Coronavirus in India

বাড়িতে আইসোলেশনে থাকবেন কী ভাবে, জানাল কেন্দ্র

করোনার প্রাথমিক উপসর্গ দেখা দিলেই চিকিৎসা শুরু করে দিতে হবে।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ এপ্রিল ২০২০ ১৯:৪১
Share:

এ বার থেকে বাড়িতেই আইসোলেশনে থাকা যাবে। ছবি: এএফপি।

মৃদু সংক্রমণের ক্ষেত্রে বাড়িতে থেকেও কোভিড-১৯ রোগী চিকিৎসা করাতে পারবেন। সারা দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা যখন ৩০ হাজার ছুঁইছুঁই, ঠিক সেইসময় এমনই নির্দেশিকা জারি করল কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রক। শুধু তাই নয়, সংক্রমিত ব্যক্তির সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিকেও আলাদা করে সরকারি আইসোলেশন সেন্টারে যেতে হবে না। প্রয়োজনীয় নিয়ম মেনে বাড়িতেই আইসোলেশনে থাকতে পারবেন তাঁরা।

Advertisement

মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে যে নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে, তাতে বলা হয়েছে, মৃদু উপসর্গ থাকা ব্যক্তি এবং তাঁর শুশ্রূষাকারী, দু’জনেই বাড়িতে থেকে সাবধানতা অবলম্বন করতে পারেন। কী ভাবে সাবধানতা অবলম্বন করা যাবে, তারও সবিস্তার উল্লেখ রয়েছে ওই নির্দেশিকায়। বলা হয়েছে, করোনার প্রাথমিক উপসর্গ দেখা দিলেই চিকিৎসা শুরু করে দিতে হবে।

আইসোলেশনে থাকাকালীন কী কী হলে জরুরি ভিত্তিতে চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে—

Advertisement

• শ্বাসকষ্ট

• একটানা বুকে যন্ত্রণা বা চাপ অনুভূত হলে

• আচমকা মানসিক অসংলগ্নতা দেখা দিলে অথবা ঝিমুনি ভাব এলে

• ঠোঁটে বা মুখের রং ঈষৎ নীলাভ ছাপ তৈরি হলে অথবা ত্বকে বিবর্ণতা দেখা দিলে

• চিকিৎসক পরীক্ষা করে সিদ্ধান্ত নেবেন কোনও ব্যক্তিকে বাড়িতে আইসোলেশনে থাকতে হবে কি না

আরও পড়ুন: রাজ্যের ৫ জেলায় নতুন সংক্রমণ ২৮ জনের, এই মুহূর্তে মোট আক্রান্ত ৫২২​

বাড়িতে আইসোলেশনে থাকাকালীন রোগীকে যে যে সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে—

• মুখে সারা ক্ষণ ত্রি-স্তরীয় মেডিক্যাল মাস্ক পরে থাকতে হবে। মাস্ক বদলাতে হবে ৮ ঘন্টা পর পর। কোনও ভাবে মাস্ক ভিজে গেলে বা নোংরা হয়ে গেলেও পাল্টে ফেলতে হবে।

• তবে ফেলার আগে মাস্কটি ১ শতাংশ সোডিয়াম হাইপো ক্লোরাইট দিয়ে জীবাণুমুক্ত করে নিতে হবে।

• নির্দিষ্ট একটি ঘরেই থাকতে হবে রোগীকে, বাড়ির অন্য সদস্যরা যার ধারেকাছেও ঘেঁষতে পারবেন না। বিশেষ করে বয়স্ক লোকজন এবং যাঁদের উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ এবং কিডনির সমস্যা রয়েছে, তাঁরাও ঘেঁষতে পারবেন না ওই ঘরের ধারেকাছে।

• রোগীকে বিশ্রাম নিতে হবে। সেই সঙ্গে প্রচুর জল ও স্বাস্থ্যকর পানীয় খেতে হবে।

• শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যার সময় যেমন সাবধানতা অবলম্বন করতে হয়, এ ক্ষেত্রেও তা করতে হবে।

• ঘন ঘন সাবান ও জল দিয়ে হাত ধুতে হবে। অন্তত ৪০ সেকেন্ড ধরে সাবান দিয়ে হাত ঘষতে হবে। এ ক্ষেত্রে অ্যালকোহলযুক্ত স্যানিটাইজারও ব্যবহার করা যাবে।

