ছবি রয়টার্স।
করোনা মোকাবিলায় মোদী সরকারের কথা ও কাজে বেশ কিছু অসামঞ্জস্য দেখা যাচ্ছে বলে অভিযোগ তুলল কংগ্রেস। প্রধান বিরোধী দলটি এ নিয়ে বেশ কিছু প্রশ্নও তুলেছে আজ। সার্বিয়াকে ৩৫ লক্ষ সার্জিকাল মাস্ক সরবরাহ করার বিষয়টি গত কাল প্রকাশ্যে আসার পরেই বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। ভারতে যখন আত্মরক্ষার সাজসরঞ্জামে অপ্রতুলতা রয়েছে, তখন কেন ভিন্ন রাষ্ট্রকে এই অত্যাবশ্যক পণ্য রফতানি করা হচ্ছে, এই প্রশ্নের উত্তর এড়িয়ে গিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক।
কংগ্রেসের মুখপাত্র রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালা আজ প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে টুইট করেছেন। তাঁর কথায়, “করোনায় আক্রান্ত রোগী, ডাক্তার, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মীরা অবশ্য-প্রয়োজনীয় সাজসরঞ্জামের অভাবে বিপদের মুখে। অবস্থা এমনই যে, তাঁরা বর্ষাতি এবং হেলমেট পরে নিজেদের বাঁচানোর চেষ্টা করছেন। দেশ ও দেশবাসীই মুখ্য— কেন্দ্র কেন এই নীতি নিয়ে চলছে না?”
মুখ খুলেছেন কংগ্রেসের আর এক নেতা মণীশ তিওয়ারি। তিনি আরও চড়া স্বরে বলেছেন, “মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, এটা কী হচ্ছে? কেন আমাদের সামনে দাঁড়িয়ে লড়াই করা স্বাস্থ্যকর্মীদের নিজেদের বাঁচানোর সাজসরঞ্জামের জন্য হন্যে হতে হচ্ছে। আর সেগুলিই সার্বিয়াকে সরবরাহ করা হচ্ছে। ৯০ টন সরঞ্জাম পাঠিয়ে দেওয়া হল সার্বিয়াতে! আমরা কি বোকা? এটা অপরাধ।”
গত কাল কোচির কাস্টমস বিভাগ এক টুইটে জানিয়েছিল, করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক লড়াইয়ের অংশ হিসেবে ভারতের ৩৫ লক্ষ সার্জিকাল গ্লাভস পাঠানোর কনসাইনমেন্ট-এ ছাড়পত্র দিতে চলেছে তারা।
নিজেদের আপৎকালীন পণ্য অন্য দেশকে দিয়ে দেওয়া নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশের পাশাপাশি আরও বেশ কয়েকটি বিষয়ে সরব হয়েছে সনিয়া গাঁধীর দল। মণীশ তিওয়ারির বক্তব্য, এয়ার ইন্ডিয়ার বিমানে ভারতে আটকে পড়া জার্মানদের স্বগৃহে ফেরানো হল। কেন সে দেশের চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল চার্টার্ড বিমান পাঠালেন না? লক্ষ লক্ষ ভারতীয় রাস্তায় নেমেছেন বাড়ি ফেরার জন্য, পুলিশের লাঠি খাচ্ছেন। আর কোনও নিরাপত্তা প্রোটোকল ছাড়াই জার্মানদের বিমানে ফেরত পাঠানো হচ্ছে।
চিন থেকে ভারতে রেড ক্রসের জন্য পাঠানো করোনা-মোকাবিলার সামগ্রী পাঠানো নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে কংগ্রেস। কংগ্রেস মুখপাত্র জয়বীর শেরগিল বলেন, “ভারতের সাহায্য দরকার। কোথা থেকে আসছে, সেটা গুরুত্বপূর্ণ নয়। কিন্তু চিনে সংক্রমণের হার অনেক বেশি। ফলে সেখান থেকে যে-সব সামগ্রী আসবে, তা থেকেই যাতে এ দেশে সংক্রমণ ছড়িয়ে না-পড়ে, সেটাও দেখার দরকার।’’
ঘটনাচক্রে আজই চিনের সঙ্গে ভারতের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ৭০ বছর পূর্ণ হল। এই উপলক্ষে চিনের প্রধানমন্ত্রী লি খ্যছিয়াংকে এ দিন শুভেচ্ছাবার্তা পাঠিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছেন, ‘‘কোভিড-১৯ মনে করিয়ে দিল, আজকের বিশ্বে সব দেশ পরস্পরের সঙ্গে যুক্ত। ফলে যৌথ প্রতিরোধ তৈরি করা প্রয়োজন। কুয়েতের প্রধানমন্ত্রী শেখ শাবা আল খালেদ আল হামাদ আল শাবা-র সঙ্গে এ দিন ফোনে কথা বলেছেন মোদী। কুয়েতের প্রধানমন্ত্রী তাঁকে জানিয়েছেন, সে দেশে যে সব ভারতীয় রয়েছেন, তাঁদের প্রতি যথেষ্ট যত্ন নিচ্ছে সে দেশের সরকার।