—ফাইল চিত্র।
গোষ্ঠী সংক্রমণের আকার নিয়েছে করোনা। তার জেরে গুয়াহাটিতে আরও ১৪ দিনের জন্য সম্পূর্ণ লকডাউন ঘোষণা করল অসম সরকার। ২৮ জুন মধ্যরাত থেকে নতুন করে লকডাউন শুরু হচ্ছে সেখানে। তবে শুক্রবার থেকেই রাজ্যের সর্বত্র সন্ধ্যা ৭টা থেকে সকাল ৭টা পর্যন্ত কার্ফু শুরু করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে শহরাঞ্চল এবং মফস্সল এলাকাগুলিতে সপ্তাহে দু’দিন করে লকডাউন হবে বলেও জানানো হয়েছে।
রাজ্যের পরিস্থিতি নিয়ে শুক্রবার সাংবাদিক বৈঠক করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা। সেখানেই তিনি নতুন করে লকডাউনের কথা ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, ‘‘গুয়াহাটিতে কোভিড সংক্রমিতের সংখ্যা উত্তরোত্তর বেড়েই চলেছে। ১৫ জুন থেকে এখনও পর্যন্ত ৬৭৬টি গোষ্ঠী সংক্রমণ ধরা পড়েছে। তাই ২৮ জুন মধ্যরাত থেকে ১২ জুলাই পর্যন্ত সম্পূর্ণ লকডাউন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমরা।’’
গ্রামাঞ্চলে লকডাউন না হলেও, সন্ধ্যা ৭টা থেকে সকাল ৭টা পর্যন্ত কার্ফু চলবে সেখানেও। তবে জরুরি পরিষেবা ছাড়া, লকডাউন চলাকালীন কোনও গাড়ি রাস্তায় বেরতে পারবে না বলে জানিয়েছে অসম সরকার। সেই সঙ্গে আরও বলা হয়েছে, লকডাউন চলাকালীন প্রথম সাত দিন সমস্ত দোকান-বাজার বন্ধ থাকবে। বন্ধ থাকবে যান চলাচলও। প্রাইভেট গাড়ি নিয়েও কেউ বেরতে পারবেন না।
আরও পড়ুন: লাদাখে সেনা কমাচ্ছে চিন, কিন্তু সরাচ্ছে না ছাউনি, বলছে দিল্লি
লকডাউন গুয়াহাটিতে চলাকালীন সমস্ত ধর্মীয় স্থান, হোটেল, রেস্তরাঁ এবং অনলাইন পরিষেবাও বন্ধ থাকবে। শবযাত্রা বেরলে তাতে ২০ জনের বেশি অংশ নিতে পারবেন না। পেট্রল পাম্পগুলিকে কড়া নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যাতে জরুরি পরিষেবা ছাড়া কাউকে জ্বালানি বিক্রি করা না হয়। তবে বাকি সব বন্ধ থাকলেও কৃষিকাজ এবং চা বাগানের কাজ আগের মতোই চলবে।
এখনও পর্যন্তে অসমে প্রায় সাড়ে চার লক্ষ মানুষের করোনা পরীক্ষা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন হিমন্ত বিশ্ব শর্মা। তবে এই মুহূর্তে রাজ্যে যে ২ হাজার ২৭৯ জন সক্রিয় করোনা আক্রান্ত, তাঁদের মধ্যে একটা বড় অংশ অন্য রাজ্যের বাসিন্দা বলে জানিয়েছেন তিনি। এ দিন হিমন্ত বিশ্ব শর্মা বলেন, ‘‘কিছু রাজ্যে পরিস্থিতি তুলনামূলক ভাল বলে শুনেছিলাম। কিন্তু অসমের ২০টি জেলায় পরীক্ষা চালিয়ে দেখা গিয়েছে, আক্রান্তদের অনেকেই অন্য রাজ্য থেকে এসেছেন। যেমন, পরিস্থিতি আয়ত্তে এনে ফেলেছে বলে দাবি করেছিল কেরল। কিন্তু সেখান থেকে আসা ৮২ জনের রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে। একই ভাবে কর্নাটক থেকে আসা ১০৪ জনের শরীরে কোভিড-১৯ ধরা পড়েছে।’’
আরও পড়ুন: রাজ্যে রেকর্ড সংখ্যক আক্রান্ত, এক দিনে ৫৪২, মারা গেলেন ১০ জন
করোনার প্রকোপে অসমে এখনও পর্যন্ত ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। অন্য রাজ্যে চলে গিয়েছেন তিন জন। এই মুহূর্তে যাঁরা অন্য রাজ্যে চলে যাওয়ার কথা ভাবছেন, শনিবারের মধ্যে তাঁদের বেরিয়ে পড়তে হবে বলে জানিয়েছেন হিমন্ত বিশ্ব শর্মা।