প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ফাইল চিত্র।
দিল্লির মসনদ দখলের লক্ষ্যে নরেন্দ্র মোদীর প্রতিশ্রুতি ছিল বছরে দু’কোটি কাজের সুযোগ তৈরির। সেই সংখ্যার ধারেকাছে পৌঁছনো তো দূর, উল্টে প্রধানমন্ত্রীর দফতরের অধীন কর্মিবর্গ মন্ত্রকের হিসাবই বলছে, কেন্দ্রীয় সরকারেই খালি পড়ে রয়েছে প্রায় ৯ লক্ষ ৮০ হাজার পদ। এই পরিস্থিতিতে রাজ্যসভার কংগ্রেস সাংসদ রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালার কটাক্ষ, যে গতিতে মোদী সরকার চাকরি জোগাচ্ছে, তাতে বছরে দু’কোটি চাকরি দিতে বছরে দিন সংখ্যা হতে হবে ১৬.৬৬ লক্ষেরও বেশি!
শুধু তা-ই নয়। লোকসভা নির্বাচনের আগে বাকি দেড় বছরে কেন্দ্রীয় সরকারের আওতায় ১০ লক্ষ সরকারি চাকরির লক্ষ্য বেঁধে দিয়েছেন মোদী। তা দেখে বিরোধীদের মন্তব্য, বছরে ২ কোটি চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় এসে এখন সরকারি শূন্যপদ পূরণ করেও তা নিয়ে প্রচার করছেন মোদী।
রাজ্যসভায় সুরজেওয়ালার প্রশ্নের উত্তরে কর্মিবর্গ মন্ত্রী জিতেন্দ্র সিংহ জানিয়েছেন, ২০২১-এর ১ মার্চের হিসেবে, কেন্দ্রীয় সরকারে শূন্যপদের সংখ্যা ৯ লক্ষ ৭৯ হাজার ৩২৭টি। এর মধ্যে ‘গ্রুপ এ’ বা প্রথম শ্রেণিতে খালি পদ ২৩,৫৮৪টি। ‘গ্রুপ বি’ বা দ্বিতীয় শ্রেণিতে খালি পদ ১,১৮,৮০৭টি। ষষ্ঠ বেতন কমিশনের পরে তৃতীয় শ্রেণি বা ‘গ্রুপ সি’ পদের সঙ্গে চতুর্থ শ্রেণি বা ‘গ্রুপ ডি’ মিশিয়ে দেওয়া হয়েছিল। তারপরে ৮,৩৬,৯৩৬টি ‘গ্রুপ সি’-র পদ খালি পড়ে রয়েছে।
এর আগে কেন্দ্র জানিয়েছিল, মোদী জমানায় আট বছরে কেন্দ্রীয় সরকারে ৭.২২ লক্ষ নিয়োগ হয়েছে। আবেদন জমা পড়েছিল ২২ কোটির বেশি। দেড় বছরে দশ লক্ষ নিয়োগের লক্ষ্য নিয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদী গুজরাত-হিমাচলের ভোটের মুখে ‘রোজগার মেলা’ করে দু’দফায় প্রায় ১ লক্ষ ৪৬ হাজার নিয়োগপত্র বিলি করেছিলেন।
কর্মিবর্গ মন্ত্রক এ বার সংসদে জানিয়েছে, গত চার বছরে ইউপিএসসি-র মাধ্যমে ১৩,১২২টি চাকরি হয়েছে। কংগ্রেস নেতা সুরজেওয়ালা বলেন, ‘‘মোদী সরকার নিজেই স্বীকার করছে, ২ কোটি চাকরির প্রতিশ্রুতি ভাঁওতা ছিল। বছরে ২ কোটি চাকরির বদলে মোদী সরকার বছরে মাত্র ৪,৩৭৪ জনকে চাকরি দিয়েছে।’’ সেই হিসেবে বছরে ২ কোটি চাকরি দিতে দিনসংখ্যা ১৬.৬৬ লক্ষের বেশি হতে হবে বলে কটাক্ষ তাঁর।