গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
দেশে মোট করোনা আক্রান্তের মধ্যে ৯৪.৩৭ শতাংশ মানুষই সুস্থ হয়ে উঠেছেন। প্রতিষেধকের আশায় যখন গোটা বিশ্ব দিন গুনছে, সেই সময় ভারতের এই পরিসংখ্যান স্বস্তিদায়ক বলেই মনে করা হচ্ছে। দৈনিক সংক্রমণ ৩৫-৩৬ হাজারের কোটায় ঘোরাফেরা করলেও, ১৮ অক্টোবরের পর থেকে দৈনিক মৃত্যু কমেছে অনেকটাই।
রবিবার প্রকাশিত কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে কোভিড-১৯ ভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছেন ৩৬ হাজার ১১ জন, যা গতকালের চেয়ে ৪৬১ জন কম। সব মিলিয়ে দেশে এখনও পর্যন্ত ৯৬ লক্ষ ৪৪ হাজার ২২২ জন নোভেল করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছেন। তবে এই মুহূর্তে দেশে সক্রিয় করোনা রোগীর সংখ্যা ৪ লক্ষ ৩ হাজার ২৪৮।
বিশ্ব করোনা তালিকায় প্রথম ও তৃতীয় স্থানে থাকা আমেরিকা এবং ব্রাজিলের সঙ্গে তুলনা করলে দ্বিতীয় স্থানে থাকা ভারতের পরিস্থিতি এই মুহূর্তে স্বস্তিদায়ক। কারণ শনিবার আমেরিকায় নতুন করে ২ লক্ষ ২৪ হাজার ৭৭৮ জন মানুষ করোনায় আক্রান্ত হন। মাঝে বেশ কিছু দিন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকলেও, ব্রাজিলে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা ফের ৪০-৫০ হাজারের কোটায় ঘোরাফেরা করছে। শনিবার নতুন করে ৪৩ হাজার ২০৯ জন করোনায় আক্রান্ত হন সে দেশে। আমেরিকায় এখনও পর্যন্ত ১ কোটি ৪৫ লক্ষ ৮০ হাজার ১৪৪ জন করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন। ব্রাজিলে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৬৫ লক্ষ ৭৭ হাজার ১৭৭।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
ভারতের সুস্থতার হারও যথেষ্ট সন্তোষজনক বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। মোট আক্রান্তের মধ্যে এখনও পর্যন্ত ৯১ লক্ষ ৭৯২ জনই রোগীই সুস্থ হয়ে উঠেছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ৪১ হাজার ৯৭০ জন। এই মুহূর্তে দেশে সুস্থতার হার ৯৪.৩৭ শতাংশ।
নোভেল করোনার প্রকোপে এখনও পর্যন্ত গোটা দেশে ১ লক্ষ ৪০ হাজার ১৮২ জন রোগী প্রাণ হারিয়েছেন। এর মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় প্রাণ হারিয়েছেন ৪৮২ জন। এর মধ্যে মহারাষ্ট্রেই ৯৫ জন করোনা রোগীর মৃত্যু হয়েছে। রাজধানী দিল্লিতে ৭৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গে ৪৯ জন প্রাণ হারিয়েছেন। ৩২ জন রোগীর মৃত্যু হয়েছে কেরলে। এ ছাড়াও হরিয়ানা (২৫), পঞ্জাব (২৪), উত্তরপ্রদেশ (২৩), ছত্তীসগঢ় (২১), রাজস্থান (২০), গুজরাত (১৫), মধ্যপ্রদেশ (১২) এবং জম্মু ও কাশ্মীরেও (১২) প্রাণহানি ঘটেছে। তুলনামূলক কম হলেও অন্যান্য রাজ্যগুলিতেও প্রাণহানি ঘটেছে।
আরও পড়ুন: মমতার নির্দেশে শুভেন্দু ঘনিষ্ঠ ব্লক সভাপতি ছাঁটাই শিশিরের
দেশের মধ্যে মহারাষ্ট্রেই এখনও পর্যন্ত করোনা আক্রান্তের সংখ্যা সর্বাধিক। সবমিলিয়ে সেখানে ১৮ লক্ষ ৪৭ হাজার ৫০৯ জন সংক্রমিত হয়েছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন ৪ হাজার ৯২২ জন। তালিকা দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে যথাক্রমে কর্নাটক (৮ লক্ষ ৯১ হাজার ৩০৫) এবং অন্ধ্রপ্রদেশ (৮ লক্ষ ৭১ হাজার ৩০৫) রয়েছে। চতুর্থ ও পঞ্চম স্থানে রয়েছে তামিলনাড়ু (৭ লক্ষ ৮৮ হাজার ৯২০) এবং কেরল (৬ লক্ষ ৩১ হাজার ৬১৫)। ষষ্ঠ স্থানে রয়েছে রাজধানী দিল্লি। সেখানে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৫ লক্ষ ৮৯ হাজার ৫৪৪। সপ্তম ও অষ্টম স্থানে যথাক্রমে উত্তরপ্রদেশ (৫ লক্ষ ৫৩ হাজার ১২) এবং পশ্চিমবঙ্গ (৪ লক্ষ ৯৯ হাজার ৬৯৭) রয়েছে। নবম ও দশম স্থানে রয়েছে ওডিশা (৩ লক্ষ ২০ হাজার ৮০৩) এবং রাজস্থান (২ লক্ষ ৭৮ হাজার ৪৯৬)।
আরও পড়ুন: নতুন সংসদ: ১০ই ভূমিপূজা করবেন নরেন্দ্র মোদী
(চলন্ত গড় বা মুভিং অ্যাভারেজ কী: একটি নির্দিষ্ট দিনে পাঁচ দিনের চলন্ত গড় হল— সেই দিনের সংখ্যা, তার আগের দু’দিনের সংখ্যা এবং তার পরের দু’দিনের সংখ্যার গড়। উদাহরণ হিসেবে— দৈনিক নতুন করোনা সংক্রমণের লেখচিত্রে ১৮ মে-র তথ্য দেখা যেতে পারে। সে দিনের মুভিং অ্যাভারেজ ছিল ৪৯৫৬। কিন্তু সে দিন নতুন আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা ছিল ৫২৬৯। তার আগের দু’দিন ছিল ৩৯৭০ এবং ৪৯৮৭। পরের দুদিনের সংখ্যা ছিল ৪৯৪৩ এবং ৫৬১১। ১৬ থেকে ২০ মে, এই পাঁচ দিনের গড় হল ৪৯৫৬, যা ১৮ মে-র চলন্ত গড়। ঠিক একই ভাবে ১৯ মে-র চলন্ত গড় হল ১৭ থেকে ২১ মে-র আক্রান্তের সংখ্যার গড়। পরিসংখ্যানবিদ্যায় দীর্ঘমেয়াদি গতিপথ সহজ ভাবে বোঝার জন্য এবং স্বল্পমেয়াদি বড় বিচ্যুতি এড়াতে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়)
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)