• ব্যক্তিগত ব্যবহাররে জিনিসপত্রে অন্যকে হাত দিতে দেওয়া যাবে না।

• টেবিলের উপরের জায়গা, দরজার হাতল , যে জায়গাগুলি বার বার স্পর্শ করা হয়, সে গুলি ১ শতাংশ হাইপোক্লোরাইট দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে।

• চিকিৎসকের পরামর্শ মতো চলতে হবে রোগীকে। নিয়মিত ওষুধ খেতে হবে।

• রোজ দেহের তাপমাত্রা কতটা বাড়ছে বা কমছে, রোগীকে নিজেকেই তার হিসাব রাখতে হবে। শারীরিক পরিস্থিতির অবনতি হলে তা ডাক্তারকে জানাতে হবে।

আরও পড়ুন: ৫ দিন মেয়ের দেহ আগলে রাখলেন মা, আতঙ্ক বেলঘরিয়ায়​

রোগীর শুশ্রূষায় যিনি নিযুক্ত, তাঁকে মেনে চলতে হবে এই নিয়মগুলি—

• রোগীর সঙ্গে এক ঘরে থাকার সময় ত্রি-স্তরীয় মাস্ক পরে থাকতে হবে। মাস্কের সামনের অংশটা কোনও ভাবেই স্পর্শ করা চলবে না। মাস্ক ভিজে গেলে বা নোংরা হয়ে গেলে সঙ্গে সঙ্গে তা বদলে ফেলতে হবে। ফেলে দেওয়ার আগে জীবাণুমুক্ত করে নিতে হবে মাস্কটিকে।

• কোনও ভাবেই মুখ, নাক স্পর্শ করা যাবে না।

• রোগীর সংস্পর্শে এলে সঙ্গে সঙ্গে হাত পরিষ্কার করতে হবে।

• খাবার তৈরির আগে ও পরে, খাওয়ার আগে, টয়লেট যাওয়ার পর, পরিষ্কার করে হাত ধুতে হবে। সাবান-জল দিয়ে ৪০ সেকেন্ড হাত ধোওয়া অনিবার্য। হাত নোংরা না হলেও অ্যালকোহলযুক্ত স্যানিটাইজার দিয়ে হাত পরিষ্কার করতে হবে।

• সাবান-জল দিয়ে হাত ধোওয়ার পর ডিজপোজেবল পেপার টাওয়েল দিয়ে হাত মুছে নিতে হবে। তা না পাওয়া গেলে পরিষ্কার তোয়ালেতেও হাত মোছা যাবে। তবে তা ভিজে গেলে আর ব্যবহার করা যাবে না।

• রোগীর ড্রপলেটস বা নিঃশ্বাস এসে গায়ে না পড়ে, তার জন্য কথা বলার সময় নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। রোগীকে ধরা ধরি করে তোলা বা বসানোর সময় ডিজপোজেবল গ্লাভস পরতে হবে। গ্লাভস পরার আগে এবং খোলার পর হাত ভাল করে ধুয়ে নিতে হবে।

• রোগীর সঙ্গে ভাগাভাগি করে সিগারেট খাওয়া যাবে না। খাওয়ার বাসন আলাদা রাখতে হবে। এক বোতল থেকে পানীয় খাওয়া যাবে না। আলাদা রাখতে হবে বিছানার চাদর, তোয়ালে।

• রোগীকে তার ঘরেই খেতে দিতে হবে।

• হাতে গ্লাভস পরে রোগীর থালাবাসন সাবান দিয়ে ভাল করে ধুতে হবে। ধোওয়ার পর ওই থালাবাসন পুনরায় ব্যবহার করতে সমস্যা নেই। তবে বাসন ধোওয়া হয়ে গেলে গ্লাভস খুলে ভাল করে হাত পরিষ্কার করতে হবে।

• রোগীর ঘর বা তাঁর ব্যবহারের জিনিসপত্র পরিষ্কার করার সময় ডিজপোজেবল গ্লাভস এবং ত্রি-স্তরীয় মাস্ক পরে থাকতে হবে। সে ক্ষেত্রেও গ্লাভস পরার আগে ও পরে হাত পরিষ্কার করতে হবে।

• রোগী ডাক্তারের নির্দেশ মতো ওষুধ খাচ্ছেন কি না সে দিকে নজর রাখতে হবে।

(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement