এপি-র তোলা প্রতীকী ছবি।
লকডাউনে দক্ষিণ ভারতে আটকে থাকা বাঙালি শ্রমিকদের একাংশের বিভিন্ন কার্যকলাপ বিড়ম্বনা ও উদ্বেগের কারণ হয়ে উঠছে নানা মহলে।
তামিলনাড়ুর মধুমালাই জঙ্গলে ঘেরা পথে ফিরতে গিয়ে আচমকাই বিপদে পড়েছেন অন্তত ৪৯ জন বাঙালি শ্রমিক। পাঁচ দিন পেরিয়ে গেলেও তাঁরা ঠিক কোথায় আছেন, তার হদিশ ঠিক মতো মিলছে না। পাহাড় ও জঙ্গলের দুর্গম পথে খাবার ও জলের অভাবে তাঁদের সমূহ বিপদে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। বাংলার ওই শ্রমিকদের সঙ্কটের কথা তামিলনাড়ু রাজ্য প্রশাসন এবং সিপিএমের রাজ্য নেতৃত্বকে জানিয়েছেন এ রাজ্যের সিপিএম নেতৃত্ব। জানানো হয়েছে এ রাজ্যের মুখ্যসচিব ও রাজ্যপালকেও।
আবার পাশের রাজ্য কেরলে অতিথি শ্রমিকদের জন্য প্রায় পাঁচ হাজার শিবিরের ব্যবস্থা হলেও দু’দিন ধরে সেখানে বাঙালি খাবার বা বাড়ি ফেরার ব্যবস্থার দাবিতে রাস্তায় নেমে আসছেন অনেকে। তিরুঅনন্তপুরমের কংগ্রেস সাংসদ শশী তারুর, ফরওয়ার্ড ব্লকের জাতীয় সম্পাদক জি দেবরাজন থেকে শুরু করে সে রাজ্যের শাসক ও বিরোধী দলের একাধিক সাংসদ ও বিধায়ক বাংলায় ভিডিয়ো-বার্তা দিয়ে তাঁদের অস্থির না হওয়ার আর্জি জানাচ্ছেন। শেষ পর্যন্ত কমিউনিটি কিচেনের রান্না করা খাবারের বদলে খাদ্যশস্য ও আনাজের প্যাকেট শিবিরে পাঠিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে কেরলের বাম সরকার।
আরও পড়ুন: ঘরের বাইরে গেলে মাস্ক পরতে বলছে কেন্দ্রই
রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক সূত্রে পাওয়া খবর অনুযায়ী, দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাসন্তীর বাসিন্দা ৪৯ জন শ্রমিক যে ঠিকাদারের অধীনে কাজ করতে তামিলনাড়ু গিয়েছিলেন, দিনপাঁচেক আগে তিনিই ওই শ্রমিকদের গাড়ির ব্যবস্থা করে ফিরে যেতে বলেছিলেন। কোয়ম্বত্তূর থেকে রওনা দেওয়ার পরে পথে তাঁদের গাড়ি সম্ভবত জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কোথাও আটকানো হয়েছিল। ফোনে ওই শ্রমিকেরা এ রাজ্যে যোগাযোগ করে জানিয়েছিলেন, তাঁদের গাড়ির চালক পালিয়ে গিয়েছেন। তাঁরা বিপদে পড়ে জঙ্গল-ঘেরা পথ ধরে এগোচ্ছেন। বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তীর কথায়, ‘‘দু’দিন ওঁরা জঙ্গলের ফল এবং ঝর্নার জল খেয়ে কাটিয়েছিলেন। একে নেটওয়ার্ক সমস্যা, তার উপরে মোবাইলে চার্জ দেওয়ার উপায় নেই। তামিলনাড়ুতে তো বটেই, এই সমস্যার কথা রাজ্যের মুখ্যসচিব ও রাজ্যপালকেও জানিয়েছি।’’
সাংগঠনিক স্তরে যাতে ওই শ্রমিকদের কাছে পৌঁছনো যায়, তার জন্য তামিলনাড়ুর দলীয় নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলেছেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র। কোয়ম্বত্তূরের সাংসদ পি আর নটরাজনও সিপিএমের। তাঁর বক্তব্য, ‘‘কোয়ম্বত্তূর নিরাপদ জায়গা ছিল। ওই শ্রমিকেরা কোন দিকে যাচ্ছিলেন, সেটা কোনও ভাবে জানা গেলে সুবিধা হত। আমরা সব রকম চেষ্টা চালাচ্ছি।’’ এ রাজ্যের মুখ্যসচিব রাজীব সিংহও সুজনবাবুদের জানিয়েছেন, ভিন্ রাজ্যে সরকার ছাড়াও বাংলার কিছু মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। চেষ্টা চলছে সমস্যা সমাধানের।
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)