রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব। —ফাইল ছবি।
রেল দুর্ঘটনার কারণ খোঁজার পাশাপাশি, যাত্রিবাহী ট্রেন বাড়ানো এবং সেই ট্রেনগুলিতে স্লিপার (নন এসি) কামরা বৃদ্ধির দাবি জানিয়ে সরব হল কংগ্রেস। সেই সঙ্গে রেল যাত্রার সময়ে আমজনতা কতটা কষ্ট করেন, তা উপলব্ধি করার জন্য রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবকে সাধারণ নাগরিকের মতো রেলে ভ্রমণের পরামর্শ দিলেন তাঁরা।
সম্প্রতি সমাজমাধ্যমে একটি ভিডিয়ো ভাইরাল হয়, যাতে দেখা যায় এসি কামরায় প্রবল ভিড়। এই ধরনের একাধিক ভিডিয়ো সামনে এনে রেলমন্ত্রী মন্তব্য করেন, জোর করে উঠে পড়া যাত্রীদের পুলিশ দিয়ে নামিয়ে দেওয়া উচিত। কংগ্রেস মুখপাত্র সুপ্রিয়া শ্রীনতে আজ বলেন, ‘‘রেলমন্ত্রীকে বুঝতে হবে, লোকে শখে নয়, বাধ্য হয়ে এসি কামরায় ওঠেন। কারণ, ট্রেনের অভাব। যে কারণে গত অর্থবর্ষে ২.৭০ কোটি মানুষের টিকিট বাতিল করা হয়েছে। ’’
কংগ্রেসের দাবি, করোনা কালে ক্ষতি কমাতে একাধিক দূরপাল্লার ট্রেন বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় কেন্দ্র। তাতে রেলের সাশ্রয় হলেও, অসুবিধায় পড়েন সাধারণ মানুষ। কংগ্রেসের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এক ধাক্কায় কয়েকশো ট্রেন কমে গিয়েছে। কিন্তু টিকিটের চাহিদা ক্রমশ বাড়ছে। ফলে বাধ্য হয়ে মানুষ যে ট্রেন পাচ্ছেন সেই ট্রেনে উঠে পড়ছেন।
দ্বিতীয়ত, কংগ্রেসের মতে, রেল এখন গড়ে প্রতি টিকিটে ৪৩ শতাংশ ভর্তুকি দিয়ে থাকে। রেলের সব শ্রেণির মধ্যে লাভদায়ক হল থ্রি টিয়ার এসি। এ ক্ষেত্রে রেলের প্রতি টিকিটে ক্ষতি প্রায় নেই বললেই চলে। উল্টো দিকে দূরপাল্লার ট্রেনে সবথেকে বেশি ভর্তুকি দিতে হয় সংরক্ষিত স্লিপার (নন এসি) ক্লাসে। সে কারণে নীতিগত ভাবে রেল দূরপাল্লার ট্রেনে সংরক্ষিত স্লিপার ক্লাস (নন এসি) কমিয়ে দিয়ে থ্রি টিয়ার এসি এবং থ্রি টিয়ার এসি (ইকনমিক শ্রেণি) বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয়। যাতে যাত্রী খাতে প্রতি বছর যে ৩০-৩৫ হাজার কোটি টাকা খরচ হয়, সেই খরচ কিছুটা কমানো সম্ভব হয়।
সমস্যা হল, থ্রি টিয়ার এসির সংখ্যা বাড়ায় কমছে সংরক্ষিত স্লিপার শ্রেণির সংখ্যা। যদিও স্লিপার শ্রেণিতে যাত্রী চাহিদা একই রয়েছে। শুধু তাই নয়, এসি শ্রেণির টিকিটের ভাড়া ‘ডায়নামিক প্রাইসিং’ (টিকিট কমলে ভাড়া বাড়বে)-এর কারণে নিম্ন বা মধ্যবিত্ত শ্রেণির নাগালের বাইরে। ফলে স্লিপার শ্রেণিতে কনফার্মড টিকিট না পেয়ে জোর করে থ্রি এসিতে উঠতে বাধ্য হচ্ছেন যাত্রীরা।
সূত্রের খবর, বছরের গোড়ায় ট্রেনচালক (লোকো পাইলট) হিসেবে ৫৬৯৬ জনকে নিয়োগ করার কথা ভেবেছিল রেল। কিন্তু সব জ়োনের চাপে এ দিন রেল মন্ত্রক ১৮,৭৯৯ জনকে লোকো পাইলট পদে নিয়োগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে সরকারি ভাবে এ নিয়ে কিছু জানা যায়নি।