কংগ্রেসের বিজ্ঞাপনে বাদ মৌলানা আবুল কালাম আজাদ! ফাইল চিত্র।
কংগ্রেসের বিজ্ঞাপন থেকে উধাও হয়ে গেল মৌলানা আবুল কালাম আজাদের ছবিই। যার জেরে তুমুল সমালোচনার মুখে পড়তে হয় কংগ্রেসকে। শেষে পরিস্থিতি সামাল দিতে নামেন দলের প্রবীণ নেতা জয়রাম রমেশ। তিনি টুইট করে করে জানান, ‘অমার্জনীয় ভুল’ হয়ে গিয়েছে। ভুল সংশোধন করে গাফিলতির জন্য উপযুক্ত পদক্ষেপ করার কথাও জানান তিনি।
ঘটনার সূত্রপাত রবিবার। ওই দিন রায়পুরে হওয়া কংগ্রেসের প্লেনারি অধিবেশন উপলক্ষে বিভিন্ন সংবাদপত্রে একটি বিজ্ঞাপন বেরোয়। ওই বিজ্ঞাপনে কংগ্রেসের অতীত ঐতিহ্যের কথা বোঝাতে কংগ্রেসের প্রাক্তন নেতা, প্রধানমন্ত্রীর ছবি দেওয়া হয়। মহাত্মা গান্ধী, জওহরলাল নেহরু, সুভাষচন্দ্র বসুর পাশাপাশি ওই বিজ্ঞাপনে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী, রাজীব গান্ধীরও ছবি দেওয়া হয়। বিজ্ঞাপনটির নীচে ছিল দলের বর্তমান শীর্ষ নেতৃত্ব— সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে, প্রাক্তন দুই সভাপতি সনিয়া গান্ধী, রাহুল গান্ধী এবং প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহর ছবি। কিন্তু দু’দফায় কংগ্রেসের সভাপতি হওয়া আজাদের ছবি ওই বিজ্ঞাপনে ছিল না।
এই বিজ্ঞাপন প্রকাশের পরেই দেশ জুড়ে সমালোচনা শুরু হয়ে যায়। কংগ্রেসের অন্দরেও বেশ কিছু নেতা এ বিষয়ে ক্ষোভপ্রকাশ করেন। বিজেপি কংগ্রেসকে টিপ্পনী কেটে বলে, “এটাই হল কংগ্রেসের দ্বিচারিতার প্রমাণ।” বাদ যায়নি সমাজবাদী পার্টির মতো দলও। তাঁদের দাবি, ভোটের স্বার্থে ‘ইচ্ছাকৃত ভুল’ করেছে কংগ্রেস। আজাদের ‘অপমানে’ আর এক আজাদ, অধুনা কংগ্রেসত্যাগী গুলাম নবি আজাদ জানান, কংগ্রেসের এই ‘বিজেপিঘেঁষা নীতি’র কারণেই তিনি দল ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন।
ইতিহাসবিদদের একাংশের মতে আজাদকে ছাড়া দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামকে বর্ণনা করা সম্ভব নয়। ব্রিটিশবিরোধী লড়াইয়ে যোগ দিয়ে দশ বছর জেল খেটেছিলেন তিনি। ঐতিহাসিক ইরফান হাবিবের মতে, দেশে হিন্দু-মুসলমান ঐক্যের জন্য যে সব নেতা অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছেন, আজাদ তাঁদের অন্যতম। স্বাধীন ভারতবর্ষের প্রথম শিক্ষামন্ত্রী হিসাবেও কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখেছেন তিনি। এই আজাদকেই কংগ্রেস ভুলতে চাইছে কি না, তা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছিলেন কেউ কেউ। সমালোচনার মুখে কংগ্রেস জানাল, ‘অমার্জনীয় ভুল’ তারা শুধরে নিয়েছে।