কংগ্রেসের সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে। ফাইল চিত্র।
গুজরাতের প্রথম দফার ভোটের প্রচার শেষ হল। শেষ দিনে কংগ্রেসের সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে ‘রাবণ’-এর সঙ্গে তুলনা করতে গিয়ে মোদীর হাতে অস্ত্র তুলে দিলেন কি না, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠে গেল। বিজেপি একে ‘মোদীর অপমান’, সেই সঙ্গে ‘গুজরাতিদের অপমান’ হিসেবে তুলে ধরতে মাঠে নেমে পড়েছে। কংগ্রেসের আশঙ্কা, সনিয়া গান্ধীর ‘মওত কা সওদাগর’, মণিশঙ্কর আইয়ারের ‘চাওয়ালা’ বা ‘নীচ কিসম কা আদমি’ মন্তব্যকে মোদী যে ভাবে নিজের দিকে ভোট টানতে কাজে লাগিয়েছেন, খড়্গের মন্তব্যকেও তিনি একই ভাবে কাজে লাগাতে পারেন।
গুজরাতের প্রচারে গিয়ে খড়্গে প্রশ্ন তুলেছেন, প্রধানমন্ত্রী সব ভোটেই শুধু তাঁকে দেখে কেন ভোট দিতে বলেন! কংগ্রেস সভাপতি বলেছেন, “মোদী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিজের কাজ ছেড়ে পুরভোট, বিধানসভা, লোকসভা— সব ভোটের প্রচার করে বেড়ান। শুধু বলেন, অন্য কাউকে দেখার দরকার নেই। মোদীকে দেখে ভোট দিতে হবে। কত বার মানুষ আপনার মুখ দেখবে? আপনার কতগুলো রূপ? রাবণের মতো একশোটা মুখ নাকি?”
বিজেপি পাল্টা আক্রমণে নামে। গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র পটেল বলেন, খড়্গের মন্তব্যে গুজরাতিদের প্রতি ঘৃণা ফুটে উঠেছে। বিজেপির আইটি সেলের প্রধান অমিত মালবীয় অভিযোগ তোলেন, গুজরাত নির্বাচনে কোণঠাসা হয়ে খড়্গে নিজের কথার উপরে নিয়ন্ত্রণ রাখতে না পেরে প্রধানমন্ত্রীকে রাবণ বলছেন। ‘মওত কা সওদাগর’ থেকে রাবণ— কংগ্রেস গুজরাত ও তার পুত্রকে অপমান করে চলেছে। কংগ্রেস মুখপাত্র পবন খেরা পাল্টা বলেছেন, ‘‘এক জন দলিত কংগ্রেসের নির্বাচিত সভাপতি হয়েছেন, তা সহ্য করতে না পেরে (বিজেপি নেতারা) তাঁকে কোণঠাসা বলছেন। এতে দলিতদের সম্পর্কে বিজেপির মনোভাব স্পষ্ট হয়ে যায়।’’ কংগ্রেস নেত্রী রেণুকা চৌধুরির টুইট, ‘‘মোদী আমাকে সংসদে শূর্পণখার সঙ্গে তুলনা করেছিলেন। তখন সংবাদমাধ্যম কোথায় ছিল?’’ ২০১৮ সালে সংসদে আধার প্রসঙ্গে মোদীর মন্তব্য শুনে রেণুকা জোরে হাসছিলেন। মোদী তখন বলেছিলেন, ‘‘রামায়ণ সিরিয়ালের পরে এমন হাসি শোনার সৌভাগ্য এই প্রথম বার হল।’’ কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কিরেণ রিজিজু শূর্পণখার অট্টহাসির ভিডিয়ো পোস্ট করেন, যা পরে সরিয়েও নেওয়া হয়।
মুখে এত কথা বললেও কংগ্রেসের আশঙ্কা অবশ্য যাচ্ছে না। খড়্গে সোমবারও মোদীকে নিশানা করে বলেছিলেন, ‘‘কত দিন নিজেকে চাওয়ালা বলে সহানুভূতি কুড়োবেন! আমি তো অস্পৃশ্য ছিলাম। আমার তৈরি চা কেউ মুখে তুলত না।’’ মোদী সোমবারই তার জবাবে বলেছিলেন, চাওয়ালা প্রধানমন্ত্রীর আমলে ভারত দ্রুত গতিশীল অর্থনীতির তকমা পেয়েছে, অর্থনীতিবিদ প্রধানমন্ত্রীর আমলে ইউপিএ সরকারে যা হয়নি। মোদী কবে ‘রাবণ’ নিয়ে মাঠে নামেন, কংগ্রেস নেতারা এখন সেই আশঙ্কাতেই দিন গুনছেন।