Ashok Gehlot

মুখ্যমন্ত্রীর পদ ছাড়ছেই না তাঁকে, ঘোষণা গহলৌতের

রাজনৈতিক শিবিরের মতে, গহলৌতের আত্মবিশ্বাস বেড়েছে কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে। সেখানে গহলৌত আলাদা ভাবে বিধানসভা ভোট নিয়ে কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে দীর্ঘ বৈঠক করেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২০ অক্টোবর ২০২৩ ০৮:১৫
Share:

কংগ্রেস নেতা অশোক গহলৌত। —ফাইল চিত্র।

ভোট আসন্ন রাজস্থানে। তার আগে আজ দিল্লিতে সাংবাদিক বৈঠক করে আত্মবিশ্বাসী মুখ্যমন্ত্রী তথা কংগ্রেস নেতা অশোক গহলৌত বোঝাতে চাইলেন, সচিন পাইলট নন, দলের হাইকমান্ড তাঁর উপরেই আস্থা রাখছেন। কংগ্রেস জিতে এলে তিনিই হবেন প্রধানমন্ত্রী। আজ তাঁর বক্তব্য, “এক মহিলা আমাকে বলেছিলেন, ঈশ্বর চাইছেন, আপনি চতুর্থ বারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী হবেন। আমি তাঁকে বলেছি, আমি মুখ্যমন্ত্রী পদ ছাড়তে চাই। সত্যিই ছাড়তে চাই। কিন্তু এই পদ আমাকে ছাড়ছে না। আর সম্ভবত ভবিষ্যতেও ছাড়বে না। ক’জন মুখ্যমন্ত্রী এমন হিম্মত রয়েছে এ ভাবে বলার? কিন্তু আমি আজ বলছি, এখানে দাঁড়িয়ে।”

Advertisement

এখানেই না থেমে বেশ কয়েক বার এই বাক্যের পুনরাবৃত্তি করতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। আগাগোড়াই হাসিমুখে তিনি বলেন, “তিন-তিন বার আমাকে মুখ্যমন্ত্রী করেছেন সনিয়া গান্ধী। আমার উপর কিছু বিশ্বাস তো তাঁর রয়েছে। নইলে কেন আমাকে বার বার বাছবেন? আমার মধ্যে নিশ্চয় কিছু দেখতে পেয়েছেন তিনি, রাহুল গান্ধী, প্রিয়ঙ্কা বঢরা।” তাঁর এই দাবির প্রাবল্য কিছুটা কমাতে এর পরে গহলৌত বলেন, “রাহুল গান্ধী দেশে লড়াই করছেন গণতন্ত্রের জন্য। রাজনৈতিক হিংসার বিরুদ্ধে। তাঁর হাত শক্ত করা আমাদের দায়িত্ব। এখানে পদটা বড় কথা নয়।”

তবে পদটা ‘বড় কথা’ কি না তা রাজস্থানের দীর্ঘ রাজনৈতিক নাটকেই স্পষ্ট। ক্ষমতা নিয়ে অশোক গহলৌত ও সচিন পাইলটের দ্বন্দ্ব বার বার প্রকাশ্যে এসেছে। গহলৌত শিবির ও পাইলট শিবির— দু’টি ভাগে বিভক্ত রাজস্থান কংগ্রেস। যা কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্বের মাথাব্যথার
অন্যতম কারণ। এর মধ্যে দিল্লিতে কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী গহলৌতকে ডাকা হলেও ডাক পাননি সচিন পাইলট। এটা নিয়ে ফের পাইলট-গহলৌতের দ্বন্দ্ব শুরু হয়েছে বলে রাজনৈতিক মহলের জল্পনা। এই আবহে মুখ্যমন্ত্রী পদ নিয়ে গহলৌতের মন্তব্য বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে।

Advertisement

এখনও পর্যন্ত কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্ব রাজস্থানে মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থীর নাম ঘোষণা করেননি। আজ অবশ্য মুখ্যমন্ত্রী পদ নিয়ে পাইলটের সঙ্গে তাঁর দ্বন্দ্বের কথাও উড়িয়ে দিয়েছেন গহলৌত। এ প্রসঙ্গে ২০২০ সালে মুখ্যমন্ত্রী পদ নিয়ে পাইলটের বিদ্রোহের প্রসঙ্গ তুললে গহলৌতের জবাব, তিনি ‘ক্ষমা ও ভুলে যাওয়ার’ নীতি নিয়েছেন। বরং বিজেপিকে তোপ দেগে তিনি বলেন, “কংগ্রেসের মধ্যে কেন বিভেদ নেই, এটাই বিরোধীদের যন্ত্রণার কারণ।” সচিন পাইলটের নাম উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, “সকলের মতামত নিয়েই সব সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে।” সচিন পাইলটের সমর্থকেরাও তাঁকে সমর্থন জানাচ্ছেন বলে দাবি গহলৌতের।

রাজনৈতিক শিবিরের মতে, গহলৌতের আত্মবিশ্বাস বেড়েছে কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে। সেখানে গহলৌত আলাদা ভাবে বিধানসভা ভোট নিয়ে কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে দীর্ঘ বৈঠক করেন। মঙ্গলবার সনিয়া গান্ধীর সঙ্গেও তাঁর বৈঠক হয়। কংগ্রেস সূত্রের খবর, রাজস্থানে কংগ্রেসের জয়ের জন্য গহলৌতকে যাবতীয় ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। বিধানসভার ২০০টি আসনের মধ্যে গহলৌতকে ১২৫ থেকে ১৩০টি আসনে টিকিট
বিলির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। বাকি ৭০ থেকে ৭৫টি আসনে সচিন পাইলট-সহ অন্য নেতাদের সুপারিশ অনুযায়ী টিকিট দেওয়া হবে। তবে সেই প্রার্থীদের জেতানোর দায়িত্বও সেই নেতারাই নেবেন। প্রয়োজনে বিধায়কদের আসন বদল করা, নতুন মুখদের সুযোগ দেওয়া ও পুরনো বিধায়কদের বাদ দেওয়ার ক্ষমতাও গহলৌতকে দেওয়া হয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement