ১৯ মে-র চলন্ত গড় হল ১৭ থেকে ২১ মে-র আক্রান্তের সংখ্যার গড়। পরিসংখ্যানবিদ্যায় দীর্ঘমেয়াদি গতিপথ সহজ ভাবে বোঝার জন্য এবং স্বল্পমেয়াদি বড় বিচ্যুতি এড়াতে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়)