সীতারামের অপেক্ষায় বিড়ম্বনা কংগ্রেসের

পশ্চিমবঙ্গ থেকে রাজ্যসভায় বিরোধীদের একটি আসন সীতারাম ইয়েচুরির জন্য ছেড়ে দিতে আপত্তি নেই কংগ্রেসের। কিন্তু দলের সাধারণ সম্পাদককে আদৌ আবার প্রার্থী করা হবে কি না, সিপিএমের পলিটব্যুরোর মতানৈক্য সেই সিদ্ধান্তের বল ঠেলে দিয়েছে কেন্দ্রীয় কমিটির কোর্টে।

Advertisement

সন্দীপন চক্রবর্তী

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ জুন ২০১৭ ০৩:৩৬
Share:

সীতারাম ইয়েচুরি

সিপিএমের জন্য অপেক্ষা চলছে এখনও। কিন্তু ‘হ্যাঁ’ বা ‘না’ বলতে সিপিএমের মধ্যে টানাটানি যত দীর্ঘ হচ্ছে, বিড়ম্বনা বাড়ছে কংগ্রেসেরও!

Advertisement

পশ্চিমবঙ্গ থেকে রাজ্যসভায় বিরোধীদের একটি আসন সীতারাম ইয়েচুরির জন্য ছেড়ে দিতে আপত্তি নেই কংগ্রেসের। কিন্তু দলের সাধারণ সম্পাদককে আদৌ আবার প্রার্থী করা হবে কি না, সিপিএমের পলিটব্যুরোর মতানৈক্য সেই সিদ্ধান্তের বল ঠেলে দিয়েছে কেন্দ্রীয় কমিটির কোর্টে। প্রকাশ কারাট এবং তাঁর বাহিনীর মতিগতি দেখে কংগ্রেস নেতৃত্বের আশঙ্কা, সিপিএম শেষমেশ ‘না’ বলে দিলে তখন প্রার্থী দিতে হবে কংগ্রেসকেই। এবং সেই নাম বাছাই করতে গিয়েই প্রদেশ কংগ্রেসের চিরাচরিত বিড়ম্বনা!

কংগ্রেস সূত্রের খবর, স্বয়ং প্রদেশ সভাপতি অধীর চৌধুরী দলের মধ্যে কারও নামে সম্মতি বা অসম্মতি কিছুই জানাননি। হাইকম্যান্ড যাঁর নামে সবুজ সঙ্কেত দেবে, তিনিই মনোনয়নপত্র জমা দেবেন। ইতিমধ্যেই অন্তত দু’জন প্রাক্তন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি এবং এক প্রদেশ সাধারণ সম্পাদক রাজ্যসভায় যেতে আগ্রহের কথা দলের শীর্ষ নেতৃত্বকে জানিয়েছেন। প্রদেশ কংগ্রেসের এক নেতার কথায়, ‘‘আমরা তো ইয়েচুরির জন্যই বসেছিলাম। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে, কেন্দ্রীয় কমিটিটা নিয়মরক্ষার জন্য ডেকেছে। শেষ পর্যন্ত ওঁরা সরে দাঁড়ালে আমাদের তো ঘর গুছিয়ে রাখতে হবে।’’

Advertisement

শুধু নাম বাছাই-ই একমাত্র সমস্যা নয়। কংগ্রেসের সমর্থন নিতে আপত্তি থাকলে কংগ্রেস প্রার্থীকে সমর্থন করতেও বামেদের আপত্তি থাকা উচিত। বিধায়ক-সংখ্যার জোরে একক ভাবে কংগ্রেস কাগজে-কলমে তাদের প্রার্থীকে জেতানোর শক্তি রাখে ঠিকই। কিন্তু ২১ জুলাইয়ের আগেই জনাদুয়েক কংগ্রেস বিধায়কের তৃণমূলে যোগদানের সম্ভাবনা নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে। কংগ্রেসের ঘর ভেঙে রাজ্যসভার ভোটে তাদের প্রার্থীকে শাসক দল হারিয়ে দিতে পারে কি না, সেই আশঙ্কাও এখন ঘুরপাক খেতে শুরু করেছে কংগ্রেস মহলে। সিপিএমের এক পলিটব্যুরো সদস্যও বলছেন, ‘‘যে কারণে কংগ্রেসের সমর্থনে রাজ্যসভায় প্রার্থী দিতে আপত্তি, একই কারণে কংগ্রেসের প্রার্থীকে সমর্থন করতেও অসুবিধা হওয়া উচিত। তা হলে রাজ্যসভার ভোটটা থেকেই বাংলায় বামেদের সরে দাঁড়াতে হয়! বাম আর কংগ্রেসের যৌথ প্রার্থীর যা সম্ভাবনা থাকে, কংগ্রেস একা লড়লে সেখানে দল ভাঙানোর আশঙ্কাও বাড়বে।’’

পরিস্থিতি বুঝে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর একাংশ ‘নিরপেক্ষ’ কোনও নাম বেছে নেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন, যাঁকে বাম ও কংগ্রেস উভয়েই সমর্থন করতে পারবে। কিন্তু সেই প্রস্তাব দলের শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে এখনও তেমন কল্কে পায়নি। এরই সঙ্গে সিপিএমের এক পলিটব্যুরো সদস্যের সংযোজন, ‘‘সম্ভবত গোয়ায় ২৯ জুলাই রাজ্যসভার একটি আসন খালি হবে। নির্বাচন কমিশন তার সঙ্গে বাংলা, গুজরাতের ভোট জুড়ে দিলে কেন্দ্রীয় কমিটি তো ২৩, ২৪, ২৫ জুলাইয়ের বৈঠকে এই নিয়ে আলোচনার সুযোগই পাবে না!’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement