ফাইল চিত্র।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে কোভিড মোকাবিলায় ব্যর্থতার অভিযোগ। আর সপ্তম বর্ষপূর্তিতে মোদী সরকার তার সাফল্যের তালিকায় রাখছে অযোধ্যায় রামমন্দির নির্মাণ। কারণ, '৪৯২ বছরের প্রতীক্ষার শেষে' প্রধানমন্ত্রী গত বছর রামমন্দিরের শিল্যানাস করেছেন।
অর্থের টানাটানি বলে মোদী সরকার সকলের জন্য বিনামূল্যে টিকার বন্দোবস্ত করতে নারাজ। কিন্তু নতুন সংসদ ভবন ও সেন্ট্রাল ভিস্টার জন্য ২০ হাজার কোটি টাকা খরচ হচ্ছে। ক্ষমতায় সাত বছর পূর্ণ করার পথে মোদী সরকারের বক্তব্য, এ হল 'আত্মনির্ভর ভারতের আয়না'।
প্রতি দিনই দেশে টিকাকরণের হার কমছে। কংগ্রেস-সহ বিরোধীরা বৃহস্পতিবারও অভিযোগ তুলেছেন, দেশে টিকার অভাব। হাসপাতালের বেড থেকে শ্মশান- জায়গা নেই। আর কেন্দ্রের তথ্য-সম্প্রচার মন্ত্রক নতুন সংসদ ভবনের ছবি তুলে ধরে বলছে, সেখানে দেড়শো শতাংশ বেশি বসার জায়গা হবে।
আর কোভিডের মোকাবিলা? মন্ত্রকের পাক্ষিক পত্রিকার সম্পাদকীয়তে দাবি, প্রধানমন্ত্রীকে ফের কোভিড মোকাবিলার পুরো দায়িত্ব নিজের হাতে তুলে নিতে হয়েছে। গত ২৮ দিনে তিনি ১৭টির বেশি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক করেছেন। স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সমস্ত প্রয়োজন মেটাতে উদ্যোগী হয়েছেন।
আগামী ২৬ মে মোদী সরকারের সপ্তম বর্ষপূর্তি। অন্য সময় হলে ঢাকঢোল পিটিয়ে সাফল্যের প্রচার হত। কিন্তু অতিমারির সময়ে হাত-পা বাঁধা। তাই নমো নমো করেই ‘নমো’-র প্রধানমন্ত্রিত্বের সাত বছরের সাফল্য প্রচার শুরু হয়েছে। সেই উপলক্ষ্যে তথ্য-সম্প্রচার মন্ত্রকের পাক্ষিক পত্রিকা ‘নতুন ভারতের উত্থান’-কে থিম করেছে। মোদী সরকারের সাত বছরকে বর্ণনা করা হয়েছে 'নতুন ভারতের নির্মাণ পর্ব' হিসেবে।
কংগ্রেস নেতা রাহুল গাঁধী আজ মোদী সরকারকে কটাক্ষ করে বলেছেন, "এ হল বাস্তবকে অস্বীকার করতে বালিতে মুখ গুঁজে থাকা। সবথেকে বড় অজ্ঞতা জ্ঞানের অভাব নয়। তা হল জ্ঞান অর্জনকেই অস্বীকার করা।" কেন্দ্রকে নিশানা করে রাহুলের বক্তব্য, গঙ্গার তীরের বালিতে মৃতদেহ দেখা যাচ্ছে। এই দৃশ্যই বলছে, ওই বালিতেই মোদী প্রশাসন মাথা গুঁজে রেখেছে।
মোদী সরকারের মন্ত্রীরা এই অভিযোগে কান দিতে নারাজ। ওই পত্রিকাতেই স্বাধীনতা সংগ্রামের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব হিসেবে বিনায়ক দামোদর সাভারকরকে তুলে ধরা হয়েছে। সরকারের যুক্তি, ১৮৫৭ সালের সিপাহি বিদ্রোহকে শুধুমাত্র বিদ্রোহ বলার ভুল শুধরে তিনিই একে ভারতের প্রথম স্বাধীনতা সংগ্রাম বলেছিলেন। সাভারকরকে স্বাধীনতা সংগ্রামীর আসনে বসানো নিয়ে অবশ্য বরাবরই প্রশ্ন উঠেছে।