করোনা মোকাবিলায় দেশবাসীকে আরও সচেতন হওয়ার বার্তা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল চিত্র।
করোনা-আবহে আসন্ন উৎসবের মরসুমে দেশবাসীকে সতর্ক থাকার বার্তা দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। রবিবার তাঁর রেডিয়ো অনুষ্ঠান ‘মন কি বাত’-এ মাস্ক ব্যবহারের পাশাপাশি শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখার গুরুত্বের কথাও মনে করিয়ে দিলেন তিনি। দেশবাসীর মধ্যে ইতিমধ্যেই এ বিষয়ে সচেতনার মনোভাব গড়ে উঠেছে, তা-ও উল্লেখ করেছেন প্রধানমন্ত্রী।
আগামী ১ সেপ্টেম্বর থেকে গোটা দেশ জুড়েই শুরু হচ্ছে চতুর্থ পর্বের আনলক প্রক্রিয়া। তার আগে এ দিন ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানের বিষয় কী হতে পারে, তা নিয়ে জানানোর জন্য দেশবাসীর কাছে অনুরোধ করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। তবে এ দিনের অনুষ্ঠানে বিভিন্ন বিষয়ে নিজের মনের কথা বলার পাশাপাশি করোনা মোকাবিলায় দেশবাসীকে আরও সচেতন হওয়ার বার্তা দিয়েছেন তিনি। দেশে প্রায় প্রতি দিনই ৭০ হাজারের বেশি সংক্রমণ ঘটছে। এই আবহে বেশ ঝুঁকি নিয়েই আগামী ৭ সেপ্টেম্বর থেকে মেট্রো পরিষেবা চালুর কথা ঘোষণা করেছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। সেই সঙ্গে সামনেই শুরু হচ্ছে উৎসবে মরসুম। ফলে দেশে করোনার পরিসংখ্যান আরও বৃদ্ধি হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন অনেকেই। এই পরিস্থিতিতে সতর্কতা মেনে চলার উপর গুরুত্ব দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। মাস্ক পরা ও দূরত্ব বজার রাখা যে জরুরি, তা উল্লেখ করে মোদীর নয়া স্লোগান— ‘দো গজ কি দূরি, মাস্ক জরুরি’। এ দিন অনুষ্ঠানের গোড়াতেই তিনি বলেন, “সাধারণত, এই দিনগুলো বিভিন্ন উৎসবের হয়ে থাকে। তবে করোনাভাইরাস সব বদলে দিয়েছে।" পাশাপাশি তাঁর মন্তব্য, “মানুষ এখন আরও বেশি সতর্ক এবং শৃঙ্খলা মেনে চলছেন, যা অনুপ্রেরণীয়।”
আগামী আনলক পর্বের মধ্যেই পালিত হবে শিক্ষক দিবস। তবে করোনার আবহে স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকায় যে ভাবে অনলাইন ক্লাসের মতো নতুন ব্যবস্থার সঙ্গে শিক্ষকেরা নিজেদের মানিয়ে নিয়েছেন, সে কথাও এ দিনের ‘মন কি বাত’-এ উল্লেখ করেছেন নরেন্দ্র মোদী। তিনি বলেন, “আমাদের শিক্ষকেরা বহু চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করেছেন। কিন্তু তা সত্ত্বেও তাঁরা অত্যন্ত সাহসিকতা দেখিয়ে প্রযুক্তিগত পরিবর্তনের সঙ্গে নিজেদের মানিয়ে নিয়েছেন।”
আরও পড়ুন: তিব্বতকে ‘দুর্ভেদ্য দুর্গ’ বানাতে মগজধোলাইয়ের বার্তা চিনফিংয়ের
আরও পড়ুন: দুর্যোগ মোকাবিলা আইন প্রয়োগ করে পরীক্ষা আটকে দেওয়ার জন্য চিঠি মুখ্যমন্ত্রীদের
লকডাউনের সময় দেশের অর্থনীতি সচল রাখতে ইতিমধ্যেই দেশে বিভিন্ন কর্মকাণ্ড শুরু হয়েছে। সেই কর্মকাণ্ডের অঙ্গ হিসাবেই ‘আত্মনির্ভর ভারত’ গড়ার আহ্বান জানিয়েছেন মোদী। এ বার খেলনা তৈরির ক্ষেত্রে ভারত যে বিশ্বের অগ্রণী ভূমিকা নিতে পারে, তা-ও মনে করে মোদী সরকার। এ দিনের অনুষ্ঠানে মোদী জানিয়েছেন, বিশ্বের ৭ লক্ষ কোটি টাকারও বেশি খেলনা শিল্পে ভারত অত্যন্ত ক্ষুদ্র অংশ দখল করে রয়েছে। এ ছবি বদলের জন্য আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। তাঁর কথায়, “ভারত উদ্ভাবকদের দেশ। বিশ্বের খেলনা হাব হওয়ার মতো প্রতিভা ও ক্ষমতা রয়েছে ভারতের।” ‘আত্মনির্ভর ভারত’ গড়তে এ নিয়ে দেশের স্টার্ট-আপ উদ্যোগপতিদের সংঘবদ্ধ হওয়ারও আহ্বান জানিয়েছেন মোদী। সেই সঙ্গে কম্পিউটার গেমসও যাতে ভারত-কেন্দ্রিক হয়, সে গুরুত্ব দিয়েছেন তিনি। বেশির ভাগ কম্পিউটার গেমসে পাশ্চাত্যের প্রভাব রয়েছে বলে মন্তব্য করেন মোদী। এ ধরনের গেমসে ভারতীয় ছোঁয়া থাকা উচিত বলেও মনে করেন তিনি। এ ক্ষেত্রেও ভারত আত্মনির্ভর হতে পারে বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রী।