—প্রতীকী ছবি।
লোকসভায় আসন সংখ্যা ৫২ থেকে বেড়ে ৯৯ হয়েছে বটে। কিন্তু এখনও দলীয় সংগঠনে যথেষ্ট দুর্বলতা রয়েছে বলে দলের হাইকমান্ড মনে করছে। এই পরিস্থিতিতে আধ ডজন রাজ্যের প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি ও কিছু রাজ্যের এআইসিসি-র পর্যবেক্ষক পদে রদবদলের কথা ভাবছে কংগ্রেস হাইকমান্ড। এই তালিকায় তেলঙ্গানা, হিমাচল প্রদেশ, ছত্তীসগঢ়, বিহার, ঝাড়খণ্ড, উত্তরাখণ্ড রয়েছে। হিমাচলের প্রতিভা সিংহ, ছত্তীসগঢ়ের দীপক বৈজ, বিহারের অখিলেশ প্রসাদ সিংহ ও উত্তরাখণ্ডের করণ সিংহ মাহরাকে প্রদেশ কংগ্রেসের শীর্ষপদ থেকে সরানো হতে পারে। পশ্চিমবঙ্গের প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি পদে বদল হবে কি না, তা নিয়েও জল্পনা তুঙ্গে।
কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে দলের সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে নিজেই বলেছেন, বেশ কিছু রাজ্যে কংগ্রেসের ফল মোটেই ভাল নয়। সনিয়া গান্ধীও সংসদীয় দলের বৈঠকে বলেছেন, দলের হাল ফেরা নিয়ে আনন্দ করলেও যে সব রাজ্যে ফল আশানুরূপ হয়নি, সেখানে হাল শোধরাতে কী করা দরকার, তা ভাবতে হবে। কংগ্রেস যে ৯৯টি আসনে জিতেছে, তার মধ্যে ৩১টি আসনে জয় এসেছে মহারাষ্ট্র, তামিলনাড়ু, বিহার ও ঝাড়খণ্ডের মতো চারটি রাজ্যে, শরিক দলের সমর্থনে। তবে আশার কথা হল, ২০১৯ সালে কংগ্রেসের সঙ্গে ১৯০টি আসনে বিজেপির মুখোমুখি লড়াই হয়েছিল। তার মধ্যে কংগ্রেস মাত্র ১৫টি আসনে জিতেছিল। ২০২৪-এর লোকসভা ভোটে ২১৫টি আসনে বিজেপির সঙ্গে মুখোমুখি লড়াইয়ে কংগ্রেস ৬২টি আসনে জিতেছে। গত লোকসভা ভোটের তুলনায় ৪৭টি বেশি।
যে সব রাজ্যে কংগ্রেসের ফল ভাল হয়নি, তার মধ্যে পশ্চিমবঙ্গও রয়েছে। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী নিজেই লোকসভা ভোটে হেরে গিয়েছেন। অধীর অবশ্য জানুয়ারি মাসে রাহুল গান্ধীর ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রার সময়েই বলে দিয়েছিলেন, ‘ইন্ডিয়া’ মঞ্চের স্বার্থে বাংলায় তৃণমূলের সঙ্গে আসন সমঝোতা করতে হলে তাঁকে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি পদ থেকে সরানো হোক। এখন লোকসভা ভোটের পরে রাজ্যে কংগ্রেসের আসন কমলেও অধীর মনে করছেন, বামেদের সঙ্গে জোট করে কংগ্রেসের ফল আরও খারাপ হয়েছে, এমন নয়। অন্য দিকে পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূলের আসন বাড়ায় ‘ইন্ডিয়া’র শক্তি বেড়েছে এবং বিশেষ করে বিজেপির আসন কমেছে বলে রাহুল গান্ধীরা খুশি। পশ্চিমবঙ্গে কংগ্রেসের ফলাফলের পর্যালোচনা করতে আগামী ২১ জুন কলকাতায় বৈঠক ডাকা হয়েছে। সেখানে এআইসিসি-র পর্যবেক্ষক গুলাম মীর, সহ-পর্যবেক্ষক-সহ রাজ্যের ১৪০ জন নেতাকে বৈঠকে ডাকা হয়েছে। সাম্প্রতিক অতীতে এই প্রথম বিধান ভবনের বাইরে মৌলালী যুব কেন্দ্রে বৈঠক হবে।
কংগ্রেস সূত্রের খবর, তেলঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী রেবন্ত রেড্ডি এখন প্রদেশ সভাপতির পদে রয়েছেন। তাঁকে সরিয়ে অন্য কাউকে দায়িত্ব দেওয়া হবে। মহারাষ্ট্র, হরিয়ানার সঙ্গে ঝাড়খণ্ডে বছরের শেষে নির্বাচন। ফলে এখনই প্রদেশ সভাপতি পদ থেকে রাজেশ ঠাকুরকে সরানো হবে কি না, তা নিয়ে ভাবনাচিন্তা রয়েছে। উত্তরপ্রদেশ, রাজস্থানের সঙ্গে মহারাষ্ট্র, হরিয়ানাতে ও কংগ্রেসের ভাল ফল হয়েছে বলে হাইকমান্ড মনে করছে। তাই এই সব রাজ্যে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি পদে বদল হবে না।