কংগ্রেসের লোকসভার নেতা তথা বহরমপুরের সাংসদ অধীর চৌধুরী। —ফাইল চিত্র।
‘এক দেশ এক ভোট’ নীতি রূপায়ণের কমিটির সদস্যপদ প্রত্যাখ্যান করলেন কংগ্রেসের লোকসভার নেতা তথা বহরমপুরের সাংসদ অধীর চৌধুরী। দেশের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের নেতৃত্বে কমিটি তৈরি হয়েছিল। সেই কমিটিতে সদস্য হিসাবে আরও ছ’জনের সঙ্গে অধীরকেও রাখা হয়েছিল। কিন্তু যে প্রক্রিয়ায় কংগ্রেস সভাপতি তথা রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা মল্লিকার্জুন খড়্গেকে বাদ দিয়ে অধীরকে কমিটিতে রাখা হয়েছিল, তা নিয়ে আগেই এক্স-এ (সাবেক টুইটার) দলীয় আপত্তি তুলে ধরেছিলেন কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) তথা রাজ্যসভার সাংসদ কেসি বেনুগোপাল। এর কিছু ক্ষণের মধ্যেই জানা যায়, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে চিঠি লিখে অধীরও জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি এই কমিটির সদস্যপদ প্রত্যাখ্যান করছেন।
শাহকে পাঠানো চিঠিতে অধীর লিখেছেন, ‘‘সংবাদমাধ্যম এবং গেজেট বিজ্ঞপ্তি থেকে জানলাম, আমাকে লোকসভা এবং বিধানসভা ভোট একসঙ্গে করানোর প্রক্রিয়া নিয়ে ভাবনাচিন্তা করবে এমন উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন কমিটির সদস্য করা হয়েছে।’’ অধীর এই গোটা প্রক্রিয়াটিকে ধোঁকাবাজি (আই ওয়াশ) বলে অভিহিত করে জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি এই কমিটির সদস্য হওয়ার আমন্ত্রণ গ্রহণ করবেন না। চিঠিতে প্রদেশ সভাপতির দাবি, লোকসভা ভোটের কয়েক মাস আগে সন্দেহজনক, অবাস্তব এবং অকার্যকরী ধারণা দেশবাসীর উপর জোর করে চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে মোদী সরকার। যা কেন্দ্রীয় সরকারের আসল উদ্দেশ্য নিয়ে সন্দেহের উদ্রেক করে বলেও মনে করেন অধীর। চিঠিতেও সে কথা লিখিত ভাবে শাহকে জানিয়ে দিয়েছেন তিনি।
কার্যত একই কথার প্রতিধ্বনি শোনা গিয়েছে বেনুগোপালের সমাজমাধ্যম পোস্টেও। প্রক্রিয়াটি ‘গিমিক’ বলে দাবি করে তাঁর প্রশ্ন, কেন রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা খড়্গেকে অন্তর্ভুক্ত করা হল না? বেনুগোপালের সংযোজন, খড়্গের মতো একজন নেতা যিনি দীর্ঘ লড়াই করে ভারতের প্রাচীনতম দলের শীর্ষস্থানে বসেছেন এবং রাজ্যসভায় (সংসদের উচ্চকক্ষ) বিরোধীদের নেতৃত্ব দিচ্ছেন, তিনি কি বিজেপি-আরএসএসের জন্য অসুবিধাজনক? তাই কি তিনি বাদ? কংগ্রেসের নেতা দাবি, আদানি কেলেঙ্কারি, বেকারত্ব, মূল্যবৃদ্ধির মতো সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় থেকে মানুষের দৃষ্টি ঘোরাতেই নতুন গিমিকের আমদানি করা হয়েছে।
আগেই কেন্দ্র জানিয়েছিল, কমিটির নেতৃত্বে থাকবেন প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। এ ছাড়া, আরও সাত জন সদস্যকে নিয়ে কমিটি গঠিত হয়। কমিটিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, লোকসভার নেতা অধীর রঞ্জন চৌধুরী ছাড়াও থাকার কথা ছিল গুলাম নবি আজাদ, এনকে সিংহ, সুভাষ কাশ্যপ, হরিশ সালভে এবং সঞ্জয় কোঠারীদের। কিন্তু শুরুতেই অধীর নিজের নাম সরিয়ে নেওয়ার পর এই কমিটির ভবিষ্যৎ কী হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠে গেল।