ফাইল চিত্র।
অক্সিজেনের পরে এ বার কোভিড রোগীদের চিকিৎসায় রেমডেসিভিয়ারের ইঞ্জেকশনের আকাল নিয়ে মোদী সরকার দিল্লি হাই কোর্টের তোপের মুখে পড়ল।
কেন্দ্রকে নিশানা করে আজ দিল্লি হাই কোর্টের বিচারপতি প্রতিভা এম সিংহ মন্তব্য করেছেন, “দেখে মনে হচ্ছে, আপনারা চান, মানুষ মরে যাক।”
দিল্লি-সহ দেশের বহু শহরে রেমডেসিভিয়ার ইঞ্জেকশনের অভাব দেখা দেওয়ায় গত ২৩ এপ্রিল কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক রেমডেসিভিয়ার ইঞ্জেকশন ব্যবহারের বিধিতে রদবদল করেছে। এখন শুধুমাত্র মাঝারি থেকে চরম সঙ্কটজনক রোগীদের জন্যই এই ইঞ্জেকশন ব্যবহার করা যাবে। যে সব কোভিড রোগী বাড়িতেই রয়েছেন, যাঁদের অক্সিজেনের দরকার পড়ছে না, তাঁদের রেমডেসিভিয়ার ইঞ্জেকশন না-দিতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। সমস্যার পড়ে দিল্লির এক আইনজীবী আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। তাঁর অভিযোগ ছিল, কেন্দ্রের এই নতুন বিধিনিষেধের ফলে তাঁর ছ’টি ইঞ্জেকশন দরকার হলেও তিনি মাত্র তিনটি পেয়েছেন।
আজ বিচারপতি সিংহ বলেন, “কেন্দ্রের এই বিধিনিষেধ ভুল। কোনও রকম ভাবনাচিন্তা না-করেই এই নির্দেশিকা জারি হয়েছে। বোঝাই যাচ্ছে, কেন্দ্র ইঞ্জেকশনের ঘাটতি মেটাতে এই নির্দেশ জারি করেছে।” বিচারপতি একে ‘চরম অব্যবস্থা’ বলেও আখ্যা দেন। তাঁর অভিযোগ, কেন্দ্র ঠিক মতো রেমডেসিভিয়ার বিলি করছে না রাজ্যগুলিকে। এই কারণেই অক্সিজেন থেকে ইঞ্জেকশন সমস্ত কিছুর কালোবাজারি চলছে। হাই কোর্টের নির্দেশে ওই আইনজীবীর জন্য মঙ্গলবার রাতেও তিনটি ইঞ্জেকশনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। কেন্দ্র জানিয়েছে, শুধুমাত্র দিল্লিতেই ৫০ হাজারের বেশি ইঞ্জেকশন জোগান দেওয়া হয়েছে। কিন্তু দিল্লি সরকারের অভিযোগ, মাত্র ২৫০০ রেমডেসিভিয়ার মিলেছে।
এত দিন বিরোধীরা অভিযোগ তুলছিলেন, মোদী সরকার কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউয়ের জন্য প্রস্তুতি না নিয়ে লক্ষ লক্ষ প্রতিষেধক, ইঞ্জেকশন বিদেশে রফতানি করেছে। আজ দিল্লি হাই কোর্টও সে দিকে আঙুল তুলে বলেছে, “ওষুধের অভাবে দেশের নাগরিকরাই যন্ত্রণা ভোগ করছেন।” হাই কোর্ট আজ সকলের কাছেই আর্জি জানিয়েছে, দেশ এখন অভূতপূর্ব পরিস্থিতির মুখে পড়েছে। তাই অক্সিজেনের সিলিন্ডার বা প্রতিষেধকের কোনও রকম কালোবাজারি হওয়া উচিত নয়।