— প্রতীকী চিত্র।
আমেরিকার ধনকুবের জর্জ সোরসের বিরুদ্ধে ভারতে অস্থিরতা তৈরির অভিযোগে কেন মোদী সরকার তদন্ত করছে না? কেন তাঁকে ভারতের হাতে প্রত্যর্পণের জন্য আমেরিকাকে চিঠি লিখছে না? আজ প্রশ্ন তুলল কংগ্রেস। বিজেপির নেতা-মন্ত্রীরা সংসদে দাঁড়িয়ে সোরসের বিরুদ্ধে ভারতে অস্থিরতা তৈরি এবং কংগ্রেসকে মদত দেওয়ার অভিযোগ তুলছেন, তার পাল্টা হিসেবেই এই প্রশ্নগুলি তুলেছে কংগ্রেস।
কংগ্রেসের প্রশ্ন, কেন মোদী সরকার সোরসের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করছে না? ওই ধনকুবের যদি ভারত-বিরোধী কাজে জড়িত থাকেন, তা হলে এ দেশের তাঁর ব্যবসাগুলি বন্ধ করা হচ্ছে না কেন? কেন বন্ধ করা হচ্ছে না তাঁর মদতপুষ্ট সমস্ত তহবিল? কেন রাষ্ট্রপুঞ্জের যে তহবিল থেকে সোরসের ‘ওপেন সোসাইটি ফাউন্ডেশন’কে চাঁদা দেওয়া হয়, সেখানে মোদী সরকার টাকা ঢালছে? কংগ্রেস মুখপাত্র পবন খেরার প্রশ্ন, প্রধানমন্ত্রীর আর্থিক উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য শমিকা রবিসোরসের ‘ওপেন সোসাইটি ফাউন্ডেশন’ থেকে অনুদান পেয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী কি তাঁর বিরুদ্ধে ভারতে অস্থিরতা তৈরির অভিযোগে তদন্ত করবেন, না কি তাঁকে পদ থেকে সরিয়ে দেবেন?
রাহুল গান্ধীর নেতৃত্বে কংগ্রেস তথা বিরোধী শিবির শিল্পপতি গৌতম আদানির বিরুদ্ধে ঘুষের অভিযোগে সরব। আজ ফের রাহুল-প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢরা-সহ বিরোধী সাংসদরা মোদী-আদানি যোগ নিয়ে সংসদের বাইরে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন। মোদী-আদানির ছবি-সহ ‘মোদী আদানি ভাই ভাই’ লেখা ব্যাগ নিয়ে সংসদের বাইরে মিছিল করেছেন। আদানি ঘুষ কাণ্ড নিয়ে রাহুলদের বিক্ষোভের পাল্টা জবাবে মোদী সরকারের নেতা-মন্ত্রীরা সংসদে অভিযোগ তুলেছেন, সোরস ভারতে অস্থিরতা তৈরি করতে চান। তাঁর মদতপুষ্ট ওসিসিআরপি (অর্গানাইজড ক্রাইম অ্যান্ড কোরাপশন রিপোর্টিং প্রজেক্ট) আদানি বিরুদ্ধে তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। তা নিয়ে কংগ্রেস সংসদ অচল রয়েছে। সোরসের মদতপুষ্ট সংস্থার সঙ্গে সনিয়া গান্ধীরও যোগাযোগ রয়েছে। সংসদ অচল হওয়া নিয়ে প্রিয়ঙ্কা বলেন, বিজেপি সরকার সংসদে ‘মোদানি’ কেলেঙ্কারি, করুণ অর্থনীতি, বেকারত্ব নিয়ে আলোচনা চায় না। তাই মিথ্যে বলে সংসদ অচল করছে।
রাহুল আজ সকালে সংসদীয় দলের বৈঠকে জানিয়ে দেন, বিজেপি আক্রমণ করলেও তাঁরা পিছু হঠবেন না। তার পরেই কংগ্রেস মুখপাত্র সুপ্রিয়া শ্রীনতে সাংবাদিক বৈঠকে অভিযোগ তোলেন, রাষ্ট্রপুঞ্জের ইউএন ডেমোক্র্যাসি ফান্ড সোরসের ওপেন সোসাইটি ফাউন্ডেশনকে চাঁদা দেয়। সেই ফান্ডে গত আট বছরে ভারত ৯ লক্ষ ডলার অনুদান দিয়েছে। বাজপেয়ী সরকারের আমলে সোরস প্রথম ভারতে ফেলোশিপ, স্কলারশিপ বিলি করা শুরু করে। সোরসের তহবিলের টাকা বিজেপি ঘনিষ্ঠদের মাধ্যমেই ভারতের ছোট শিল্প, স্টার্ট-আপে বিনিয়োগ হয়েছে। যদি সোরস ভারত-বিরোধী কাজ চালায়, তা হলে কেন এই টাকার জোগান বন্ধ করা হচ্ছে না? ফরাসি সংবাদ সংস্থা মিডিয়াপার্ট জানিয়েছিল, ওসিসিআরপি সংস্থায় সোরসের মদত রয়েছে। মিডিয়াপার্ট নিজেই জানিয়েছে, তাদের রিপোর্টকে বিকৃত করে বিজেপি ভুয়ো খবর ছড়াচ্ছে। বিজেপি আসলে আদানিকে বাঁচাতে সমস্ত রকম কারসাজি করছে।