ছবি: পিটিআই
বিজেপিকে সঙ্গে নিয়ে মুম্বইয়ের কুর্সি দখলের ৪০ দিন পরে মন্ত্রিসভা সম্প্রসারণ করলেন শিবসেনার বিদ্রোহী নেতা তথা মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডে। আজ যে ১৮ জন শপথ নিয়েছেন, তাঁদের মধ্যে ১৭ জনই কোনও না কোনও সময় মন্ত্রী ছিলেন। উল্লেখযোগ্য, আজ শপথ নেওয়া তিন মন্ত্রীর বিরুদ্ধে অপরাধমূলক কাজে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। একনাথ শিন্ডে-দেবেন্দ্র ফডণবীস মন্ত্রিসভায় এখনও পর্যন্ত কোনও মহিলা জায়গা পাননি। অপরাধে যুক্তদের মন্ত্রী করা এবং মন্ত্রিসভায় মহিলা প্রতিনিধি না থাকায় সরকারকে নিশানা করতে ছাড়েনি বিরোধীরা।
মহারাষ্ট্র সরকারে আজ তিন জন মন্ত্রীকে নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। তাঁদের মধ্যে অন্যতম সঞ্জয় রাঠৌর। উদ্ধব ঠাকরে মন্ত্রিসভার সদস্যও ছিলেন তিনি। কিন্তু পুণের এক তরুণীর মৃত্যুর ঘটনায় নাম জড়ানোয় গত বছর মন্ত্রিত্ব ছাড়তে হয়। গত জুনে শিন্ডে যখন বিদ্রোহ করেছিলেন, তখন রাঠৌর তাঁর শিবিরে যোগ দিয়েছিলেন। তাঁকে মন্ত্রিসভার সদস্য করায় মহারাষ্ট্র বিজেপির সহ-সভাপতি চিত্র ওয়াঘ বলেন, ‘‘সঞ্জয় রাঠৌরকে মন্ত্রী করা দুর্ভাগ্যজনক। তাঁর বিরুদ্ধে আমার লড়াই চলবে। বিচার বিভাগের উপর আমার আস্থা রয়েছে। আমি জয়ী হব।’’ রাঠৌরকে নিয়ে শিন্ডের যুক্তি, পুলিশ তাঁকে ‘ক্লিন চিট’ দিয়েছে।
মহারাষ্ট্রে টেট-দুর্নীতিতে অভিযুক্ত আব্দুল সাত্তারকেও মন্ত্রী করেছেন শিন্ডে। শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় কারচুপির অভিযোগে সাত্তারের তিন মেয়ে ও ছেলেরও প্রার্থীপদ বাতিল হয়। মন্ত্রী হওয়ার পরে শিন্ডে গোষ্ঠীর এই বিধায়কের দাবি, তাঁর বিরুদ্ধে ‘রাজনৈতিক চক্রান্ত’ করা হয়েছিল।
বিজেপির বিজয়কুমার গাভিটকে এ বার মন্ত্রী করা হয়েছে। ২০০৪ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত তিনি এনসিপি-কংগ্রেস সরকারের মন্ত্রী ছিলেন। পরে বিজেপি-তে যোগ দেন। বছর পাঁচেক আগে দুর্নীতি এবং আদিবাসী উন্নয়ন দফতরে বেনিয়মের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হন। অভিযুক্তদের মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভুক্তি নিয়ে শিন্ডে-ফডণবীসকে নিশানা করে মুম্বইয়ের মেয়র তথা শিবসেনার উদ্ধব ঠাকরে গোষ্ঠীর নেত্রী কিশোরী পেড়নেকরের কটাক্ষ, ‘‘বিজেপি হচ্ছে ওয়াশিং মেশিন। গেলেই সাফ হয়ে যান।’’ মুম্বই বিজেপির সভাপতি তথা মহারাষ্ট্রের সবচেয়ে ধনী বিধায়ক (ঘোষিত সম্পত্তি ৪৪১ কোটি টাকা) মঙ্গল প্রভাত লোঢাও মন্ত্রিসভায় রয়েছেন।
মন্ত্রিসভায় মহিলাদের উপস্থিতি না থাকায় জোট সরকারকে খোঁচা দিতে ছাড়েননি এনসিপি নেত্রী সুপ্রিয়া সুলে। তাঁর কথায়, ‘‘মহারাষ্ট্র দেশের মধ্যে প্রথম রাজ্য যেখানে মহিলাদের জন্য আসন সংরক্ষণ হয়েছিল। দেশের জনসংখ্যার ৫০ শতাংশ মহিলা। আর মন্ত্রিসভায় মহিলাদের কোনও প্রতিনিধিত্ব নেই। এ থেকেই বিজেপির মনোভাব বোঝা যায়।’’