National News

করোনাভাইরাস: দিল্লিতে হাসপাতালে ভর্তি আরও ৫, ‘বিপর্যয়’ ঘোষণা কেরলে

দিল্লিতে সেনাবাহিনীর বেস হাসপাতালে যে ৫ জনকে ভর্তি করানো হয়েছে, বিভিন্ন রকমের পরীক্ষার জন্য তাঁদের রক্তের নমুনা পাঠানো হয়েছে দিল্লির ‘অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্সেস (এমস)’-এ।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ১২:১৬
Share:

৫ জনের রক্তের নমুনা পরীক্ষা চলছে সেনাবাহিনীর বেস হাসপাতালে। দিল্লিতে, মঙ্গলবার। ছবি- পিটিআই।

হুবেই প্রদেশের উহান থেকে যাঁদের ফিরিয়ে এনে রাখা হয়েছিল দিল্লি থেকে কিছুটা দূরে মানেসরের নজরদারি কেন্দ্রে, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত সন্দেহে তাঁদের মধ্যে ৫ জনকে ভর্তি করানো হল সেনাবাহিনীর বেস হাসপাতালে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার প্রাথমিক লক্ষণগুলি ওই ৫ জনের শরীরে দেখা গিয়েছে। উহান থেকে ইতিমধ্যেই ৬০০-রও বেশি ভারতীয়কে এয়ার ইন্ডিয়ার দু’টি বিমানে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়েছে।

Advertisement

করোনাভাইরাস সংক্রমণকে কেরল সরকার ‘রাজ্যের বিপর্যয়’ বলে ঘোষণা করেছে। এর ফলে এই সংক্রমণের মোকাবিলায় বাড়তি অর্থ বরাদ্দ করতে পারবে কেরল সরকার। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে কেরল পুলিশও পাবে বাড়তি ক্ষমতা। সংক্রমণ মোকাবিলায় কেরলে গঠন করা করেছে আলাদা ‘টাস্ক ফোর্স’ও। রাজ্যে সোমবার তিন জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। রক্তের নমুনা পরীক্ষায় তিন জনের শরীরেই করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছে।

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত সন্দেহে দিল্লিতে গত এক সপ্তাহে ১৩ জনকে ভর্তি করানো হয়েছে রামমনোহর লোহিয়া হাসপাতালে।

Advertisement

সরকারি সূত্রের খবর, দিল্লিতে সেনাবাহিনীর বেস হাসপাতালে যে ৫ জনকে ভর্তি করানো হয়েছে, বিভিন্ন রকমের পরীক্ষার জন্য তাঁদের রক্তের নমুনা পাঠানো হয়েছে দিল্লির ‘অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্সেস (এমস)’-এ। এক জনের রক্তপরীক্ষার ফলাফল জানা গিয়েছে। তিনি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হননি। বাকি ৪ জনের রক্তপরীক্ষার ফলাফল এখনও জানা যায়নি।

আরও পড়ুন- করোনাভাইরাস: চিনে মৃত বেড়ে ৪২৫, আকাল চিকিৎসা সরঞ্জামের​

আরও পড়ুন- আক্রান্ত তিন, করোনা ‘বিপর্যয়’ ঘোষণা কেরলে​

ও দিকে, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ফের অন্তত ৬৪ জনের মৃত্যুর খবর মিলল চিনে। ফলে, সোমবার পর্যন্ত ছিল যে সংখ্যাটা ছিল ৩৬১, মঙ্গলবারই তা বেড়ে দাঁড়াল ৪২৫। ২০০২-’০৩ সালে ‘সার্স’ ভাইরাসে চিনে যত মানুষের মৃত্যু হয়েছিল, এ বার করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা ইতিমধ্যেই তাকে ছাপিয়ে গিয়েছে।

যত দিন যাচ্ছে পরিস্থিতি ক্রমশ হাতের বাইরে চলে যাচ্ছে চিনে। একপ্রকার ‘জরুরি অবস্থা’ জারি হয়েছে সেখানে। চিনে এখনও পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ১৭ হাজার ২০৫ জন।

ইতিমধ্যেই সংক্রমণ আটকাতে চিনের ১৯টি শহর বহির্বিশ্ব থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে রয়েছে এখন। উড়ান তো বটেই, ট্রেন-বাস-ফেরি-সহ গণপরিবহণের সমস্ত ব্যবস্থা বন্ধ এই সব শহরে। স্কুল-কলেজ-অফিস বন্ধ। স্থানীয় বাসিন্দারা রীতিমতো ঘরবন্দি। এমনকি, বাজার করতে বেরেনোতেও রয়েছে নিষেধাজ্ঞা। তার উপরে রোগীর সংখ্যা যে মাত্রায় বাড়ছে, তাঁদের চিকিত্সার সমস্ত সুবিধা দেওয়াও সমস্যা হয়ে যাচ্ছে চিন সরকারের। রোগের মোকাবিলায় মাত্র দশ দিনেই একটি বিশেষ হাসপাতাল তৈরি করেছে বেজিং। দেড় হাজার শয্যাবিশিষ্ট ওই হাসপাতাল শুরু হয়ে যাবে এই সপ্তাহেই। তবে সার্জিক্যাল মাস্ক-সহ বেশ কিছু চিকিৎসার সরঞ্জামের আকাল শুরু হয়েছে দেশে।

চিনের বাইরে প্রায় ২৪টি দেশে ছড়িয়েছে এই মারণ ভাইরাস। ভারত ছাড়াও জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, হংকং, ভিয়েতনাম, তাইওয়ান, ফিলিপিন্স, ম্যাকাও, মালয়েশিয়া, অস্ট্রেলিয়া, কাম্বোডিয়া, তাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, নেপাল, শ্রীলঙ্কা, কানাডা, ব্রিটেন, ফ্রান্স, ইটালি, ফিনল্যান্ড, জার্মানি, আমেরিকা ও সংযুক্ত আরব আমিরশাহি— এই ২৩টি জায়গায় এই রোগে আক্রান্তের খোঁজ মিলেছে।

এদের মধ্যে প্রায় প্রতিটি দেশই বিশেষ বিমান পাঠিয়ে চিন থেকে তাদের দেশের নাগরিকদের এয়ারলিফ্ট করে করে দেশে ফিরিয়ে নিয়ে গিয়েছে। ভাইরাস সংক্রমণের আতঙ্কে বেশির ভাগ দেশই এখন চিনে যাওয়া-আসার ক্ষেত্রে নানাবিধ নিষেধাজ্ঞা চাপিয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement