বায়োটেকের দাবি, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ভাইরোলজির বিজ্ঞানীরা পরীক্ষা করে দেখেছেন এই ব্রিটেন স্ট্রেনের বিরুদ্ধেও কার্যকর কোভ্যাক্সিন। ছবি: সংগৃহীত।
তাদের তৈরি প্রতিষেধক কোভ্যাক্সিন-কে ঘিরে একাধিক বিতর্কের মাঝেই বুধবার ‘সুখবর’ শোনাল ভারত বায়োটেক। তাদের দাবি, বিশ্ব জুড়ে নতুন করে আতঙ্ক ছড়ানো সার্স-কোভ-২-এর নয়া স্ট্রেন, ব্রিটেন স্ট্রেনের বিরুদ্ধে কার্যকর প্রমাণিত হয়েছে কোভ্যাক্সিন।
প্রাথমিক ভাবে চিনের উহানে পাওয়া করোনা স্ট্রেনটির কথা মাথায় রেখেই বেশির ভাগ করোনা প্রতিষেধক তৈরি হয়েছে বলে জানান বিশেষজ্ঞরা। তবে মিউটেশনের কারণে আরও কিছু স্ট্রেনের উৎপত্তি হয়। যার অন্যতম এই ব্রিটেন স্ট্রেন। এই স্ট্রেনটি আগেরটির চেয়ে প্রায় ৭০% বেশি সংক্রামক তো বটেই, তার মারণ ক্ষমতাও অনেক বেশি।
বায়োটেকের দাবি, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ভাইরোলজির বিজ্ঞানীরা পরীক্ষা করে দেখেছেন এই ব্রিটেন স্ট্রেনের বিরুদ্ধেও কার্যকর কোভ্যাক্সিন। এক টুইটের মাধ্যমে এ দিন খবরটি জানায় সংস্থাটি। যেখানে লেখা হয়, কোভ্যাক্সিন কার্যকর ভাবে ব্রিটেন স্ট্রেনটিকে প্রতিরোধ করতে সক্ষম। যদিও এখনও পর্যন্ত গবেষণাটির ‘পিয়ার রিভিউ’ হয়নি অর্থাৎ সেটি অন্য কোনও বিশেষজ্ঞের (সংস্থা বা ব্যক্তি) তরফে পর্যালোচনা করে দেখা হয়নি। উল্লেখ্য, এখনও পর্যন্ত তৃতীয় দফার ট্রায়াল শেষ হয়নি এই ভ্যাকসিনটির। তবে দেশে জরুরি ভিত্তিতে তা প্রয়োগের অনুমতি দিয়েছে কেন্দ্র। ফলে বর্তমানে এই প্রতিষেধক যাঁদের দেওয়া হচ্ছে, তাঁদের উপর নিরীক্ষণ চালানো হচ্ছে বলে স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকেরা।
এখনও পর্যন্ত ভারতে ব্রিটেন স্ট্রেনে আক্রান্তের সংখ্যা ১৫০। আগামী দিনে ব্রিটেন স্ট্রেনে আক্রান্তের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলেই আশঙ্কা। কাজেই এই স্ট্রেনের মোকাবিলায় কোভ্যাক্সিনের কার্যকর প্রমাণ হওয়ার বিষয়টি নিঃসন্দেহে বড় খবর।
ইতিমধ্যেই ব্রিটেন স্ট্রেনের মোকাবিলায় সাফল্য দাবি করেছে জার্মান ভ্যাকসিন প্রস্তুতকারক সংস্থা বায়োএনটেক-এর ফর্মুলায় তৈরি ফাইজ়ারের করোনা প্রতিষেধকটিও। গত সপ্তাহেই এক অনলাইন পত্রিকায় এই সংক্রান্ত একটি গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়।
অন্য দিকে ভারতের ড্রাগস কন্ট্রোলার জেনারেল-এর কাছে কোভিশিল্ড-এর তৃতীয় দফার ট্রায়ালের ‘আনব্লাইন্ড’ তথ্য প্রকাশ করার আর্জি জানিয়েছে প্রস্তুতকারক সংস্থা, পুণের সিরাম ইনস্টিটিউট। যার ফলে তৃতীয় ট্রায়ালে প্রতিষেধক নেওয়া ব্যক্তিরা জানতে পারবেন, তাঁরা ভ্যাকসিনটিই পেয়েছেন না কি জল। কারণ, নিয়ম অনুযায়ী কিছু মানুষকে ভ্যাকসিনটি দেওয়া হয় বাকিদের জল। তবে কাকে কী দেওয়া হল, তা জানানো হয় না তাঁদের।
বুধবারই কোভিড সংক্রান্ত এক নয়া আচরণবিধি ঘোষণা করেছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। যা ১ থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত তা কার্যকর থাকবে। এই ঘোষণায় বলা হয়েছে যে, সিনেমা হল, থিয়েটারে আরও বেশি লোক আসার অনুমতি দেওয়া হবে। সকলের জন্য সুইমিং পুলও খোলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আন্তঃরাজ্য বা রাজ্যের বাইরে যাতায়াতে বিধিনিষেধ থাকছে না আর। একই সঙ্গে কন্টেনমেন্ট জ়োনের বাইরে প্রায় সব কিছুতেই ছাড় দেওয়া হয়েছে। একমাত্র যেগুলির ক্ষেত্রে আচরণবিধি জারি আছে সেগুলি ছাড়া।