রাহুলের সেই বিতর্কিত পোস্ট।
আন্তর্জাতিক যোগ দিবসে ঝাড়খণ্ডের রাঁচীতে আজ যোগ-প্রদর্শনী সেরে একগুচ্ছ টুইট করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কিন্তু বিহারের শিশুমৃত্যুর ঘটনা উল্লেখ করে নেট-নাগরিকদের একাংশ প্রধানমন্ত্রীর যোগচর্চাকে খোঁচা দিলেন। নিজের টুইটার হ্যান্ডলে কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধী ভারতীয় সেনাবাহিনীর ডগ স্কোয়াডের যোগ ব্যায়ামের ছবি পোস্ট করে লিখেছেন, ‘নিউ ইন্ডিয়া’। যা নিয়েও শুরু হয়েছে বিতর্ক।
যোগ দিবসে নজরকাড়া ঘটনা ঘটেছে হরিয়ানার রোহতকে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী মনোহরলাল খট্টর সেখানে যোগচর্চায় অংশ নেন। কিন্তু অনুষ্ঠান শেষে যোগের আসন নিয়ে লুটের হিড়িক পড়ে যায়। এমনকি, হাতাহাতিতেও জড়িয়ে পড়েন অনেকে।
পঞ্চম আন্তর্জাতিক যোগ দিবসে রাঁচীর প্রভাত তারা প্রাঙ্গণে প্রায় হাজার চল্লিশ মানুষের সঙ্গে পদহস্তাসন, বীরভদ্রাসন-সহ বেশ কয়েকটি যোগাসন করেন মোদী। তিনি জানান, যোগ ব্যায়াম হল জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ করতে হবে। তাঁর কথায়, ‘‘শহর থেকে গ্রাম এবং আদিবাসী এলাকায় যোগ ব্যায়ামকে পৌঁছে দিতে হবে। জাতি, ধর্ম, বর্ণ এবং অঞ্চলের ঊর্ধ্বে যোগ। যোগ ব্যায়াম হল কর্ম, জ্ঞান এবং ভক্তির অনন্য মিশ্রণ।’’ হৃদ্যন্ত্র ভাল রাখতে যুব সমাজকে যোগাভ্যাসের পরামর্শ দিয়েছেন মোদী।
দিল্লি ফিরে প্রধানমন্ত্রী যোগ কর্মসূচি নিয়ে একের পর এক টুইট করেন। তত ক্ষণে অবশ্য প্রধানমন্ত্রীকে নিশানা করে শুরু হয়ে গিয়েছে নেট-বিদ্রুপ, নেট-কটাক্ষ। বিহারে এনসেফ্যালাইটিসে শিশুমৃত্যু নিয়ে এক জন লিখেছেন, ‘‘শতাধিক শিশু মারা গেল, কিন্তু তা নিয়ে আপনারা টু শব্দও করলেন না। কেন? কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকার কেন কোনও ব্যবস্থা নিল না?’’ পাপ্পু কুমারের টুইট, ‘‘যে বিহার ৩৯টি আসন দিল, সেই বিহারে দেড়শোর বেশি শিশুমৃত্যু হয়েছে। আর দেশের প্রধানমন্ত্রী যোগ ব্যায়াম করছেন! আপনার লজ্জা হওয়া উচিত।’’ বৈশালী পাটিলের কটাক্ষ, ‘‘যোগ ব্যায়ামে পেট ভরে না, জিডিপি বাড়ে না, কৃষক ফসলের দাম পায় না, যুবকের চাকরি হয় না, হাসপাতালে শিশুমৃত্যু রোখা যায় না।’’
নিজের টুইটার হ্যান্ডলে ছবি পোস্ট করে শোরগোল ফেলে দিয়েছেন রাহুল। ছবিটিতে দেখা যাচ্ছে, সেনাবাহিনীর ডগ স্কোয়াডকে যোগ ব্যায়াম করাচ্ছেন প্রশিক্ষকেরা। এর পরই হইহই করে আসরে নেমে পড়েছে বিজেপি। অমিত শাহের টুইট-আক্রমণ, ‘‘কংগ্রেস সবসময়েই নেতিবাচক ভাবনায় বিশ্বাসী। তিন তালাক নিয়ে আজ তারা সেই মনোভাব দেখিয়েছে। যোগ দিবস নিয়েও ওরা মশকরা করছে এমনকি সেনাবাহিনীকেও অপমান করছে।’’ রাহুলের উদ্দেশে প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহের টুইট, ‘‘যিনি বার বার সেনাবাহিনীকে অপমান করেন, ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা, তাঁকে শুভবুদ্ধি দিন।’’ সংসদের যৌথ অধিবেশনে রাষ্ট্রপতির ভাষণের সময় রাহুলকে ফোনে মগ্ন থাকতে দেখা গিয়েছিল। ওই প্রসঙ্গ তুলে বিজেপি নেতা রাম মাধবের কটাক্ষ, ‘‘যোগাভ্যাস করলে শিশুসুলভ অমনোযোগিতা কমবে।’’