অসমের রাজনীতিতে পরিবারতন্ত্রের ধারা এগিয়ে নিয়ে গেল উপ-নির্বাচনের ফলাফল। সুস্মিতা দেব, রূপজ্যোতি কুর্মী, গৌরব গগৈ, রাহুল রায়, বিস্মিতা গগৈদের পথে হেঁটে এ বার বিধানসভায় ঢুকতে চলেছেন রাজদীপ গোয়ালা, আব্দুর রহিমরা। অসমের তিনটি বিধানসভা কেন্দ্রে সম্প্রতি উপ-নির্বাচন হয়েছিল। তার মধ্যে যমুনামুখে জিতেছেন এআইইউডিএফ সুপ্রিমো বদরুদ্দিন আজমলের ছেলে আব্দুর রহিম আজমল। লক্ষ্মীপুরে জিতেছেন প্রয়াত কংগ্রেস বিধায়ক দীনেশপ্রসাদ গোয়ালার পুত্র রাজদীপ গোয়ালা। কিন্তু ‘দেব’ পরিবারের প্রার্থী না থাকায় শিলচরে বিজেপির কাছে হারল কংগ্রেস।
অথচ ১৯৫২ সাল থেকে শিলচর কংগ্রেসের দুর্গ হিসেবেই পরিচিত ছিল। কিন্তু ১৯৯১ সাল থেকে বিজেপি শিলচরকে তাদের শক্ত ঘাঁটি বানিয়ে ফেলে। তবে প্রাক্তন কংগ্রেসি কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সন্তোষমোহন দেবের স্ত্রী বীথিকা দেব ২০০৬ সালে ও কন্যা সুস্মিতা দেব ২০১১ সালে ফের শিলচরে কংগ্রেসের পতাকা ওড়ান। কিন্তু সুস্মিতা লোকসভায় জিতে সাংসদ হওয়ার পরে এ বারের উপ-নির্বাচনে জেলা সভাপতি অরুণ দত্ত মজুমদারকে প্রার্থী করে কংগ্রেস। তবে ‘দেবানুকূল্য’ না থাকায় বিজেপি প্রার্থী দিলীপকুমার পালের কাছে ৩৭,৪৪১ ভোটে হেরেছেন অরুণবাবু। দিলীপবাবু মোট ভোটের ৫৮ শতাংশ পেয়েছেন। এর আগে শিলচর আসনে এত ভোট কেউ পাননি। অরুণবাবু তাঁর হারের জন্য সরাসরি ‘মোদী’ হাওয়াকে দায়ী করেও বলেন, “বিধানসভা নির্বাচনের জন্য এখনও দেড় বছর সময় রয়েছে। তার মধ্যে দল ঘুরে দাঁড়াবে।”
কিন্তু এখন প্রশ্ন দেব পরিবারের বাইরে কোনও কংগ্রেস প্রার্থীকে শিলচরের মানুষ কেন ভোট দিলেন না? সুস্মিতার জবাব, “শিলচরে কংগ্রেসের ভোটব্যাঙ্ক ৫০-৫২ হাজার। কিন্তু, অরুণবাবু মাত্র ৩৬ হাজার ভোট পেয়েছেন। অর্থাৎ বহু কংগ্রেসি এ বার আমাদের ভোট দেননি। এর কারণ জানতে হবে।” অনেকের ধারণা, দলীয় কোঁদলই শিলচরে কংগ্রেসকে পিছনে টেনে রেখেছিল। বিজয়ী দিলীপবাবু জানিয়েছেন, তিনি স্বচ্ছ সমাজব্যবস্থা গড়ে তোলা ও মাদক-জুয়ার বিরুদ্ধে লড়াই চালাতে বদ্ধপরিকর। লক্ষ্মীপুরে পরম্পরা মেনেই সাত বারের বিধায়ক দীনেশবাবুর ছেলে রাজদীপ জিতলেন। তিনি ৯,৮৩৭ ভোটে বিজেপি প্রার্থী সঞ্জয়কুমার ঠাকুরকে হারান। তবে ভোট বাড়ায় ও এআইইউডিএফকে টপকে দ্বিতীয় হওয়ায় বিজেপি খুশি।
এআইইউডিএফের ঘাঁটি যমুনামুখে আবদুর রহিম ৬২,১৫৩ ভোট পেয়েছেন।