রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর শক্তিকান্ত দাস। ছবি: পিটিআই।
বিশ্বজোড়া করোনা পরিস্থিতি দেশের অর্থনীতি ও স্বাস্থ্য পরিষেবার ক্ষেত্রে নজিরবিহীন আঘাত হেনেছে। এমনটাই মত রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর শক্তিকান্ত দাসের। শনিবার সপ্তম ‘এসবিআই ব্যাঙ্কিং অ্যান্ড ইকনমিক কনক্লেভ’ উপলক্ষে একটি ভিডিয়ো কনফারেন্সের আয়োজন করা হয়। এসবিআই আয়োজিত সেই কনক্লেভে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর জানান, গত ১০০ বছরের মধ্যে ভারতের অর্থনীতি এবং স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে এমন বড় বিপর্যয় আর আসেনি।
করোনার প্রভাব যে চাকরি ক্ষেত্রেও পড়েছে, সে কথাও ওই কনফারেন্সে জানিয়েছেন শক্তিকান্ত দাস। তিনি বলেন, ‘‘গত ১০০ বছরের মধ্যে অর্থনীতি ও স্বাস্থ্যক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় বিপর্যয়ের নাম কোভিড-১৯। এর জেরে উৎপাদন ও চাকরির ক্ষেত্রে প্রবল নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। ব্যাহত হয়েছে শ্রমিক ও পুঁজি চলাচল এবং গ্লোবাল ভ্যালু চেন।’’
ভিডিয়ো কনফারেন্সে হাজির ছিলেন এসবিআইয়ের চেয়ারম্যান রজনীশ কুমার। বর্তমান পরিস্থিতিতে দেশের আর্থিক বৃদ্ধির বিষয়টিকেই ‘সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার’ দিতে হবে বলে তাঁকে জানান রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর। তিনি আরও বলেন, ‘‘আর্থিক মন্দা ঠেকানোর জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপগুলি চিহ্নিত করেছে আরবিআই। সেই মতো ব্যবস্থা নেওয়াও শুরু হয়েছে।’’ শক্তিকান্তের দাবি, দীর্ঘ লকডাউন পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝে অর্থনীতির হাল ফেরাতে প্রচলিত পদ্ধতির পাশাপাশি কিছু নতুন কৌশল নিয়েছে আরবিআই।
কী সেই কৌশল?
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে বাজারে ৯.৫৭ লক্ষ কোটি নগদ টাকা জোগানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। যা গত অর্থবর্ষের জিডিপি-র প্রায় ৪.৭ শতাংশ। বাড়ানো হয়েছে, মেয়াদি ঋণের মোরাটোরিয়ামের সময়সীমা। পাশাপাশি, আর্থিক মন্দা ঠেকাতে ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে আরবিআই রেপো রেট (যে সুদের হারে আরবিআই বিভিন্ন রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ককে ঋণ দেয়) ২৫০ বেসিস পয়েন্ট (২.৫ শতাংশ) কমিয়েছে। শক্তিকান্তের দাবি, এই পদক্ষেপগুলির সুফল মেলার ইঙ্গিত মিলেছে ইতিমধ্যেই।
আরও পড়ুন: করোনা-যুদ্ধে নজির গড়েছে ধারাবী বস্তি: ভূয়সী প্রশংসায় হু
করোনা সঙ্কটের আবহে যাতে সাধারণ মানুষের হাতে টাকার জোগান থাকে তা নিশ্চিত করতে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফেও ইতিমধ্যেই একাধিক আর্থিক প্যাকেজের কথা ঘোষণা করা হয়েছে। গ্রামীণ অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে কিছু বিশেষ ছাড় দেওয়ারও সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ দিনের কনক্লেভে শক্তিকান্ত বলেন, ‘‘ক্ষুদ্র এবং মাঝারি শিল্প যাতে মন্দার সঙ্গে লড়াই করে ঘুরে দাঁড়াতে পারে, তা নিশ্চিত করার বিষয়টিতে গুরুত্ব দিতে হবে। এ ক্ষেত্রে সহজে ঋণের ব্যবস্থা করতে ব্যাঙ্কিং পরিষেবার ক্ষেত্রে কিছু নিয়মে ছাড় দেওয়া হচ্ছে।’’
আরও পড়ুন: একুশের শেষে করোনার টিকা? মন্ত্রকের ইঙ্গিতে ধোঁয়াশা