হেরিটেজ হিরো মানসের বিভূতি

Assam conservationist nominated for IUCN Heritage Heroes awardবিশ্বে মাত্র পাঁচ জন আর এশিয়ার মধ্যে একমাত্র সংরক্ষণকর্মী হিসেবে মানস জাতীয় উদ্যানে কাজ করা তৃণভূমি বিশেষজ্ঞ বিভূতি লহকরকে এ বছরের হেরিটেজ হিরোর চূড়ান্ত তালিকায় মনোনীত করল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অফ নেচার বা আইইউসিএন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

গুয়াহাটি শেষ আপডেট: ২৩ অগস্ট ২০১৬ ০২:৫২
Share:

বিশ্বে মাত্র পাঁচ জন আর এশিয়ার মধ্যে একমাত্র সংরক্ষণকর্মী হিসেবে মানস জাতীয় উদ্যানে কাজ করা তৃণভূমি বিশেষজ্ঞ বিভূতি লহকরকে এ বছরের হেরিটেজ হিরোর চূড়ান্ত তালিকায় মনোনীত করল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অফ নেচার বা আইইউসিএন।

Advertisement

বিশ্বে পশু ও প্রকৃতি সংরক্ষণে আইইউসিএন সবচেয়ে নামকরা ও প্রামাণ্য সংস্থা। তাদের মতে, মানস বিশ্ব ঐতিহ্যক্ষেত্রের শিরোপা ফিরে পাওয়ার পিছনে তাঁর অনেক অবদান রয়েছে।

মুখচোরা, মিতভাষ বিভূতিবাবুর বক্তব্য কোনওদিন পুরস্কার পাওয়ার জন্য কাজ করেননি তিনি। জঙ্গল তাঁর নেশা। কপালজোরে সেটাই পেশা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এমনকী সেই সূত্রেই পেয়েছেন জীবনসঙ্গিনীও। দীর্ঘদিন ধরে আরণ্যক সংগঠনের হয়ে মানসে কাজ করছেন তিনি।

Advertisement

পরিবেশ ও বন্যপ্রাণ সংরক্ষণের পাশাপাশি এখন স্থানীয় মানুষকে নিয়ে বিকল্প রোজগারের বিভিন্ন পন্থাও খুঁজে বের করতে ব্যস্ত বিভূতিবাবু ও তাঁর স্ত্রী নমিতা ব্রহ্ম। মানস নিয়ে কাজ করেই দু'জন ডক্টরেটও হয়ে গিয়েছেন। আপাতত তাঁরা পানবাড়ি রেঞ্জে আশপাশের গ্রামবাসীদের নিয়ে তৈরি করছেন একটি নার্সারি।

এ বছর হেরিটেজ হিরো পুরস্কারের জন্য সারা পৃথিবী থেকে ৩০টি নাম জমা পড়েছিল। বিশেষজ্ঞদের বাছাইয়ের পরে, 'আইইউসিএন ওয়র্ল্ড কমিশন অন প্রটেকটেড এরিয়াস' তিন দেশের পাঁচ জনের নাম চূড়ান্ত তালিকায় রেখেছে। ৩ সেপ্টেম্বর হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জের বিশ্ব সংরক্ষণ কংগ্রেসে পুরস্কার প্রাপকের নাম ঘোষণা করা হবে। তার আগে নেওয়া হবে ভোট।

তালিকায় থাকা নামগুলি হল, কঙ্গোর ভিরুঙ্গা জাতীয় উদ্যানে সংরক্ষণের কাজ করা বান্টু লুকাম্বো ও যোশুয়া কাম্বাসু মুকুরা, পশ্চিম ককেশাসে সংরক্ষণের কাজ করা ইউলিয়া নাবেরেজানায়া ও অ্যান্ড্রে রুদোমাখা। পরিবেশ নিয়ে নিরসলভাবে সাধনা চালানো, বিশ্ব ঐতিহ্যক্ষেত্র সংরক্ষণে প্রাণের ঝুঁকি সত্তেও কাজ করে যাওয়া সংরক্ষণকর্মীদের স্বীকৃতি দিতেই এই পুরস্কার দেয় আইইউসিএন।

বিভূতিবাবু বলেন, "মানসই আমায় সব দিয়েছে। ১৮ বছর ধরে এই জঙ্গল আমার কর্মভূমি। আমার গবেষণা মানস নিয়ে। এখান কাজ করতে গিয়েই নমিতার সঙ্গে আলাপ ও বিয়ে। আমরা একসঙ্গে মানস নিয়ে কাজ করছি ভালবাসা থেকে। তার বিনিময়ে কিছু আসা করিনি। এই স্বীকৃতি অবশ্যই গর্বের। পুরস্কার পেলে তা মানসকেই উৎসর্গ করব।"

তিনি জানান, মানসের উদ্ভিদজগতের বদল ও সংরক্ষণ নিয়ে কাজ স্থানীয় মানুষের সহযোগিতা ছাড়া সম্ভব ছিল না। পরিবেশপ্রেমীদের মতে, সংরক্ষণ ক্ষেত্রে সাধারণত প্রাণীদের প্রতি বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়। কিন্তু জঙ্গলের যে তৃণভূমি গন্ডার থেকে শুরু করে বিভিন্ন প্রজাতির পশুকে ধারণ করে, তার সংরক্ষণ না হলে প্রাণীকূলেরও অস্তিত্ব বিপন্ন হবে। ব্রহ্মপুত্র ও বেকি উপত্যকায় তৃণভূমির সংরক্ষণ নিয়ে পর্দার আড়ালে বিভূতিবাবুর কাজ তাই খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement