সনিয়া গান্ধী। —ফাইল চিত্র।
ছত্তীসগঢ়, মধ্যপ্রদেশ ও রাজস্থানে বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের ফল ‘খুবই হতাশাজনক’ বললেও কম বলা হয় বলে সনিয়া গান্ধী মন্তব্য করলেন। হিন্দি বলয়ের তিন রাজ্যে বিজেপির কাছে কংগ্রেসের হার নিয়ে প্রথম বার মুখ খুলে আজ কংগ্রেসের সংসদীয় দলের বৈঠকে সনিয়া বলেন, ‘‘কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে ইতিমধ্যেই খারাপ ফলের কারণ খুঁজতে প্রাথমিক পর্যালোচনা করেছেন। আমরা কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। তবে আমি আত্মবিশ্বাসী, আমাদের মনোবল ও ঘুরে দাঁড়ানোর ক্ষমতায় এর মোকাবিলা করা যাবে।’’
কংগ্রেস সভানেত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়ালেও সনিয়া কংগ্রেসের সংসদীয় দলনেত্রীর পদে রয়েছেন। লোকসভা নির্বাচনের আগে সম্ভবত আজকেই কংগ্রেসের সংসদীয় দলের শেষ বৈঠক হল। লোকসভা ভোটে সনিয়া ফের লড়বেন কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়। সনিয়া আজ তাই সংসদীয় দলের সবাইকে বৈঠকে সহযোগিতার জন্য ধন্যবাদ জানিয়েছেন। বৈঠকের গোড়াতেই লোকসভা নির্বাচনের জন্য মাঠে নেমে পড়ার বার্তা দিয়ে সনিয়া জানান, আগামী কয়েক মাসের মধ্যে লোকসভা নির্বাচন। পৃথক দল হিসেবে ও ইন্ডিয়া-র শরিক হিসেবে কংগ্রেসকে কী করতে হবে, তা খুব স্পষ্ট। খড়্গে প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছেন। ২৮ ডিসেম্বর কংগ্রেসের প্রতিষ্ঠা দিবসে নাগপুরে জনসভা হতে চলেছে। লোকসভা নির্বাচনের লড়াইয়ে এটা গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ বলে তিনি জানান।
আরএসএসের সদর দফতর যে নাগপুরে, সেই নাগপুরেই লোকসভা নির্বাচনের প্রচারে প্রথম জনসভা করে কংগ্রেস যে বিজেপি-আরএসএসের বিরুদ্ধে মতাদর্শগত লড়াইয়ের বার্তা দিতে চাইছে, সনিয়া তা স্পষ্ট করেছেন। বলেছেন, ‘‘এই কঠিন সময়ে কংগ্রেস মতাদর্শ ও মূল্যবোধই আলো দেখাবে।’’
লোকসভা ভোটে কোন কোন বিষয় নিয়ে বিরোধী মঞ্চ ইন্ডিয়া ভোটে যাওয়ার কথা ভাবছে, আজ সনিয়া তারও ইঙ্গিত দিয়েছেন। তিনি বলেন, বিষয়গুলি খুবই মৌলিক। মোদী সরকার গণতন্ত্র ও সংসদ-সহ প্রতিষ্ঠানগুলির উপরে পরিকল্পিত ভাবে হামলা করছে। সংবিধান আক্রমণের মুখে। অর্থনৈতিক অসাম্য বাড়ছে। প্রধানমন্ত্রীর আর্থিক বৃদ্ধি নিয়ে বড়াই ও বাস্তবের মধ্যে বিস্তর ফারাক। বেকারত্ব গত কয়েক দশকে সর্বোচ্চ। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম আকাশ ছুঁচ্ছে। এই সব বিষয়ে নিয়ে মানুষের কাছে যাওয়া জরুরি।
মঙ্গলবারের ইন্ডিয়া-র বৈঠকের পরে বিরোধী মঞ্চের এখন কাজ হল, আসন সমঝোতার পাশাপাশি ইন্ডিয়া-র প্রচারের বিষয় ঠিক করা। দু’একদিনের মধ্যেই বৈঠক হবে বলে সূত্রের খবর। শরদ পওয়ার ইতিমধ্যেই সীতারাম ইয়েচুরির মতো নেতাদের সঙ্গে ঘরোয়া আলোচনা করেছেন। মূলত মোদী সরকারের জনবিরোধী নীতি ও বিকল্প নীতি হিসেবে জনগণের জন্য সুরাহার দিকে নজর থাকছে।