— প্রতীকী চিত্র।
আদানি ঘুষ-কাণ্ড নিয়ে বিরোধী শিবিরে কার্যত একঘরে হয়ে পড়ে কংগ্রেস আপাতত সংসদে রণেভঙ্গ দিল। বাকি বিরোধীরা পাশে না-থাকায় সংসদে নয়, কংগ্রেস মঙ্গলবার সংসদ ভবনের মকরদ্বারে আদানি ঘুষ-কাণ্ড নিয়ে প্রতিবাদ করবে বলে জানিয়েছে। তৃণমূল অবশ্য কংগ্রেসের এই প্রতিবাদে যোগ দিচ্ছে না।
আদানি ঘুষ-কাণ্ড নিয়ে গত এক সপ্তাহ ধরে কংগ্রেস লোকসভা ও রাজ্যসভায় আলোচনার দাবি তুললেও তৃণমূল-সহ বাকি বিরোধীদের পাশে পায়নি। অচলাবস্থা কাটাতে বিরোধীদের মধ্যে এই বিভাজনকে কাজে লাগিয়েছে মোদী সরকার। আজ লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লার সঙ্গে বৈঠকে ঠিক হয়েছে, সংসদে তৃণমূলকে বাংলাদেশে হিন্দুদের উপরে নির্যাতন, সপা-কে উত্তরপ্রদেশের সম্ভলের মতো বিষয় তুলতে দেওয়া হবে। সংবিধান নিয়েও ১৩-১৪ ডিসেম্বর লোকসভায়, ১৬-১৭ ডিসেম্বর রাজ্যসভায় আলোচনার দাবি মেনেছে সরকার। কিন্তু ‘প্রধানমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ’ গৌতম আদানির বিরুদ্ধে ঘুষ দেওয়ার অভিযোগকে ‘আমেরিকার ঘটনা’ বলে দাবি করে মোদী সরকার তা নিয়ে আলোচনায় রাজি হয়নি। ইন্ডিয়া জোটের শরিকেরা অবস্থান নেয়, শুধু আদানি নিয়ে হাঙ্গামা করে বিরোধীদের রাজনৈতিক লাভ হচ্ছে না। বদলে মানুষের সঙ্গে জড়িত সমস্যা নিয়ে সংসদে সরব হওয়া দরকার।
এই পরিস্থিতিতে কংগ্রেসের কৌশল ঠিক করতে সোমবার সন্ধ্যায় রাহুল গান্ধী দলের সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গের সঙ্গে বৈঠক করেন। ঠিক হয়, কংগ্রেস সংসদ ভবনের বাইরে প্রতিবাদ করবে। সংসদ অচল না করে লোকসভা, রাজ্যসভাতেও আদানি প্রসঙ্গ উল্লেখ করবে। মঙ্গলবার সকালে খড়্গে বাকি বিরোধী দলের নেতাদের কাছে এই প্রতিবাদ-ধর্নায় যোগ দিতে অনুরোধ জানাবেন। তৃণমূল জানিয়েছে, তারা এই প্রতিবাদ বা খড়্গের দফতরে বৈঠকে যাবে না।
গত সোমবার থেকে আদানি-র ‘আ’ উচ্চারণের সঙ্গে-সঙ্গে সংসদ মুলতুবি করে দেওয়া হয়েছে। আজও তা-ই হয়েছে। সোমবার সকালে রাহুলের নেতৃত্বে বিরোধীদের বৈঠকের পরে সবাই আদানি, সম্ভল, মণিপুরের মতো বিষয়ে আলোচনার দাবি করেন। তৃণমূল রাজ্যের নানা বিষয়ে আলোচনা চায়। কিন্তু অধিবেশন মুলতুবি করে দেওয়া হয়। তৃণমূলের লোকসভার দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘পাঁচ দিন সংসদে অচলাবস্থায় মানুষের সমস্যা তুলতে পারলাম না। সাধারণের সঙ্গে সম্পর্কিত নয়, এমন বিষয় নিয়ে কংগ্রেস সংসদ অধিবেশন ভন্ডুল করল।”