নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু।
নেতাজির ‘মৃত্যু দিবস’ নিয়ে বার বার বিতর্ক দানা বেঁধেছে। এ বার বিতর্ক উস্কে দিল প্রেস ইনফর্মেশন ব্যুরো (পিআইবি)-র একটি পোস্ট। নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুকে শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে রবিবার যে টুইট পিআইবি করেছে, তাতে ১৯৪৫ সালের ১৮ অগস্টকেই তাঁর ‘মৃত্যু দিবস’ হিসাবে দেখানো হয়েছে। শুধু পিআইবি-ই নয়, কংগ্রেস ও গুজরাত বিজেপির তরফেও এমনই পোস্ট করা হয়েছে। যতিও তাতে ভাষার কিছুটা তারতম্য রয়েছে। সেই টুইটারেই পোস্ট করে নেতাজিকে নিয়ে ‘রহস্য’ উন্মোচনের দাবি তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
রবিবার সকালেই মুখ্যমন্ত্রী টুইটে লেখেন, ‘আজকের দিনেই ১৯৪৫ সালে নেতাজী তাইওয়ানের তাইহোকু বিমানবন্দর থেকে নিখোঁজ হন। আমরা আজও জানি না এরপর কি হয়েছে। দেশমাতৃকার এই বীর সন্তানের বিষয়ে জানার অধিকার সকল দেশবাসীর আছে।’ প্রসঙ্গত, স্বরাষ্ট্র দফতরের হাতে থাকা নেতাজি সংক্রান্ত ৬৪টি ফাইল ইতিমধ্যেই সামনে এনেছে রাজ্য সরকার।
কিন্তু, এ দিন বেলা গড়াতেই নেতাজিকে নিয়ে বিতর্ক তুঙ্গে ওঠে। প্রেস ইনফর্মেশন ব্যুরোর তরফে টুইটে নেতাজিকে শ্রদ্ধা জানিয়ে পোস্ট করা হয়। সেই পোস্টে ১৮ অগস্টকেই তাঁর ‘মৃত্যু দিবস’ হিসাবে দেখানো হয়েছে। তাতে লেখা হয়েছে, ‘পিআইবি মহান স্বাধীনতা সংগ্রামী নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুকে তাঁর মৃত্যুদিনে স্মরণ করছে।’ আর এই পোস্টকে ঘিরেই বিতর্ক শুরু হয়ে যায় দেশ জুড়ে।
আরও পড়ুন: কথা হলে পাক অধিকৃত কাশ্মীর নিয়ে হোক, পাকিস্তানকে বার্তা রাজনাথের
শুধু প্রেস ইনফর্মেশন ব্যুরোই নয়, ১৮ অগস্টকে নেতাজিকে স্মরণ করে পোস্ট করেছে কংগ্রেসও। হাত শিবিরের ওই পোস্টে লেখা হয়েছে, ‘আজ আমরা আমাদের দেশের মহান স্বাধীনতা সংগ্রামীকে সম্মান জানাচ্ছি। তিনি এমন এক জন মানুষ যাঁকে ছাড়া আমাদের দেশের ইতিহাস অপরিবর্তিত থাকত না। নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু তাঁর চিন্তা ভাবনার স্বাধীনতা ও কাজের মাধ্যমে পথ দেখিয়েছিলেন।’ এই পোস্টে অবশ্য সরাসরি ১৮ অগস্টকে তাঁর ‘মৃত্যু দিন’ হিসাবে উল্লেখ করা হয়নি।
আরও পড়ুন: ‘কাশ্মীর থেকে নজর ঘোরাতে পরমাণু যুদ্ধে নামতে পারে ভারত’, এ বার বললেন ইমরান
একই কায়দায় পোস্ট করা হয়েছে গুজরাত বিজেপির তরফেও। গেরুয়া শিবিরের ওই পোস্টে লেখা হয়েছে, ‘মহান স্বাধীনতা সংগ্রামী ও আজাদ হিন্দ ফৌজের সুপ্রিম কম্যান্ডার নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুর পুণ্য তিথিতে তাঁকে কোটি কোটি নমস্কার।’ পুণ্য তিথি অর্থে অবশ্য কী বোঝানো হচ্ছে তা পরিষ্কার করে বলা হয়নি।
১৮ অগস্টকে নেতাজির ‘মৃত্যু দিন’ হিসাবে বার বার তুলে ধরা হয় কেন? ১৯৪৫ সালের ১৮ অগস্ট তাইহোকু বিমান দুর্ঘটনায় তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে নানা ভাবে তুলে ধরা হয়ে থাকে। কিন্তু, তা নিয়ে তথ্য প্রমাণ ততটা জোরাল নয়। বরং, নেতাজির ‘অন্তর্ধান’-এর পর প্রায় পঁচাত্তর বছর পেরিয়ে গেলেও রহস্য রহস্যই থেকে গিয়েছে।