শুরু হয়েছে নতুন করে বিতর্ক। ফাইল চিত্র।
ফের বিতর্ক তৈরি হল জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ আইন আনাকে কেন্দ্র করে। আজ রাজ্যসভার কর্মসূচিতে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ আইন আনার পক্ষে একটি প্রস্তাব আনার বিষয় লিপিবদ্ধ থাকলেও যিনি প্রস্তাবকারী, সেই বিজেপি সাংসদ হরনাথ সিংহ যাদব নিজে অনুপস্থিত থাকায় প্রস্তাবটি শেষ পর্যন্ত কক্ষে পেশ হয়নি। যদিও আজকের ওই প্রস্তাব নতুন করে বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। বিরোধীদের মতে, ধারাবাহিক ভাবে এ বিষয়ে সুর চড়িয়ে চাপ বাড়ানোর কৌশল নিয়েছেন বিজেপি নেতৃত্ব।
গত মে মাসে প্রাইভেট মেম্বার বিল হিসাবে রাজ্যসভায় জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ বিল এনেছিলেন বিজেপির সঙ্ঘ-ঘনিষ্ঠ সাংসদ রাকেশ সিন্হা। শেষ পর্যন্ত কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী মনসুখ মাণ্ডবিয়া হস্তক্ষেপ করায় পরে ওই বিল প্রত্যাহার করে নেন রাকেশ। তিনি যুক্তি দিয়েছিলেন, ভারতে জন্মহার অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তাই নতুন করে আইন আনার কথা ভাবছে না সরকার। সরকার নিজের মনোভাব স্পষ্ট করলেও আজ ফের জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে আইন আনার পক্ষে একটি প্রস্তাব রাজ্যসভার প্রাইভেট মেম্বার্স কর্মসূচিতে লিপিবদ্ধ করা হয়েছিল। বিজেপির সঙ্ঘ-ঘনিষ্ঠ সাংসদ হরনাথ যাদবের আনা প্রস্তাবে বলা হয়েছিল, গত কয়েক দশকে দেশে অভূতপূর্ব জনবিস্ফোরণের ফলে ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, যেখানে উপলব্ধ সম্পদ ও উন্নয়ন এবং পরিষেবার প্রশ্নে অসাম্য দেখা দিয়েছে। কারণ যে গতিতে জনসংখ্যা বাড়ছে, সেই হারে সম্পদের জোগান, পরিষেবা দেওয়া কোনও সরকারের পক্ষে সম্ভব নয়। স্বাধীনতার ৭০ বছর পরেও ভারত এখনও পরিশ্রুত পানীয় জল, স্বাস্থ্য পরিষেবা, খাদ্য, বাসস্থান, চাকরি, বিদ্যুৎ দেওয়ার প্রশ্নে সফল হতে পারেনি। কারণ সমস্যার মূল কারণ হল, ক্রমশ বাড়তে থাকা জনসংখ্যা। তাই রাজ্যসভার পক্ষ থেকে সরকারকে জনসংখ্যার এই প্রবল বৃদ্ধিকে রুখতে কড়া ও অভিন্ন জনসংখ্যা আইন আনার পরামর্শ দেওয়া হোক যাতে বাড়তি জনসংখ্যাজনিত সমস্যা সমাধান করা যায়।
আজ বেলা দু’টোর পরে প্রাইভেট মেম্বার্স বিল নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। তালিকার একেবারে প্রথমেই ছিল হরনাথের ওই প্রস্তাব। এ নিয়ে কিছু বক্তব্য রাখার আগেই পয়েন্ট অব অর্ডার এনে ওই প্রস্তাব পেশের বিরোধিতা করে বিজেডি সাংসদ অমর পটনায়ক বলেন, রাজ্যসভার নিয়ম বলছে, কোনও প্রস্তাব আনার এক বছরের মধ্যে সেই একই বিষয়ে দ্বিতীয় বার প্রস্তাব আনা যায় না। এ ক্ষেত্রে রাকেশ সিন্হা মে মাসে ওই প্রস্তাব আনেন। তা সত্ত্বেও ফের ওই প্রস্তাব কী করে কর্মসূচিতে তালিকাভুক্ত হল, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি। যদিও বিজেডি সাংসদকে শুধরে দিয়ে আরজেডি সাংসদ মনোজ ঝা জানান, এর আগে যেটি এসেছিল, সেটি প্রাইভেট মেম্বার্স বিল। আর একটি প্রস্তাব। দু’টির মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। হস্তক্ষেপ করে রাজ্যসভার চেয়ারম্যান জগদীপ ধনখড় বলেন, সমস্ত সাংসদদের বক্তব্য নোট করে রাখা হল। এর পরে তিনি হরনাথকে ওই প্রস্তাব পেশ করার নির্দেশ দিলে দেখা যায় তিনি অনুপস্থিত। ফলে বিষয়টি থেমে যায় সেখানেই।